গোয়ালন্দ ঘাট সড়কে পণ্যবাহী গাড়ির লম্বা সারি

দীর্ঘ সময় ফেরির অপেক্ষায় থেকে অতিষ্ট হয়ে গেছেন পণ্যবাহী ট্রাকের এক চালক। আজ সকালে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দৌলতদিয়া ক্যানালঘাট এলাকায়ছবি: প্রথম আলো

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে নদী পাড়ি দিতে আসা ঢাকামুখী পণ্যবাহী গাড়ির চাপ রয়েছে। ফেরিঘাট থেকে মহাসড়কের প্রায় চার কিলোমিটার পণ্যবাহী গাড়ির সারি তৈরি হয়েছে। ঘাট কর্তৃপক্ষ বলছে, ঈদের আগে ও পরে কয়েক দিন সাধারণ পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল বন্ধ ছিল। ঈদের ছুটির পর অন্যান্য গাড়ির সঙ্গে পণ্যবাহী গাড়ি আসতে শুরু করায় ঘাটে চাপ পড়েছে।

আজ শুক্রবার সকালে ঘাট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ঈদের ছুটি কাটিয়ে অনেকেই এখনো ঢাকায় ফিরছেন। তাই ফেরিঘাট সড়কের প্রায় দেড় কিলোমিটার অংশে যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী গাড়ির জটলা রয়েছে। তবে এর পর থেকে পণ্যবাহী গাড়ির সারি মহাসড়কের গোয়ালন্দ ফিড মিল চলে গেছে।

গাজীপুরগামী কাভার্ডভ্যানচালক রেজাউল করিম বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর তিনি যশোরের বেনাপোল থেকে রওনা দেন। রাত সাড়ে ১১টার দিকে গোয়ালন্দ মোড় পৌঁছানোর পর কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ তাঁকে আহ্লাদিপুর এলাকায় প্রায় দেড় কিলোমিটার পেছনে পাঠিয়ে দেন। আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিনি দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের কাছে যানজটে আটকে ছিলেন।

রেজাউল করিম বলেন, ‘এখন গণপরিবহনের তেমন কোনো চাপ নেই। তারপরও পণ্যবাহী গাড়ির লম্বা লাইন তৈরি হয়েছে। প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে ঘাট এলাকায় আটকে আছি। ফেরির নাগাল পেতে হয়তো আরও ২-৩ ঘণ্টা লাগবে।’

সাতক্ষীরা থেকে আসা বাসচালক রানা হোসেন বলেন, ‘সারা রাস্তায় পণ্যবাহী গাড়ির লম্বা লাইন দেখলাম। ফেরিঘাট থেকে এক কিলোমিটার পেছনে টার্মিনাল এলাকায় আসা মাত্র দেখি দুই লাইন। বাম পাশের লাইন ধরে এক ঘণ্টার ওপর আটকে আছি। ফেরিতে উঠতে হয়তো আরও ঘণ্টাখানেক সময় লাগতে পারে।’

ঈদের ছুটি কাটিয়ে অনেকেই এখনো ঢাকায় ফিরছেন। আজ সকালে দৌলতদিয়ার ৫ নম্বর ফেরিঘাটে
ছবি: প্রথম আলো

একটি পণ্যবাহী গাড়ির দৌলতদিয়া ঘাট প্রতিনিধি মজিবর হোসেন বলেন, ঈদের আগে ও পরে সাধারণ পণ্যবাহী পরিবহন পাঁচ দিন করে ফেরি পারাপার বন্ধ ছিল। ওই সময় জরুরি কাঁচামালের গাড়ি ছাড়া সাধারণ পণ্যের কোনো গাড়ি পার হতে পারেনি। ঈদ পরবর্তী সময়ে এখন যাত্রীবাহী পরিবহনের চাপ কমলেও সাধারণ পণ্যের গাড়ি চলাচল শুরু করায় ঘাটে চাপ পড়েছে।

এদিকে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে দেখা যায়, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে আসা মানুষজন নদী পাড়ি দিতে ঘাটে ভিড় করছেন। বিভিন্ন উপায়ে আসার পর তাঁরা ফেরিতে নদী পাড়ি দিতে ভিড় করছেন।

মাগুরা থেকে আসা তানজিবুর রহমান স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ফেরিতে ওঠার অপেক্ষা করছেন। এ সময় তিনি জানান, ঈদের দুই দিন পর তাঁর অফিস খুলে যাওয়ায় পরিবার বাড়িতে রেখে তিনি ঢাকায় চলে যান। গতকাল অফিস করে বিকেলেই গ্রামের বাড়ি মাগুরায় আসেন। আজ সকালে আবার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বাড়িতে রওনা দিয়েছেন।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌপরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (মেরিন) আবদুস সাত্তার প্রথম আলোকে বলেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ছোট-বড় ২১টি ফেরি থাকলেও পাঁচ দিন ধরে ইউটিলিটি (ছোট) ফেরি ‘বনলতা’ যান্ত্রিক ত্রুটিতে বিকল হয়ে আছে। বর্তমানে ২০টি ফেরি চলাচল করছে। এ ছাড়া ঈদের আগে ও পরে কয়েক দিন সাধারণ পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল বন্ধ ছিল। ঈদের ছুটির পর পণ্যবাহী গাড়ি আসতে শুরু করায় ঘাটে চাপ পড়েছে। এ পরিস্থিতি আরও কয়েক দিন চলবে বলে মনে করেন তিনি।