সাংবাদিক আনিস আলমগীর ৫ দিনের রিমান্ডে
ডেকে নিয়ে প্রায় ২৪ ঘণ্টা গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে রাখার পর সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে এবার পাঁচ দিন হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের সুযোগ পেল পুলিশ।
রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলায় আজ সোমবার গ্রেপ্তার দেখানোর পর বিকেলে তাঁকে সাত দিনের জন্য রিমান্ডে চেয়ে আবেদন করা হয় ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। শুনানির পর অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জশীতা ইসলাম পাঁচ দিন রিমান্ডের আদেশ দেন।
ঢাকা মহানগরের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুক জানান, রিমান্ডের পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষ শুনানি করে। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে বিচারক পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আনিস আলমগীরকে গতকাল রোববার সন্ধ্যায় ডেকে নেওয়া হয়েছিল গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে। রাতভর তাঁকে সেখানেই রাখা হয়েছিল। তবে রিমান্ড আবেদনে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, সময়স্বল্পতার কারণে আনিস আলমগীরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা সম্ভব হয়নি।
মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্যও আনিস আলমগীরকে রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন তদন্ত কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান। রিমান্ড আবেদনে তিনি বলেন, আসামির সহযোগী অন্যান্য পলাতক আসামিদের নাম–ঠিকানা সংগ্রহ করে তাঁকে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করলে পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে। ঘটনায় আরও কেউ জড়িত আছেন কি না, তা–ও জানা যাবে।
আনিস আলমগীরের বিরুদ্ধ মামলাটি করেছেন ‘জুলাই রেভল্যুশনারি অ্যালায়েন্স’ নামের একটি সংগঠনের কেন্দ্রীয় সংগঠক আরিয়ান আহমেদ। গতকাল রাত ২টার দিকে উত্তরা পশ্চিম থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে এই মামলার আবেদন করেন তিনি। আনিস আলমগীরের পাশাপাশি অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনসহ আরও কয়েকজনকে আসামি করেন তিনি।
তার আগেই গতকাল সন্ধ্যায় আনিস আলমগীরকে ডিবি কার্যালয়ে ডেকে নেওয়া হয়। তিনি তখন ধানমন্ডি এলাকার একটি ব্যয়ামাগারে ছিলেন। তবে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কি না, সে বিষয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা মুখ খুলছিলেন না।
আজ দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মো. শফিকুল ইসলাম জানান যে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় আনিস আলমগীরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে রিমান্ডের আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা গতকাল সন্ধ্যায়ই আনিস আলমগীরকে গ্রেপ্তারের কথা উল্লেখ করেছেন।
রিমান্ড আবেদনে আরও বলা হয়, আনিস আলমগীর এক মাস আগে সময় টিভির এক টক শোতে মন্তব্য করেছিলেন, ‘আওয়ামী লীগের অপ্রকাশিত নেতারা সরকারকে কাঁপুনি ধরিয়ে দিয়েছে।’
আনিস আলমগীর সম্প্রতি টিভি টক শোতে তাঁর বক্তব্যের জন্য আলোচনায় ছিলেন। আজকের কাগজের এক সময়ের এই বিশেষ প্রতিনিধি পরে মানবকণ্ঠের সম্পাদক হয়েছিলেন, টেলিভিশনেও কাজ করেছেন। এখন তিনি কোনো সংবাদমাধ্যমে যুক্ত নেই, শিক্ষকতা করছেন।
আনিস আলমগীরের বিরুদ্ধে মামলার অন্য আসামি মেহের আফরোজ শাওন, ইমতুরা তিশ ইমতিয়াজসহ অন্যদের ফেসবুক পোস্ট নিয়ে অভিযোগ তোলা হয়েছে। রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, উল্লিখিত আসামিরাসহ অন্যান্য আসামি পরস্পর যোগসাজশে তাঁদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেল হতে বিভিন্ন প্রকার উসকানিমূলক পোস্ট ও বক্তব্য দিয়ে দেশের জননিরাপত্তা বিপন্ন করা, অন্য ব্যক্তিকে হত্যার প্রচেষ্টা গ্রহণ করা এবং অন্য ব্যক্তিকে হত্যা-গুরুতর জখম করার ষড়যন্ত্র ও সহায়তা করার জন্য প্ররোচিত করেন।