সেই পাকু দাশকে চাকরিতে পুনর্বহাল করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন
জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) মায়ের চেয়ে বেশি বয়স থাকায় চাকরি হারানো পাকু দাশকে চাকরিতে পুনর্বহাল করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। আজ মঙ্গলবার রাত আটটায় তাঁর হাতে চাকরিতে পুনর্বহালের পত্র তুলে দেন সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।
সিটি করপোরেশনের উপপ্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা মোরশেদুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। চাকরিতে পুনর্বহালপত্র তুলে দেওয়ার সময় মেয়র কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন তিনি। এর আগে গত সোমবার পাকু দাশের জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করে নির্বাচন কমিশন। ওই দিন দুপুরে তাঁর হাতে সংশোধিত জাতীয় পরিচয়পত্র তুলে দেন জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের কর্মকর্তারা।
মোরশেদুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, এনআইডিতে পাকু দাশের বয়স বেশি দেখানো হয়েছিল। ফলে নির্ধারিত বয়সসীমা ৫৯ বছর পার হয়ে যাওয়ায় তাঁর চাকরি চলে যায়। তবে নির্বাচন কমিশন তাঁর এনআইডি সংশোধন করে দিয়েছে। এরপর চাকরিতে পুনর্বহালের আবেদন করলে মেয়র তা অনুমোদন দিয়েছেন।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মী পাকু দাশের জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) বয়স তাঁর মায়ের চেয়ে ১৩ বছর বেশি উল্লেখ করা হয়েছিল। এনআইডিতে জন্মতারিখ লেখা হয়েছিল ১৯৫৫ সালের ২০ এপ্রিল। অথচ তাঁর মা রাধা রানী দাশের জন্ম ১৯৬৮ সালের ৩ আগস্ট। অর্থাৎ মায়ের চেয়ে ১৩ বছর ৩ মাস আগে ছেলের জন্ম।
সংশোধিত জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী পাকু দাশের জন্মতারিখ ১৯৮৫ সালের ২০ এপ্রিল। অর্থাৎ এখন তাঁর বয়স ৩৭ বছর ৮ মাস। তাঁর আরও অন্তত ২১ বছর চাকরি করার বয়স রয়েছে।
এনআইডি অনুযায়ী, ৫৯ বছরের বেশি হওয়ায় অস্থায়ী কর্মীদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। গত ৩০ অক্টোবর ১২৮ জন অস্থায়ী কর্মী চাকরি হারান। তাঁদের একজন পাকু দাশ।
চাকরি ফেরত পেতে দুই মাস ধরে সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা ও শ্রমিকনেতাদের দুয়ারে দুয়ারে ধরনা দিয়েছেন পাকু দাশ ও তাঁর মা রাধা রানী দাশ। মা, স্ত্রী ও এক সন্তানের সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি। সিটি করপোরেশনের চাকরির সুবাদে নগরের মাদারবাড়িতে সেবক কলোনিতে থাকতেন। চাকরি চলে যাওয়ায় কলোনিতে থাকা নিয়েও সংশয় সৃষ্টি হয়েছিল।
অবশেষে চাকরি ফেরত পেয়ে খুবই আনন্দিত পাকু দাশ। তিনি বলেন, পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের কারণে অল্প সময়ের মধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করে দেয় নির্বাচন কমিশন। এরপর সিটি করপোরেশনও চাকরি ফিরিয়ে দিয়েছে। এতে মা, স্ত্রীসহ পুরো পরিবার খুশি। কলোনির মানুষও খুশি। এখন চাকরির বেতনের টাকায় পরিবার নিয়ে ভালোভাবে চলতে পারবেন।