আবুল কাশেমরা বলছেন, ৫০ কিমি হেঁটে বিএনপির গণসমাবেশে যোগ দিয়েছেন
রাজবাড়ীর কালুখালী থেকে ফরিদপুরে বিএনপির গণসমাবেশে যোগ দিতে এসেছিলেন ৬৭ বছর বয়সী আবুল কাশেম। তাঁর সঙ্গী কাছাকাছি বয়সের আরও ১৪ জন। তাঁদের সবার বাড়ি উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে। তাঁরা বলছেন, দলকে ভালোবেসে তাঁরা প্রায় ৫০ কিলোমিটার পথ হেঁটে সমাবেশস্থলে এসেছেন।
আজ শনিবার বিকেলে ফরিদপুর শহর থেকে ছয় কিলোমিটার দূরে কোমরপুর আবদুল আজিজ ইনস্টিটিউট মাঠে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। গণসমাবেশ শেষে বিকেলে কথা হয় আবুল কাশেমদের সঙ্গে। তখন তাঁরা হেঁটেই বাড়ির পথে রওনা হয়েছেন। জানান, পথে যানবাহন পাওয়া গেলে উঠবেন, না হলে হেঁটেই বাড়ি যাবেন।
দেশের পরিস্থিতি আজ ভালো নেই। মানুষ চরম অশান্তির মধ্যে আছে। দলকে ভালোবাসেন। তাই দলের সঙ্গে একমত হয়ে এই আন্দোলনে যোগ দিতে এসেছেন।
আলাপকালে আবুল কাশেম বলেন, তিনি বিএনপির একজন কর্মী। দীর্ঘদিন পর দল সমাবেশ করার সুযোগ পেয়েছে। এই আনন্দ আর ধরে রাখতে পারছিলেন না। মনপ্রাণ দিয়ে তিনি বিএনপিকে ভালোবাসেন। তাই ফরিদপুরের গণসমাবেশে যোগ দেবেন বলে তাঁরা কয়েকজন সিদ্ধান্ত নেন। ভয় কাজ করছিল, পরিবহন ধর্মঘটের কারণে পথে যদি কোনো ঝামেলা হয়। তাই সিদ্ধান্ত নেন হেঁটে রওনা করবেন।
আবুল কাশেমের সঙ্গী হয়েছেন আশরাফ আলী খান (৭০)। তিনি বলেন, তাঁর বাড়ি কালুখালী উপজেলার হরিণবাড়িয়া চড়ে। কালুখালী সদর উপজেলা থেকে আরও প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে। সেখান থেকে শুক্রবার রাত ১২টার দিকে রওনা করে উপজেলা সদরে আসেন। দলের অন্য সদস্যরাও সেখানে জড়ো হন। এরপর ১৫ জন একত্রে হেঁটে রওনা করেন। সমাবেশস্থলে আসতে তাঁদের শনিবার সকাল আটটা হয়ে যায়। শরীর কুলায় না বলে পথে পথে বিশ্রাম নিয়েছেন।
সমাবেশে আসার কারণ জানতে চাইলে আশরাফ আলী বলেন, দেশের পরিস্থিতি আজ ভালো নেই। মানুষ চরম অশান্তির মধ্যে আছে। দলকে ভালোবাসেন। তাই দলের সঙ্গে একমত হয়ে এই আন্দোলনে যোগ দিতে এসেছেন। আশরাফ আরও বলেন, এলাকার অটোরিকশা ভাড়া করে আসতে চেয়েছিলেন। কিন্তু গাড়ি বন্ধ, পথে ঝামেলার আশঙ্কায় কোনো চালক আসতে রাজি হননি।
দলের আরেক সদস্য কালুখালীর রতনদিয়া বাজার এলাকার ব্যবসায়ীয় মোহাম্মদ আলী (৬০)। তিনি বলেন, ‘আমাদের আজকের সমাবেশ সফল। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম দিন দিন বেড়েই চলেছে। ব্যবসায়ী, কৃষক—কেউ ভালো নেই। বিএনপির এই আন্দোলনের সঙ্গে আমি একমত পোষণ করেছি বলেই সবাই চলে এসেছি। অনেক মানুষের সমাগম বলে সমাবেশ শেষে আমাদের যেতে সমস্যায় পড়তে হতে পারে। তাই একটু আগেভাগেই বাড়ি ফিরে যাচ্ছি। পথিমধ্যে যদি কোনো গাড়ি পাই, তাহলে তাতেই বাড়ি ফিরে যাব।’