মুন্সিগঞ্জে বাল্কহেডের ধাক্কায় ট্রলারডুবিতে নিখোঁজ দুজনের লাশ উদ্ধার
মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলায় পদ্মার শাখা নদীতে বাল্কহেডের ধাক্কায় ট্রলারডুবির ঘটনায় নিখোঁজ দুজনের লাশ পাওয়া গেছে। আজ মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থল থেকে এক কিলোমিটার দূরে চৌসার এলাকায় একজনের এবং ৫০০ মিটার দক্ষিণে আরও একজনের লাশ ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে স্বজনদের খবর দেওয়া হলে তাঁরা লাশ শনাক্ত করেন।
মারা যাওয়া দুজন হলেন সিরাজদিখান উপজেলার মালখানগর ইউনিয়নের বাসিন্দা ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মো. হারুন অর রশিদ খান (৫০) এবং রাজধানীর ধানমন্ডির শংকর এলাকার বাসিন্দা মাহফুজুর রহমান (৩৫)।
এর আগে গত শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলার হাসাইলচর থেকে ৪০-৫০ জন যাত্রী নিয়ে একটি ট্রলার হাসাইল ঘাটের উদ্দেশে রওনা হয়। তখন দক্ষিণ দশআনি নামের একটি বাল্কহেড চাঁদপুর থেকে বালু আনতে ওই নৌপথ দিয়ে পদ্মা নদীর দিকে যাচ্ছিল। সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে বাল্কহেডটি ট্রলারের ওপর উঠিয়ে দেয়। এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার কাশিপুর এলাকার মো. ফারুকের মেয়ে ফাইজা আক্তার (৬) এবং মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার নজরুল ব্যাপারীর মেয়ে শিফার (১৫) লাশ উদ্ধার করা হয়। নিখোঁজ হন সিরাজদিখান উপজেলার মালখানগর ইউনিয়নের বাসিন্দা ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. হারুন অর রশিদ খান ও রাজধানীর ধানমন্ডির শংকর এলাকার বাসিন্দা ও শিফার খালাতো ভাই মাহফুজুর রহমান।
টঙ্গিবাড়ীর হাসাইল-বানারী ইউপির ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য বাবু হালদার আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, সকালে স্থানীয় ব্যক্তিরা মুঠোফোনের মাধ্যমে জানান, ট্রলারডুবির ঘটনায় নিখোঁজ ব্যক্তিদের লাশ ভেসে উঠেছে। পরে ঘটনাস্থল থেকে এক কিলোমিটার দুরে কামারখাড়া ইউনিয়নের চৌসার এলাকা থেকে মাহফুজুর রহমানের এবং ঘটনাস্থলের ৫০০ মিটার দুরে হাসাইল এলাকার মাছের ঝাঁক এলাকা থেকে হারুন অর রশিদের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে স্বজনদের খবর দেওয়া হলে তাঁরা এসে লাশ দুটি শনাক্ত করেন।
নিহত ইউপি সদস্য হারুন অর রশিদের চাচাতো ভাই মনসুর আহমেদ বলেন, ‘নিখোঁজের পর চাঁদপুর পর্যন্ত ভাইয়ের লাশ খুঁজেছি। আজ সকালে পেয়েছি। এখন অন্তত নিজ হাতে দাফন করতে পারব। ভাইয়ের কবরটা দেখতে পারব।’
বেপরোয়া গতিতে বাল্কহেড চালিয়ে ট্রলারের যাত্রীদের হতাহতের ঘটনায় গত রোববার রাত সাড়ে ১২টার দিকে টঙ্গিবাড়ী থানায় একটি মামলা হয়। দুর্ঘটনাকবলিত ট্রলারটির চালক আল আমিন এই মামলা বাদী। মামলায় বাল্কহেডের মালিক, চালকসহ পাঁচজনকে আসামি করা হয়। রোববারই বাল্কহেডের পাচক, লস্কর, ইঞ্জিনমিস্ত্রিসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।