খুলনায় তৃতীয় দিনের মতো কর্মবিরতিতে চিকিৎসকেরা, সেবা পাচ্ছেন না রোগীরা

চিকিৎসকদের কর্মবিরতির কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগীরা। আজ শুক্রবার সকালে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে
ছবি: প্রথম আলো

চিকিৎসকের ওপর হামলার প্রতিবাদে ও আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে টানা তৃতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি পালন করছেন খুলনার চিকিৎসকেরা। গত বুধবার সকাল ছয়টা থেকে তাঁদের ওই কর্মবিরতি শুরু হয়।

এদিকে টানা কর্মবিরতিতে খুলনায় চিকিৎসা কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। আজ শুক্রবার নগরের বিভিন্ন ক্লিনিক ও ব্যক্তিগত চেম্বারে চিকিৎসকদের পূর্বনির্ধারিত অ্যাপয়েনমেন্ট বাতিল করা হয়েছে। প্রতিদিনই দূরদূরান্ত থেকে আসা রোগীরা চিকিৎসা নিতে না পেরে ফিরে যাচ্ছেন। হাসপাতালে ভর্তি রোগীরাও প্রয়োজনীয় সেবা পাচ্ছেন না।

কর্মবিরতি প্রত্যাহারের বিষয়ে আলোচনা করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের পক্ষ থেকে সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল খুলনায় আসছে। আজ বেলা আড়াইটার দিকে খুলনা বিএমএ ভবনে চিকিৎসক নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসবে তারা। সেখানে বিএমএ, ক্লিনিকমালিকসহ চিকিৎসক সংশ্লিষ্ট সব সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।

আরও পড়ুন

প্রতিনিধিদলটি খুলনার পথে রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) খুলনার সভাপতি শেখ বাহারুল আলম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘যারাই আমাদের সঙ্গে আলোচনা করতে চায়, আমরা তাদের সঙ্গে বসব। তবে আমাদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’

জানা গেছে, আজ ঢাকার বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক খুলনার বিভিন্ন ক্লিনিকে রোগী দেখবেন না। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কর্মবিরতিতে একাত্মতা প্রকাশ করে তাঁদের পূর্বনির্ধারিত অ্যাপয়েনমেন্ট বাতিল করেছেন তাঁরা। এ ছাড়া গতকাল কর্মবিরতি প্রত্যাহার হবে—এমন ধারণা থেকে অনেক চিকিৎসক আজ ব্যক্তিগত চেম্বারের রোগীদের সিরিয়াল নিয়েছিলেন, সেগুলোও বাতিল করা হয়েছে।

প্রতি শুক্রবার নগরের ডক্টরস পয়েন্ট হাসপাতালে রোগী দেখেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক, কান, গলা বিশেষজ্ঞ আবদুল্লাহ মামুন। কয়েক সপ্তাহ আগ থেকেই রোগীরা তাঁর অ্যাপয়েনমেন্ট নেন। গতকাল রাতে তিনি সব অ্যাপয়েনমেন্ট বাতিল করেছেন। এতে বিপাকে পড়েছেন রোগীরা। অন্যান্য হাসপাতাল ও ক্লিনিকেও একইভাবে বিভিন্ন চিকিৎসকেরা নির্ধারিত অ্যাপার্টমেন্ট বাতিল করেছেন।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগে গত দুই দিন রোগী দেখেননি চিকিৎসকেরা। তবে জরুরি বিভাগ খোলা আছে। সেখানে ভর্তি থাকা রোগীরা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেবা দিচ্ছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা। আজ সকালে ওই হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

আরও পড়ুন

বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলা থেকে গত সোমবার মেডিসিন বিভাগে ভর্তি হয়েছেন মো. রবিউল ইসলাম। তিনি বলেন, বুধবার কোনো চিকিৎসক তাঁকে দেখতে আসেননি, গতকাল এসেছিলেন, তবে আজও কেউ আসেননি।

আন্দোলনরত চিকিৎসকদের দাবি, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি খুলনা মহানগরের শেখপাড়ায় অবস্থিত হক নার্সিং হোমে অস্ত্রোপচার চলা অবস্থায় চিকিৎসক শেখ নিশাত আবদুল্লাহকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন রোগীর স্বজনেরা। এ সময় অপারেশন থিয়েটারও ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে খুলনা বিএমএর পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা জানিয়ে ওই ঘটনার বিচার দাবি করে কর্মবিরতির ঘোষণা দেন চিকিৎসকেরা।

আরও পড়ুন