জোর করে ভোট দিয়ে দেওয়া প্রায় নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছি: রংপুরে সিইসি

রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। সোমবার রাতে রংপুরে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে
ছবি: প্রথম আলো

রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএমে ভোট গ্রহণ নিয়ে প্রার্থীদের আস্থা আছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের পক্ষে ইভিএমে ভোট করা অনেক বেশি সহজ এবং অনেক বেশি নিরপেক্ষ, যেটা রিগিংমুক্ত (কারচুপি)। যেটা আমরা ব্যালটে জোর করে করতে পারি। সেটা ইভিএমে করা সম্ভব হয় না।’

সোমবার রাতে রংপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সিইসি এসব কথা বলেন। ২৭ ডিসেম্বর রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হবে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি, আপনারাও দেখেছেন, অভিযোগও উঠেছে, একজন জোর করে ভোট দিয়ে দেয়। সেটি আমরা প্রায় নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছি। আগামীতেও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে থাকবে। আমরা সেই আশ্বাস তাঁদের (প্রার্থীদের) প্রদান করেছি। আমরা মনে করি তাঁরা আশ্বস্তবোধ করেছেন।’

আরও পড়ুন

রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের সঙ্গে সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা থেকে মতবিনিময় সভা করেন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল। রংপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এই সভায় কমিশনের অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা প্রার্থীদের অভিযোগ ও মতামত শোনেন। এরপর রাত সাড়ে ৯টায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘নির্বাচনের সময় একটা গুরুত্বপূর্ণ হলো আইনশৃঙ্খলা। এ বিষয়টা রক্ষা করা অনেক সময় কষ্টসাধ্য হয়ে ওঠে। কিন্তু আমরা ইতিপূর্বে দেখেছি, আইনশৃঙ্খলার খুব একটা বিপর্যয় ঘটেনি। আমরা জেলা প্রশাসন থেকে সহায়তা পেয়েছি, পুলিশ প্রশাসন থেকে সহায়তা পেয়েছি। আমরা আশা করি, এখানেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে থাকবে। যাঁরা প্রার্থী, আমরা তাঁদেরও ঐকান্তিক সহায়তা কামনা করছি।’

প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, প্রার্থীরা কিছু অভিযোগ তুলে ধরেছেন। আবার সাধুবাদও জানিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগগুলো শুনেছেন। বলেছেন, সমস্যাগুলো সমাধান করা সম্ভব। আইনের ওপর যদি আরোপিত বিষয় হয়ে থাকে, তাহলে নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এসব দেখবেন।

গাইবান্ধার উপনির্বাচন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের উত্তরে সিইসি বলেন, ‘আমরা তদন্ত কমিটি করে দিয়েছি। সেই তদন্ত আমরা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা–নিরীক্ষা করে একজন বা দুজন পুলিশ কর্মকর্তা এবং একজন এডিএম ও একজন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের ব্যাপারে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। প্রচুর প্রিসাইডিং কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি।’
নির্বাচনে গণমাধ্যমকর্মীদের ভূমিকা প্রসঙ্গে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘মিডিয়া (গণমাধ্যমকর্মীরা) অবশ্যই ভেতরে যেতে পারবেন। কিছু নির্ধারিত জায়গায় ক্যামেরা ফোকাস করবেন না। যেটি হচ্ছে গোপন কক্ষ। গোপন কক্ষের নিচে দিয়ে পা দুটো, চারটে, না ছয়টা, তা অবশ্যই নিতে পারবেন। কারণ, আমরা স্বচ্ছতা চাই। স্বচ্ছতার একটি বড় অংশ হলো মিডিয়া।’

আরও পড়ুন

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান, কমিশনের সচিব জাহাঙ্গীর আলম, রংপুর বিভাগীয় কমিশনার সাবিরুল ইসলাম, রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার নুরে আলম মিনা, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম সচিব আবদুল বাতেন, জেলা প্রশাসক চিত্রলেখা নাজনীন, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জি এম সাহতাব উদ্দিন প্রমুখ।

রংপুর সিটি করপোরেশনে তৃতীয়বারের মতো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ২৭ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।