সম্পদে আ.লীগ, মামলায় বিএনপির প্রার্থী এগিয়ে

২৮ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মেয়র পদে ছয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

  • আওয়ামী লীগের প্রার্থী নায়ার কবির উচ্চমাধ্যমিক পাস, বিএনপির প্রার্থী জহিরুল হক বিকম পাশ।

  • নায়ার কবিরের বার্ষিক আয় ১১ লাখ ৭৩ হাজার ৪৬৯ টাকা।

  • বিএনপি প্রার্থীর বার্ষিক আয় লাখ হাজার ৩০০ টাকা। তাঁর নামে ৩২টি মামলা রয়েছে।

পৌরসভা নির্বাচন
প্রতীকী ছবি

এক সপ্তাহ পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা নির্বাচন। নির্বাচনে অংশ নেওয়া মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা এখন প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। মেয়র পদে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও আওয়ামী লীগের এক ‘বিদ্রোহী’সহ ছয় প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁদের মধ্যে সম্পদে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান মেয়র নায়ার কবির এবং শিক্ষা ও মামলায় বিএনপির প্রার্থী জহিরুল হক এগিয়ে। রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া ওই দুই প্রার্থীর হলফনামা ঘেঁটে এসব তথ্য জানা গেছে।

জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২৮ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মেয়র পদে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, আওয়ামী লীগের একজন বিদ্রোহী, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

হলফনামা ঘেঁটে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নায়ার কবির উচ্চমাধ্যমিক পাস, বিএনপির প্রার্থী ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জহিরুল হক বিকম, আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী মাহমুদুল হক স্নাতক, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির নজরুল ইসলাম এসএসসি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী আবদুল মালেক দাওরায়ে হাদিস এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল কারীম উচ্চমাধ্যমিক পাস।

নৌকার প্রার্থী নায়ার কবিরের হলফনামা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, তাঁর বার্ষিক আয় ১১ লাখ ৭৩ হাজার ৪৬৯ টাকা। এর মধ্যে বাড়িভাড়া থেকে ৬ লাখ ৮৮ হাজার ৭০৫ টাকা ও মেয়র হিসেবে সম্মানী ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা এবং অন্যান্য উৎস থেকে তাঁর আয় ৪ হাজার ৭৬৪ টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে তাঁর কাছে নগদ ২ লাখ ৪৩ হাজার টাকা, স্বর্ণালংকার ১ লাখ ২৭ হাজার টাকার ও নিজ নামে ব্যবসাবহির্ভূত সম্পদ (নগদ ও ব্যাংকে) ৭০ লাখ ৫৩ হাজার ২৮৭ টাকা। স্থাবর সম্পদের মধ্যে তাঁর নামে ২ কোটি ২২ লাখ ১৬ হাজার ৩১৩ টাকার অকৃষিজমি, জেলা শহরের বি.বাড়িয়া টাওয়ারে ৬৬২ দশমিক ৫ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট আছে।

বিএনপির প্রার্থী জহিরুল হকের হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে, তাঁর পেশা ঠিকাদারি ব্যবসা। তাঁর বার্ষিক আয় ৮ লাখ ৮ হাজার ৩০০ টাকা। অস্থাবর সম্পদ হিসেবে তাঁর কাছে নগদ ১৩ লাখ ১৭ হাজার ৫ টাকা ও স্ত্রীর নামে ৩ লাখ টাকা আছে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিজ নামে ৫ লাখ ৩০ হাজার ৩৪৪ টাকা ও স্ত্রীর নামে ৩৮ হাজার ২৮৭ টাকা জমা আছে। আলিকো, ডেলটা লাইফ ও ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডে ৩ লাখ ৫৪ হাজার ৫৮২ টাকা আমানত হিসেবে রাখা আছে।

বিএনপির প্রার্থী জহিরুলের স্থাবর সম্পদের মধ্যে তাঁর নামে ১ কোটি ১৩ লাখ ৩২ হাজার ৩৬৩ টাকার এবং স্ত্রীর নামে ২ লাখ ৬৫ হাজার ৩০০ টাকার অকৃষিজমি রয়েছে। চার শতক জমির ওপর তাঁর একটি বাড়ি রয়েছে। ওই বাড়ির বাজারমূল্য ১ কোটি ৩৭ লাখ ৬০ হাজার ৩৩ টাকা। তিনি ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত। তাঁর নামে ৩২টি মামলা রয়েছে।

হলফনামা ঘেঁটে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী মাহমুদুল হক ভূঁইয়ার ভূঁইয়া ট্রেডার্স নামে একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। বাড়িভাড়া থেকে তাঁর বার্ষিক আয় ৩ লাখ ৭৬ হাজার ৫০০ টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে তাঁর কাছে নগদ ৬ লাখ ৬৯ হাজার ৬৫৭ টাকা এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ২৫ হাজার ৩২৩ টাকা জমা রয়েছে।

স্থাবর সম্পদের মধ্যে আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী মাহমুদুল হকের নামে ২০ লাখ ২৪ হাজার মূল্যের প্রায় ৩ শতক ও কাউতলী এলাকায় ৪৩ লাখ ৬৪ হাজার ৫২০ টাকা মূল্যের সোয়া ৩ দশমিক ১৪ শতক কৃষিজমি রয়েছে।

ওয়ার্কার্স পার্টির নজরুল ইসলাম পেশায় কিছু উল্লেখ করেননি। দোকান ও অন্যান্য ভাড়া থেকে তাঁর বার্ষিক আয় ৩ লাখ ১০ হাজার টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে তাঁর কাছে নগদ ৫০ হাজার টাকা রয়েছে।

ইসলামী আন্দোলনের আবদুল মালেক পেশায় মাদ্রাসাশিক্ষক। তাঁর বার্ষিক আয় ৩ লাখ ১২ হাজার টাকা। এর মধ্যে শিক্ষকতা থেকে তিনি ৫২ হাজার টাকা এবং অন্যান্য উৎস থেকে ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা পান। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে তাঁর কাছে নগদ ৬ লাখ ৭৮ হাজার টাকা রয়েছে।

স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল কারীম পেশায় ব্যবসায়ী। তাঁর বার্ষিক আয় ৩ লাখ ১০ হাজার টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে তাঁর কাছে নগদ ১ লাখ টাকা ও ১০ ভরি স্বর্ণালংকার রয়েছে। ব্যবসায় তাঁর পুঁজি ১০ লাখ ৬০ হাজার টাকা। তাঁর কোনো স্থাবর সম্পদ নেই।