মাগুরার শিশুটির অবস্থা ‘অত্যন্ত সংকটাপন্ন’
মাগুরার সেই শিশুটির অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে শিশুটির আরও দুবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছে। শিশুটির ব্রেন কাজ করছে না। রক্তচাপ ও অক্সিজেনের স্তর অনেক কম।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আজ গণমাধ্যমকে শিশুটির অবস্থা জানিয়েছে।
শিশুটির চিকিৎসায় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) চিকিৎসকদের নিয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, শিশুটির অবস্থা খুবই সংকটাপন্ন। সে সংকটাপন্নের সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে। আজ সকাল থেকে দুবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। সিপিআর দেওয়ার পর হৃৎস্পন্দন ফিরে আসতে সময় নিয়েছে আধা ঘণ্টা। অর্থাৎ সে গতকালের চেয়েও খারাপ অবস্থায় আছে। মস্তিষ্ক প্রতিক্রিয়াহীন অবস্থায় আছে। তার গ্লাসগো কোমা স্কেল (জিসিএস) (মস্তিষ্কের আঘাতের কারণে কোনো ব্যক্তির চেতনার মাত্রা পরিমাপ করা হয়) ৩–এই আছে। যেখানে স্বাভাবিক মাত্রা ১৫। জিসিএস ৩ অবস্থাকে মস্তিষ্কের প্রতিক্রিয়াহীন অবস্থা বলে বিবেচনা করা হয়।
শিশুটির শরীরে লবণের পরিমাণের ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়েছে। লবণের চাপ কমাতে ডায়ালাইসিস করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সিএমএইচের চিকিৎসকেরা। গতকাল বুধবার সকাল ও রাতে মিলে শিশুটির চারবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছিল। গতকালও ডায়ালাইসিস করা হয়।
ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) শিশু বিভাগের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (পিআইসিইউ) শিশুটিকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে।
বোনের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া আট বছরের এই শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেছেন শিশুটির মা। শিশুটির ভগ্নিপতি, বোনের শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার বোনের শাশুড়ি। পরে শিশুটির মা হাসপাতালে যান। ওই দিন দুপুরেই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার রাতেই পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এরপর গত শুক্রবার রাতে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। সংকটাপন্ন শিশুটিকে গত শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিআইসিইউ থেকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
সিএমএইচের প্রধান সার্জনকে প্রধান করে আটজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়ে বোর্ড গঠন করা হয়েছে। বোর্ডে রয়েছেন সার্জিক্যাল বিশেষজ্ঞ, স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগ, প্লাস্টিক সার্জন, শিশু নিউরোলজি বিভাগ, অ্যানেসথেসিয়া, শিশু হৃদ্রোগ বিভাগ, শিশু বিভাগের সার্জন, ইউরোলজি বিভাগ, থোরাসিক সার্জন বিভাগের চিকিৎসকেরা।