হিরো আলমের পিকআপ ভ্যানেই বানানো হয়েছে মিনি মঞ্চ। সেখানে প্যান্ডেলের সঙ্গে লাগানো হয়েছে মাইক। পিকআপ ভ্যানের দুই পাশে ঝুলছে হিরো আলমের ছবি ও ‘একতারা’ প্রতীক–সম্বলিত ব্যানার। প্রচারণার প্রথম দিনে হিরো আলমের পোশাকেও ছিল চমক। তাঁর পরনে ছিল সাদা পাঞ্জাবির সঙ্গে ধুসর–তামাটে রঙের কটি।
হিরো আলম হেসে বলেন, ‘নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর জন্য বেশ কয়েকটা পোশাক বানাইচি। প্রতিদিনই একতারার প্রচারণায় চমক থাকবি।’
হিরো আলমকে কাছে পেয়ে এরুলিয়া এলাকার একজন ভোটার তাঁকে জড়িয়ে ধরে বলেন, ‘হামার বাড়ির লোক, তাক ভোট দিয়ে জিতাবার পারলে সুখে–দুঃখে পাশে পাওয়া যাবি।’
অন্য আরেক ভোটার বলেন, ‘হিরো আলম হামাকেরে বাড়ির ছোল (ছেলে)। ঘরের ছোল। তাক (তাঁকে) হামরা জীবন দিয়ে ভালোবাসি। তাক জিতাবার জন্যি জীবন দিয়ে চেষ্টা করমো।’
হিরো আলম বগুড়ার আঞ্চলিক ভাষায় বলেন, ‘এলাকা ছাড়া তো ভোট করবার পারমো না। এলাকার লোকের সাড়া লাগবি, এলাকার লোকের সহযোগিতা লাগবি। এলাকার সাহস, ভালোবাসা ও সহযোগিতা আছে বলেই দুই আসন থেকে নির্বাচন করিচ্চি। এলাকার শক্তি সবচেয়ে বড় শক্তি। এলাকার লোক হামার পাশে আছে। নির্বাচনী মাঠে প্রমাণ করে দিব, এলাকার লোকজন হামাক কতটা ভালোবাসে।’
বগুড়া-৬ আসন থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করলেও বিকেলে বগুড়া-৪ আসনের কাহালু উপজেলায় নির্বাচনী প্রচারণা চালাবেন বলে জানান হিরো আলম। তিনি বলেন, ‘কাহালুর মুরইলে পৌষসংক্রান্তির মেলা চলিচ্চে। সেটি হাজার হাজার মানুষের সমাগম। সগলির উদ্দেশে একতারা মার্কা ভোট চেয়ে জনসমাবেশে বক্তব্য দিব। দ্রুত সব এলাকায় পৌঁছাবার যাতে পারি, এ জন্য ট্রাক সুন্দর করে সাজিয়েছি। ট্রাক থ্যাকেই বক্তব্য দিব।’
গতকাল বুধবার দুপুরের দিকে বগুড়ার রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম হিরো আলমের হাতে একতারা প্রতীক তুলে দেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা এ সময় হিরো আলমের উদ্দেশে বলেন, ‘অদম্য হিরো আলম। কংগ্র্যাচুলেশন (অভিনন্দন)। আপনার জন্য শুভকামনা থাকল। আপনার স্পিরিট (মানসিক শক্তি) দেখে অনেকেই উজ্জীবিত হবে।’
দলীয় সিদ্ধান্তের কথা বলে বগুড়া-৪ ও বগুড়া-৬ আসনের বিএনপি দলীয় দুই সংসদ সদস্য গত ১১ ডিসেম্বর পদত্যাগ করেন। এরপর নির্বাচন কমিশন আসন দুটি শূন্য ঘোষণা করে। ১৮ ডিসেম্বর উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ১ ফেব্রুয়ারি আসন দুটিতে ভোট গ্রহণের কথা রয়েছে।
বগুড়া-৪ ও বগুড়া-৬ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন হিরো আলম। কিন্তু ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসূচক স্বাক্ষরের তালিকায় গরমিল থাকার অভিযোগে প্রথমে রিটার্নিং কর্মকর্তা, পরে নির্বাচন কমিশন থেকে তাঁর মনোনয়ন বাতিল করা হয়। এরপর প্রার্থিতা ফিরে পেতে হাইকোর্টে রিট করেন হিরো আলম। তিনি হাইকোর্টে রিট করে গত মঙ্গলবার প্রার্থিতা ফিরে পান। হিরো আলমের করা পৃথক রিটের শুনানি শেষে বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মনোনয়নপত্র গ্রহণ এবং তাঁকে প্রতীক বরাদ্দ দিতে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে (জেলা প্রশাসক) নির্দেশ দেন।