পাটগ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা হত্যা মামলায় প্রধান আসামির ‘ঘনিষ্ঠ বন্ধু’ গ্রেপ্তার

বীর মুক্তিযোদ্ধা এম ওয়াজেদ আলী
ছবি: সংগৃহীত

লালমনিরহাটের পাটগ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা এম ওয়াজেদ আলীকে (৬৮) কুপিয়ে হত্যা ঘটনায় হওয়া মামলায় আলমগীর হোসেন ওরফে আবদুল্লাহ (২৮) নামের এক তরুণকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশ বলছে, মামলার প্রধান আসামি মো. নাহিদুজ্জামান প্রধান ওরফে বাবুর ঘনিষ্ঠ বন্ধু আলমগীর। হত্যাকাণ্ডের আগে সারা দিন দুজন একসঙ্গে ছিলেন।

আলমগীর হোসেন পাটগ্রাম পৌরসভার নিউ পূর্বপাড়া এলাকার বাসিন্দা। আজ সোমবার ভোরে বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওমর ফারুক। তিনি বলেন, তাঁকে আজ দুপুরে লালমনিরহাট আদালতে পাঠানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে আলমগীরের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। প্রধান আসামিসহ জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত। আশা করছেন, দ্রুত সবাইকে গ্রেপ্তার করা যাবে।

গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে পাটগ্রাম পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড নিউ পূর্বপাড়ার পোস্ট অফিসপাড়ায় নিজবাড়ির ফটকের সামনে বীর মুক্তিযোদ্ধা এম ওয়াজেদ আলীকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় শনিবার রাতে ওয়াজেদ আলীর ছোট ছেলে মো. রিফাত হাসান (২৯) বাদী হয়ে মো. নাহিদুজ্জামানকে (২৫) প্রধান আসামি করে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন। নাহিদুজ্জামান একই পাড়ার বাসিন্দা। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক।

আরও পড়ুন

মামলার এজাহার, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পাটগ্রাম মহিলা কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ওয়াজেদ আলী অবসরের পর স্থানীয় ফাতেমা প্রি–ক্যাডেট কিন্ডার গার্টেনের প্রশাসকের দায়িত্ব নেন। ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বছরখানেক আগে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন পাটগ্রাম সরকারি কলেজে অনাসপড়ুয়া নাহিদুজ্জামান প্রধান। স্কুলের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নে দেরি করায় ওয়াজেদ আলীর সঙ্গে নাহিদুজ্জামানের কথা–কাটাকাটি হয়। স্থানীয়দের ধারণা, সেই ক্ষোভ থেকে নাহিদুজ্জামান এম ওয়াজেদ আলীকে রাতের আধারে নৃসংশভাবে কুপিয়ে হত্যা করেন। ঘটনার পরপর প্রতিবেশী নাহিদুজ্জামান প্রধান এলাকায় ছিলেন না। তাঁর মুঠোফোনও বন্ধ ছিল।

আরও পড়ুন

নাহিদুজ্জামানের বিষয়ে জানতে বাড়িতে গেলে তাঁর মা নুরজাহান সাংবাদিকদের বলেন, তাঁরা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। তাঁর ছেলে এ ধরনের কাজ করতে পারে না। তবে ঘটনার দিন (শুক্রবার) সন্ধ্যায় নাহিদুজ্জামানের সঙ্গে অপরিচিত দুজন ছেলে তাঁদের বাড়ির কাছে এসেছিলেন।

এম ওয়াজেদ আলীর ভাগনে পাটগ্রাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বলেন, খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে। এই খুনের রহস্য উদ্‌ঘাটন করার পাশাপাশি খুনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।