শান্তিপূর্ণ পরিবেশে চাকসুর ভোট গ্রহণ শুরু

শাটল ট্রেনে চড়ে চাকসু নির্বাচনে ভোট দিতে আসা শিক্ষার্থীরা। সকাল পৌনে নয়টায় বিশ্ববিদ্যালয় রেল স্টেশনেছবি: সৌরভ দাশ

শান্তিপূর্ণ পরিবেশে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। তবে ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার কথা ছিল সকাল নয়টায়।

সকাল ৮টা ২৫ মিনিটে প্রথম শাটল ট্রেন ক্যাম্পাসে ঢোকে। এরপর হাজারো শিক্ষার্থী রওনা দেন অনুষদ ভবনের দিকে। কাটা পাহাড়ে তল্লাশিচৌকি বসিয়ে শিক্ষার্থীদের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়। যাঁরা ক্যাম্পাসে ঢুকেছেন, তাঁদের সবাইকে নিজেদের আইডি কার্ড প্রদর্শন করতে হচ্ছে।

আজ সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ৩১২৪ নম্বর কক্ষে ভোট দিয়ে ছাত্রদল প্যানেলের জিএস প্রার্থী মো. শাফায়াত হোসেন অভিযোগ করেন, ভোটারের আঙুলে অমোচনীয় যে কালি দেওয়া হচ্ছে, তা এক ঘষাতেই উঠে যাচ্ছে।

মো. শাফায়াত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ। মাত্র একটি ট্রেন ক্যাম্পাসে এসেছে। বেশি শিক্ষার্থী দেখা যাচ্ছে না। তবে বেলা গড়ালে শিক্ষার্থীরা হয়তো ভোট দিতে আসবেন।

কালি উঠে যাওয়ার বিষয়টি শাফায়াত ঘটনাস্থলে থাকা নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমদকে জানান। নির্বাচন কমিশনার মমতাজ উদ্দিন এ বিষয়ে শাফায়াতকে বলেন, কালি উঠে গেলেও শিক্ষার্থীদের নাম তালিকা থেকে কেটে দেওয়া হচ্ছে। ফলে কোনো সমস্যা হবে না।

সকাল ১০টা ১০ মিনিটে একই কক্ষে ভোট দেন মোহাম্মদ শাহেদুল হক। তিনি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে দ্বিতীয় বর্ষে পড়ছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘জীবনে প্রথম ভোট দিলাম। দারুণ অনুভূতি। আশা করি উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হবে।’

আরও পড়ুন

আজ ৩৫ বছর পর ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ১৯৯০ সালে সর্বশেষ চাকসু নির্বাচন হয়। চাকসুতে এবার ভোটার প্রায় ২৭ হাজার ৫১৬ জন। এর মধ্যে ছাত্রী ১১ হাজার ১৫৬ জন। নির্বাচনে লড়তে প্রার্থী হয়েছেন ৯০৮ জন। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় সংসদে মোট ২৬ পদে লড়ছেন ৪১৫ প্রার্থী। একই সঙ্গে ১৪টি হল ও ১টি হোস্টেলে প্রার্থী হয়েছেন ৪৯৩ জন।

আইটি অনুষদে ভোট দিতে লাইনে দাঁড়িয়েছেন শিক্ষার্থীরা। সকাল সাড়ে নয়টায়
ছবি: জুয়েল শীল

কেন্দ্রীয় সংসদে সহসভাপতি (ভিপি) পদে ২৪ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ২২ জন ও সহসাধারণ সম্পাদক পদে ২২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
চাকসু নির্বাচনে লড়তে প্যানেল হয়েছে ১৩টি। এর মধ্যে ছাত্রদলের প্যানেল; ছাত্রশিবির-সমর্থিত প্যানেল ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’, বামপন্থী ছাত্রসংগঠন, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ১০টি সংগঠন মিলে ‘বৈচিত্র্যের ঐক্য’ (৩ পদে কেউ নেই), ছাত্র ইউনিয়ন ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সমন্বয়ে গঠিত যৌথ প্যানেল ‘দ্রোহ পর্ষদ’ (৯টি পদে কেউ নেই) এবং জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের সংগঠন স্টুডেন্টস অ্যালায়েন্স ফর ডেমোক্রেসি ও ছাত্র ফেডারেশনের জোটবদ্ধ প্যানেল ‘বিনির্মাণ শিক্ষার্থী ঐক্যে’র মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

দ্রোহ পর্ষদের ভিপি প্রার্থী ঋজু লক্ষ্মী অবরোধ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আধিপত্যবাদী অপসংস্কৃতির অবসান ঘটাতে চাকসু ভূমিকা রাখবে, এমনটাই আমাদের প্রত্যাশা।’

আরও পড়ুন