শুধু রাস্তা রাস্তা করে সমস্যার সমাধান হবে না: ফাওজুল কবির খান

ঢাকা–সিলেট মহাসড়কের কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মাদ ফাওজুল কবির খান। বুধবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল বিশ্বরোড মোড় এলাকায়ছবি: প্রথম আলো

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘সবাই খালি রাস্তা চায়। যার ফোর লেন আছে, সে বলে সিক্স লেন করতে হবে। রাস্তা রাস্তা করে এই সমস্যার সমাধান করা যাবে না। যেভাবে রাস্তা হচ্ছে, তাতে বাসাবাড়ি করার জায়গা থাকবে না, শিল্প-কারখানা করার জায়গা থাকবে না, মানুষকে কবরে দেওয়ার জন্য কোনো জায়গা থাকবে না। রাস্তা রাস্তা করলে আমরা এগোতে পারব না। রাস্তার পাশাপাশি রেলের ব্যবহার বাড়াতে হবে। পাশাপাশি নৌপথ ব্যবহার করতে হবে।’

আজ বুধবার দুপুরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের যানজট নিরসনে নেওয়া কাজের অগ্রগতি দেখতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল বিশ্বরোড মোড়ে গিয়ে উপদেষ্টা এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘যানজট শুধু রাস্তার সমস্যা না। এখানে ট্রাফিক শৃঙ্খলার অভার রয়েছে। যানবাহনগুলো এলোমেলোভাবে চলাচল করে থাকে।’

ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘এখানে (সরাইল বিশ্বরোড মোড়) ফ্লাইওভার করতে হবে। এ জন্য অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হবে। প্রকল্প প্রণয়ন করা হবে। কাজের অগ্রগতি দেখার জন্য এখানে ১২ জন অফিসার পোস্টিং দেওয়া হয়েছে। এখানে ক্যাম্প করে দেওয়া হয়েছে। তাদের বলা হয়েছে, এখানে থেকে কাজ করার জন্য। এদের কেউ যদি এখানে না থাকে, আমাকে জানালে সঙ্গে সঙ্গে বরখাস্ত করা হবে।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘পাইপলাইনে গ্যাসের কথা ভুলে যান। শিল্প-কারখানা ছাড়া আর কোথাও পাইপলাইনের গ্যাস দেওয়া হবে না। এলপি গ্যাসে অভ্যস্ত হয়ে যান।’

এ সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম, পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক, কুমিল্লা অঞ্চলের হাইওয়ে পুলিশ সুপার শহীদুল আলম, সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোশারফ হোসাইনসহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশে চার দিন ধরে দীর্ঘ যানজট চলছে। আশুগঞ্জ গোলচত্বর থেকে সরাইল উপজেলার বেড়তলা, সরাইল বিশ্বরোড মোড় ও শাহবাজপুর সেতু হয়ে হবিগঞ্জের মাধবপুর এলাকা পর্যন্ত ৩৪ কিলোমিটার এলাকায় গত শনিবার বিকেল থেকে আজ বিকেল পর্যন্ত এ যানজট চলছে। এর আগে গত বুধবার থেকে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত দীর্ঘ যানজট লেগে ছিল।

সওজ, জেলা ও পুলিশ প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ভারতকে ট্রানজিট সুবিধা দেওয়ার লক্ষ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে সরাইল বিশ্বরোড মোড় হয়ে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৫ হাজার ৭৯১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫০ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ গত আট বছর ধরে ধীর গতিতে চলছে। কাজটি বাস্তবায়ন করছে ভারতীয় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড।

গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দেশি অর্থ ও ভারতীয় ঋণে চলমান ওই প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ভারতীয় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা কাজ ফেলে দেশে ফিরে যান। তিন মাস পর তাঁরা আবার বাংলাদেশে ফিরে কাজ শুরু করেন। এর মধ্যে তাঁদের অনেক মালামাল খোয়া যায়। এতে কাজের গতি আরও কমে যায়। তাঁরা কাজটি একধরনের না করার মতো অবস্থায় ফেলে রাখেন। ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দাবি মেটাতে গত মাসের শেষের দিকে আরও ১৬৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার।

আরও পড়ুন