‘ছোট একটা বাচ্চা, কারও সঙ্গে শত্রুতা নেই, এরপরও তাকে মেরে ফেলল’

মুন্সিগঞ্জে বসতঘর থেকে চুরি করে দুই মাস বয়সী শিশু আজান হত্যার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করা হয়। বুধবার বেলা ১২টার দিকে মুন্সিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে
ছবি: প্রথম আলো

মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার মিরকাদিম পৌরসভায় বসতঘর থেকে চুরি করে দুই মাস বয়সী শিশু আজান হত্যার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার এবং ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করা হয়েছে। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে মুন্সিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে এ কর্মসূচি পালন করেন আজানের স্বজন ও এলাকার বাসিন্দারা।

নিহত আজান নারায়ণগঞ্জের পাগলা এলাকার মো. শরীফ হোসেনের ছেলে। আজানের জন্মের কয়েক দিন আগে থেকে শরীফের স্ত্রী শ্রাবণী বেগম মিরকাদিম পৌরসভার গোপালনগর এলাকার বাবার বাড়িতে ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে সাতটার দিকে ঘর থেকে শিশুটি চুরি হয়। চুরির চার দিন পর সোমবার সকাল সাতটার দিকে গোপালনগরের বসতঘরের ২০ মিটার দূরের একটি ডোবা থেকে আজানের লাশটি উদ্ধার করেন স্বজনেরা।

বুধবার দুপুর ১২টার দিকে মানববন্ধন শুরু হয়। ঘণ্টাব্যাপী চলা এ কর্মসূচিতে বক্তারা আজান হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার রমিজা বেগমসহ অন্যদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়ার দাবি জানান। মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন আজানের নানি ময়না বেগম, নানা মোহন মিয়া, খালা শ্রাবণী আক্তার, মামা মোক্তার হোসেনসহ অন্যরা। মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মুন্সিগঞ্জ আদালতের দিকে যান তাঁরা।

বক্তারা এ সময় বলেন, গত বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে সাতটার দিকে আজানকে বসতঘরের খাটে ঘুমন্ত অবস্থায় রেখে শৌচাগারে যান মা শ্রাবণী। এ সময় পাশের বাড়ির রমিজা বেগম ঘরের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। শ্রাবণী এসে দেখেন—রমিজাও নেই, বাচ্চাও নেই।

আরও পড়ুন

ময়না বেগম বলেন, ‘আমার দুটি মেয়ে। মানুষের বাড়িতে কাজ করে সংসার চলছিল। আজান হওয়ার পর আমরা খুব খুশি ছিলাম। সেই নাতিকে চুরি করে নিয়ে রমিজা মেরে ফেলল। রমিজার ফাঁসি চাই। রমিজাকে যাঁরা সহযোগিতা করেছেন তাঁদেরও ফাঁসি চাই।’

আজানের খালা লাবনী আক্তার বলেন, ‘ছোট একটি বাচ্চা। তার কারও সঙ্গে কোনো শত্রুতা নেই। এরপরেও তাকে রমিজা মেরে ফেলল। মেরে ময়লার ডোবায় লুকিয়ে রাখল। একটু ওদের মায়া হলো না। ছেলে হারিয়ে আমার বোনটা অসুস্থ। আমরা আজানের হত্যাকারীর বিচার চাই।’

মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, বাচ্চা চুরির ঘটনার পর মানব পাচার আইনে একটি মামলা হয়েছিল। সে মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তর করা হয়েছে। এ মামলায় রমিজা বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তবে কেন, কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে, সেটি জানা যায়নি।

আরও পড়ুন