সুনামগঞ্জে সুরমার পানি কোথাও কমেছে, কোথাও বেড়েছে

সুনামগঞ্জে বৃহস্পতিবার রাতে উজানের পাহাড়ি ঢল কম নামায় সুরমা নদীর পানি কোথাও বেড়েছে, আবার কোথাও কমেছে। শুক্রবার সকালে শহরের লঞ্চঘাট এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

সুনামগঞ্জে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ভারী বৃষ্টি হয়েছে। তবে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল নেমেছে কম। এতে সুরমার পানি কোথাও কমেছে, আবার কোথাও বেড়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সুনামগঞ্জ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আজ শুক্রবার সকাল ৯টায় সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি ৭ দশমিক ৭৪ মিটারে ছিল। গতকাল একই সময়ে সেখানে পানি ছিল ৭ দশমিক ৮০ মিটারে। এখন পানি বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া ছাতক উপজেলা শহরের কাছে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ১০২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বেড়েছে ৮ সেন্টিমিটার। তাহিরপুর উপজেলার পাটলাই নদের সোলেমানপুর পয়েন্টেও পানি বেড়েছে।

আরও পড়ুন

এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে ১০০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। উজানের পাহাড়ি ঢলে পৌর শহরের উত্তর আরপিননগর এলাকার সুরমাপারের সড়ক ও সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী মঙ্গলকাটা বাজার প্লাবিত হয়েছিল গতকাল। আজ এসব এলাকা থেকেও পানি নেমে গেছে।

পাউবোর কর্মকর্তারা বলছেন, মূলত উজানে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ভারী বৃষ্টি হলেই সুনামগঞ্জে ঢল নামে। এতে নদ-নদী ও হাওরে পানি বৃদ্ধি পায়। গত বুধবার চেরাপুঞ্জিতে ২৫৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে উজানের ঢল নামছে। এতে সুনামগঞ্জে বৃষ্টি কম হলেও নদী ও হাওরের পানি বাড়ছে। সুনামগঞ্জে এ বছরের সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে গত ১ জুলাই—৩৩২ মিলিমিটার।

আরও পড়ুন

সদর উপজেলার সুরমার তীরের ইব্রাহিমপুর গ্রামের বাসিন্দা আকরাম উদ্দিন বলেন, রাতে বৃষ্টি হয়েছে। তবে উজানের ঢল নেমেছে কম। এ কারণে নদীর পানি কিছুটা কমেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত মাসের শেষে ও চলতি মাসের শুরুর দিকে ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের হাওর এখন পানিতে টইটম্বুর। এখন বৃষ্টি ও উজানের ঢল নামায় জেলার সুরমা, জাদুকাটা, বৌলাই, রক্তি, কুশিয়ারা, চলতি, পাটলাই, চেলা, নলজুর, খাসিয়ামারা, কালনীসহ সব নদ-নদীর পানি বাড়ছে। গতকাল রাতে পাহাড়ি ঢল কম নামায় পানি কমছে।

আরও পড়ুন

উজানের ঢলে সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার শক্তিয়ারখলা এলাকায় বিশ্বম্ভরপুর-তাহিরপুর সড়কের কিছু অংশ প্লাবিত হয়েছে। এতে যান চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এটিই জেলা সদরের সঙ্গে তাহিরপুর উপজেলায় যোগাযোগের প্রধান সড়ক। সেখানে লোকজন দুদিন ধরে নৌকায় পারাপার হচ্ছেন।

বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার দক্ষিণ বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান এরশাদ মিয়া বলেন, তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ সড়কের শক্তিয়ারখলা এলাকার কিছু অংশ নিয়ে মানুষ বড় সমস্যায় আছেন। সড়কের এ অংশটুকু নিচু হওয়ায় ঢল নামলেই প্লাবিত হয়। এতে জেলা সদরের সঙ্গে যাতায়াতে ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হয়।

পাউবোর সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার প্রথম আলোকে বলেন, বৃষ্টি হবে, উজান থেকে ঢলও নামতে পারে। তবে বন্যার কোনো আশঙ্কা নেই। পানি আরও কমবে।