খুলনার সোনাডাঙ্গা থানা বিএনপির আহ্বায়ক মো. হাফিজুর রহমান (বাঁ থেকে চতুর্থ) ও সদস্য সচিব সৈয়দ সাজ্জাদ আহসান (বাঁ থেকে দ্বিতীয়)
ছবি: প্রথম আলো

দীর্ঘ ১৪ বছর পর ভোট দিয়ে খুলনার সোনাডাঙ্গা থানা বিএনপির নেতৃত্ব নির্বাচন করেছেন থানার সাতটি ওয়ার্ডের নেতারা।

ভোটে ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মো. হাফিজুর রহমান ওরফে মনি আহ্বায়ক ও নগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সৈয়দ সাজ্জাদ আহসান ওরফে পরাগ সদস্যসচিব নির্বাচিত হয়েছেন।

শুক্রবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সোনাডাঙ্গা থানা বিএনপির কর্মিসভা শেষে নেতৃত্ব নির্বাচনে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্য দিয়ে নগরের বিএনপির চার সাংগঠনিক থানার নেতৃত্ব নির্বাচন শেষ হলো। খালিশপুর থানা বিএনপির সম্মেলনের তারিখ এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি।

বিএনপির নেতারা জানিয়েছেন, নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক বেগম রেহানার সভাপতিত্বে শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়, নামাজ ও মধ্যাহ্নভোজের বিরতি দিয়ে যা বেলা ৩টা পর্যন্ত চলে। সোনাডাঙ্গা থানার সাতটি ওয়ার্ডের (প্রতিটিতে ৩১ জন করে) ২১৭ জন ভোটারের মধ্যে ২১২ জন ভোট দেন।

১১৩ ভোট পেয়ে হাফিজুর রহমান আহ্বায়ক নির্বাচিত হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শেখ জামাল উদ্দিন ৪৮ এবং শেখ ফারুক হোসেন ৪৬ ভোট পেয়েছেন। সদস্যসচিব পদে সৈয়দ সাজ্জাদ আহসান ৮১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তারিকুল ইসলাম ৭২ এবং মঈদুল হক ৫৪ ভোট পেয়েছেন।

হাফিজুর রহমান ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের টানা দুইবারের কাউন্সিলর। দলীয় সিদ্ধান্তে এবার তিনি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না। ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের টানা তিনবারের কাউন্সিলর ও নগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আশফাকুর রহমান আহ্বায়ক পদে মনোনয়ন ফরম তুললেও তিনি নির্বাচনে অংশ নেননি। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হয়েছেন আশফাকুর রহমান।

আরও পড়ুন

দৌলতপুর থানা বিএনপির আহ্বায়ক মুর্শিদ কামাল, সদস্যসচিব শেখ ইমাম

কর্মিসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহপ্রচার সম্পাদক শামীমুর রহমান বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। বর্তমান লুটেরা সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচন হবে না। চলমান আন্দোলনের মাধ্যমেই নিশিরাতের সরকার পালাতে বাধ্য হবে।

কর্মিসভায় সোনাডাঙ্গা থানার সাংগঠনিক দলের প্রধান শের আলম সভাপতিত্ব এবং বদরুল আনাম খান ও শেখ সাদী সঞ্চালনা করেন।

কর্মিসভার উদ্বোধন করেন খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম। মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব শফিকুল আলম প্রধান বক্তা এবং নগর কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক তারিকুল ইসলাম বিশেষ বক্তা ছিলেন।

আরও পড়ুন

খুলনার খানজাহান আলী থানা বিএনপির আহ্বায়ক মিজান, সদস্যসচিব আবু সাঈদ

নগর বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, খুলনা নগরে বিএনপির পাঁচটি সাংগঠনিক থানা খুলনা সদর, সোনাডাঙ্গা, খালিশপুর, দৌলতপুর ও খানজাহান আলীতে গত ১৪ বছরে কোনো সম্মেলন হয়নি। ২০০৯ সালের ২৫ নভেম্বর খুলনা মহানগর বিএনপির সর্বশেষ সম্মেলন হয়। ওই সম্মেলনের আগে থানাগুলোর কমিটি করা হয়েছিল। সর্বশেষ ২০২১ সালের ২৫ ডিসেম্বর পাঁচটি থানার বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।

চলতি বছরের ২৯ এপ্রিল নগর বিএনপির নির্বাহী কমিটির সভায় সম্মেলনের মাধ্যমে এ পাঁচ থানায় সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে কেন্দ্রের নির্দেশনায় পর এতে সংশোধনী আনা হয়। সে অনুযায়ী নগর বিএনপিতে যেহেতু আহ্বায়ক কমিটি রয়েছে, তাই থানাগুলোতেও আহ্বায়ক কমিটি করার সিদ্ধান্ত হয়। এ জন্য কর্মিসভায় ভোটের মাধ্যমে এসব থানার আহ্বায়ক ও সদস্যসচিব নির্বাচিত করা হচ্ছে।