মুক্তির পর এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে বাড়তি নিরাপত্তা, ঘেরা হয়েছে কাঁটাতার দিয়ে

সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবল থেকে উদ্ধার পাওয়া বাংলাদেশি জাহাজ এম ভি আবদুল্লাহর চারপাশে এভাবে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হয়েছে
ছবি: সংগৃহীত

সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ এখনো উচ্চ ঝুঁকিপ্রবণ এলাকা অতিক্রম করেনি। তাই আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী জাহাজটিতে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাহাজটির মালিক কেএসআরএম গ্রুপের কর্মকর্তারা।

গত শনিবার দিবাগত রাতে জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার পর সোমালিয়া উপকূল ছাড়ে এমভি আবদুল্লাহ। জাহাজটি এডেন উপসাগর হয়ে ওমান উপকূলের সামনে দিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হামরিয়া বন্দরে পৌঁছাবে। ওই বন্দরে পৌঁছাতে জাহাজটির আরও এক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে বলে কেএসআরএম গ্রুপ জানিয়েছে।

আরও পড়ুন

কেএসআরএম গ্রুপের হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, নিরাপত্তা জোরদারের অংশ হিসেবে জাহাজটির চারপাশ কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। দস্যুরা হানা দিলে যাতে উচ্চ চাপে পানি ছিটানো যায়, সে জন্য জাহাজের ডেকে ফায়ার হোস প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আবার কোনো বিপদ হলে নাবিকেরা যাতে জাহাজে সুরক্ষিত স্থানে লুকাতে পারেন, সে জন্য ‘সিটাডেল’ (জাহাজের গোপন কুঠুরি) প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

এমভি আবদুল্লাহ জাহাজকে পাহারা দিচ্ছে দুটি যুদ্ধজাহাজ
ছবি: ইউরোপীয় ইউনিয়ন নৌবাহিনীর  অপারেশন আটলান্টার এক্স পোস্ট থেকে

জাহাজে থাকা এসব নিরাপত্তাব্যবস্থা সক্রিয় করার পাশাপাশি সমুদ্রযাত্রায় ঝুঁকি মূল্যায়নকারী যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠানের সেবা নিয়েছে কেএসআরএম গ্রুপ। এমভি আবদুল্লাহ আরব আমিরাতের আল হামরিয়া বন্দরে পৌঁছানো পর্যন্ত জাহাজটির চারপাশে কোনো ঝুঁকি থাকলে তা ক্যাপ্টেনকে জানিয়ে দেবে প্রতিষ্ঠানটি।

গত ১২ মার্চ সোমালিয়ার দস্যুরা ২৩ নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটি জিম্মি করে। দেশটির উপকূল থেকে ৬০০ নটিক্যাল মাইল দূরে ভারত মহাসাগর থেকে জাহাজটি ছিনতাই করা হয়। এর ৩২ দিন পর, অর্থাৎ ৩৩ দিনের জিম্মিদশা থেকে গত শনিবার দিবাগত রাতে জাহাজটি মুক্ত হয়।

আরও পড়ুন

জাহাজে নিরাপত্তা জোরদারের বিষয়ে কেএসআরএম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, জাহাজটি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা অতিক্রম করেনি। তাই ইউরোপীয় ইউনিয়নের যুদ্ধজাহাজ পাহারায় রয়েছে। আর ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় থাকার সময় নিয়ম অনুযায়ী জাহাজে বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা নিতে হয়। তাই মুক্তি পাওয়ার পরও জাহাজটিতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

জিম্মি হওয়ার আগে কেন জাহাজটিতে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়নি, এমন প্রশ্নের জবাবে মেহেরুল করিম বলেন, দস্যুরা জাহাজটি জিম্মি করেছিল সোমালিয়া উপকূল থেকে ৬০০ নটিক্যাল মাইল দূর থেকে। সেটি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ছিল না। সে জন্য তখন বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, সোমালিয়ার উপকূল ও এডেন উপসাগর এখন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার কাছাকাছি দিয়ে চলাচলের সময় আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া দরকার। কারণ, নিরাপত্তাব্যবস্থা বাবদ লাখ ডলার খরচ হলেও সম্পদ ও নাবিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা যায়।

আরও পড়ুন