অপহরণে ব্যবহৃত গাড়ির চালক ও সহযোগী গ্রেপ্তার, হাসপাতাল ছাড়লেন ভুক্তভোগী

পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার অপহরণে ব্যবহৃত গাড়ির চালক ও তাঁর সহযোগী। বুধবার সদর থানায়ছবি: প্রথম আলো

বহুল আলোচিত নাটোরের সিংড়া উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেনকে অপহরণের কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসের চালক ও তাঁর সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার দুপুরে নওগাঁর রানীনগর উপজেলার রায়পুর গ্রাম থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন অভিযুক্ত প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা লুৎফুল হাবীবের গাড়িচালক ও সিংড়ার ইটালী গ্রামের নিতাই সরকারের ছেলে সুজন সরকার (৩২) এবং নওগাঁর রানীনগর উপজেলার রায়পুর গ্রামের মনিন্দ্রনাথ প্রামাণিকের ছেলে নিরেন চন্দ্র প্রামাণিক (৪৮)।

আরও পড়ুন

এদিকে অপহরণ ও মারধরের ঘটনায় আহত প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন ৯ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর আজ হাসপাতাল ছেড়েছেন। আজ বিকেলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ছেড়ে তিনি নিজ বাড়ি সিংড়ার সাঐল গ্রামে আসেন। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার তাঁকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সিংড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।

দেলোয়ার হোসেন
ছবি: প্রথম আলো

বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রার্থীর ভাই মজিবুর রহমান বলেন, চিকিৎসকেরা তাঁর ভাইকে বাড়িতে থেকে চিকিৎসা চালিয়ে যেতে বলেছেন। চোখের কিছু সমস্যা ছাড়া তিনি মোটামুটি ভালো আছেন।

আরও পড়ুন

নাটোরের পুলিশ সুপার কার্যালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সদর থানার প্রার্থী অপহরণ মামলায় নওগাঁর রানীনগর উপজেলার রায়পুরে বিশেষ অভিযান চালায় পুলিশ। অভিযানে ওই গ্রামের নিরেন চন্দ্র প্রামাণিকের (৪৮) বাড়ি থেকে সিংড়ার চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেনকে অপহরণে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসের চালক সুজন সরকারকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁকে সহযোগিতা করার জন্য বাড়ির মালিক নিরেন চন্দ্র প্রামাণিককেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার দিন অন্যান্য আসামির সহযোগিতায় তাঁর মাইক্রোবাসে দেলোয়ারকে তুলে নিয়ে যান গ্রেপ্তার সুজন সরকার। সিসিটিভি ফুটেজে তাঁকে কালো প্যান্ট ও গেঞ্জি পরিহিত অবস্থায় দেখা যায়। ইতিমধ্যে জব্দ হওয়া মাইক্রোবাসে সুজনের ড্রাইভিং লাইসেন্স, গাড়ির কাগজ, লুৎফুল হাবীবের প্রচারপত্রসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র জব্দ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

১৫ এপ্রিল ৫ ঘণ্টার ব্যবধানে জেলা প্রশাসক ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে থেকে প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন, তাঁর ভাই এমদাদুল হক ও কলম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন মুন্সিকে অপহরণ করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। সন্ধ্যায় মুমূর্ষু অবস্থায় সিংড়ার সাঐল গ্রামে নিজ বাড়ির সামনে ফেলে রেখে যায় দেলোয়ারকে। ওই দিনই তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর ভাই মুজাহার আলী বাদী হয়ে সদর থানায় অজ্ঞাতনামা ২০ থেকে ২৫ জনের বিরুদ্ধে অপহরণ ও মারধরের মামলা করেন।

আরও পড়ুন

পুলিশ এখন পর্যন্ত তিন দফায় মোট পাঁচজনকে গ্রেপ্তার ও অপহরণে ব্যবহৃত দুটি গাড়ি জব্দ করেছে। সিসিটিভি ফুটেজ ও গ্রেপ্তার এক আসামির জবানবন্দিতে ঘটনার সঙ্গে লুৎফুল হাবীবের সম্পৃক্ততার অভিযোগ ওঠে। পরে তাঁর বোনের জামাই এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ তাঁকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি উপজেলা আওয়ামী লীগ তাঁকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করার নির্দেশনা দেয়। পরে গত রোববার দুপুরে প্রতিনিধির মাধ্যমে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন লুৎফুল হাবীব।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন