পুলিশ সদস্যের সঙ্গে ‘ঝামেলায়’ গ্রেপ্তার যুব গেমসের সব খেলোয়াড়ের জামিন

খেলোয়াড়দের জামিনের দাবিতে তাঁদের স্বজনেরা মানববন্ধন করেছেন। আজ মঙ্গলবার সকালে রাজশাহী কোর্ট স্টেশন এলাকায়
ছবি: শহীদুল ইসলাম

শেখ কামাল দ্বিতীয় বাংলাদেশ যুব গেমস খেলে ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে রাজশাহীতে রেলস্টেশনে গ্রেপ্তার হওয়া বাকি খেলোয়াড়দেরও জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. লিটন সরকার তাঁদের জামিন মঞ্জুর করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী মাইনুর রহমান প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জামিন পাওয়া খেলোয়াড়েরা হলেন আলী আজম (১৯), আকাশ আলী (২০), রিমি খানম (১৯), পাপিয়া সারোয়ার ওরফে পূর্ণিমা (১৯), মোছা. দিপালী (১৯) ও সাবরিনা আক্তার (১৯) এবং তাঁদের কোচ আহসান কবীর (৪৫)। এ ছাড়া আরেক আসামি মো. রমজান (১৯) পলাতক ছিলেন। তিনিও জামিন চেয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। তাঁকেও আজ আদালত জামিন দিয়েছেন। গতকাল সোমবার অপ্রাপ্তবয়স্ক পাঁচ খেলোয়াড়ের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।

আরও পড়ুন

আইনজীবী মাইনুর রহমান বলেন, আদালতে কাগজপত্র কারাগারে পৌঁছানোর পর তাঁরা মুক্তি পাবেন। এই খেলোয়াড়দের জামিনের ব্যাপারে আদালতের কোনো আপত্তি ছিল না। তবে তাঁরা (আসামিপক্ষ) প্রথমে অপ্রাপ্তবয়স্কদের জামিন নেওয়ার জন্য গতকাল ব্যস্ত ছিলেন। এ ছাড়া গতকালই প্রাপ্তবয়স্কদের জামিন চাইলে আদালত হয়তো তাঁদের জামিন মঞ্জুর করতেন।

এদিকে এই খেলোয়াড়দের জামিনের দাবিতে তাঁদের স্বজনেরা আজ সকালে রাজশাহী কোর্ট স্টেশন এলাকায় মানববন্ধন করেছেন। সেখানে তাঁরা রাজশাহী রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোপাল কুমারের অপসারণ দাবি করেছেন।

গত রোববার ঢাকা থেকে রাজশাহী ফেরার পথে ট্রেনে একজন পুলিশ সদস্যের সঙ্গে ঝামেলা হলে যুব গেমসে অংশ নেওয়া একদল খেলোয়াড়ের নামে ওই পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী রেলওয়ে থানায় মামলা করেন। এরপর রাজশাহী রেলস্টেশন থেকে ১১ খেলোয়াড় ও তাঁদের কোচকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আরও পড়ুন

রোববার রাত আটটার দিকে রাজশাহীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নেওয়া হলে ছয় খেলোয়াড় ও কোচকে ভারপ্রাপ্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. লিটন হোসেন তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এদিকে অপ্রাপ্তবয়স্ক পাঁচ খেলোয়াড়কে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এ তোলা হলে তারা গতকাল সকাল ১০টা পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পায়।

এই খেলোয়াড়েরা জুডো, কুস্তি, কারাতেসহ বিভিন্ন খেলায় অংশ নিয়ে থাকেন। রাজশাহীর বিভিন্ন এলাকায় তাঁদের বাড়ি। ১৮ মার্চ তাঁদের ভারতে খেলতে যাওয়ার কথা আছে। তাঁদের অভিভাবকেরা জানিয়েছেন, এই খেলোয়াড়দের পুরস্কারের টাকা, মেডেলসহ ব্যাগ ট্রেনের মধ্যে হারিয়ে যায়। এই ব্যাগ খোঁজাখুঁজির সময় সাদাপোশাকে থাকা গোলাম কিবরিয়া (৩০) নামের এক পুলিশ সদস্যের গায়ে একটু ধাক্কা লাগে। তখন আলী আজম নামের এক খেলোয়াড় ‘সর‍ি’ বলেন। তারপরও গোলাম কিবরিয়া ওই খেলোয়াড়ের কলার ধরে চড় দেন। তখন অন্য খেলোয়াড়েরা এগিয়ে গেলে সেখানে ঝামেলার সৃষ্টি হয়। এ সময় ধাক্কা লেগে গোলাম কিবরিয়ার স্ত্রীর নাক দিয়ে রক্ত বের হয়। স্টেশনে নামার পর রেলওয়ে থানা–পুলিশকে ডেকে সবাইকে থানায় নিয়ে যান গোলাম কিবরিয়া। পরে মামলায় গোলাম কিবরিয়া স্ত্রী দাবি করেন, স্বামীকে মারধরের সময় তাঁর গলার চেইন চুরি করে নেওয়া হয়েছে। গোলাম কিবরিয়ার বাড়ি রাজশাহীর গোদাগাড়ীর প্রেমতলী খেতুর গ্রামে। তিনি জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কর্মরত।