কাল থেকে কাজে ফিরছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা

গতকাল রাত থেকে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি চলায় কাঙ্খিত চিকিৎসাসেবা না পেয়ে অনেক রোগীকে ঢাকাসহ অন্যান্য জায়গায় স্থানান্তর করা হয়েছে। আজ সকালে রামেকের জরুরি বিভাগের সামনে
ছবি: শহীদুল ইসলাম

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কে জি এম শাহরিয়ারের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে সংঘর্ষের প্রতিবাদে ডাকা কর্মবিরতি স্থগিত করেছেন হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা। কাল শুক্রবার সকাল থেকে তাঁরা কাজে ফিরবেন বলে জানা গেছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটায় হাসপাতাল প্রশাসনের সঙ্গে এক আলোচনা সভা শেষে এ তথ্য নিশ্চিত করেন রামেক হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি মো. ইমরান হোসেন।

সভা শেষে ইমরান হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, রোগীদের চিকিৎসার বিষয় মাথায় রেখে তাঁরা কর্মবিরতি স্থগিত করেছেন। আজ থেকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা কাজে ফিরেছেন। তবে পুরো হাসপাতালে কাল সকাল থেকে তাঁরা কাজে ফিরবেন।

আরও পড়ুন

সভার বিষয়ে ইমরান হোসেন বলেন, হাসপাতালে হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আইনের আওতায় আনার কথা তাঁরা বলেছেন। এ ছাড়া হাসপাতালে চিকিৎসকসহ সবার সার্বিক নিরাপত্তার কথা বলা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফলপ্রসূ কিছু না হলে তাঁরা আগামী শনিবার থেকে মানববন্ধনের মতো কর্মসূচি পালন করবেন। সেখানে পরবর্তী কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা আজ দীর্ঘক্ষণ সভা করেছেন। সভায় ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা বেশ কিছু দাবি জানিয়েছেন। ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা তাঁদের কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা চান। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় দেখতে চান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁদের আশ্বস্ত করেছে। পরে আশ্বাস পেয়ে তাঁরা কাজে ফেরার ঘোষণা দেন। আজ বিকেল থেকে চিকিৎসকদের একাংশ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কাজে ফিরেছেন। কাল সকাল থেকে তাঁরা পুরোদমে কাজে ফিরবেন। হাসপাতালের পরিস্থিতি এখন ভালো।

আরও পড়ুন

গতকাল রাত আটটার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী কে জি এম শাহরিয়ার হলের তৃতীয় তলার বারান্দা থেকে পড়ে যান। এরপর দ্রুত তাঁকে অ্যাম্বুলেন্সে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে জরুরি বিভাগে তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ তুলে হাসপাতালে ভাঙচুর চালান রাবির শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা রাবির শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। পরে রাত ১২টার দিকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দিয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা সবাই একযোগে হাসপাতাল ত্যাগ করেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ছিল, সহপাঠী চিকিৎসার অবহেলায় মারা যাওয়ায় তাঁরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। ওই সময় হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক ও আনসার সদস্যরা তাঁদের মারধর করেন। একপর্যায়ে তাঁরা হাসপাতালের গাছের টব ভাঙেন।

এ ঘটনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়ে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পাঁচ সদস্যের আরও একটি তদন্ত কমিটি করেছে।