৬ মাত্রার ভূমিকম্প হলে সবকিছু ভেঙে পড়ার আশঙ্কা

অধ্যাপক মেহেদী আহমেদ আনসারীছবি: প্রথম আলো

এক ভূমিকম্প কাঁপিয়ে দিল গোটা বাংলাদেশকে; আজ শুক্রবার সকালের এই ভূমিকম্পের ঝাঁকুনিকে এযাবৎকালের সর্বোচ্চ বলা হচ্ছে। এমন ভূমিকম্পের শঙ্কা বিশেষজ্ঞরা আগেই প্রকাশ করে আসছিলেন। এই ভূমিকম্প বাংলাদেশের জন্য সজাগ হওয়ার বার্তা বলে মনে করছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পূরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মেহেদি আহমেদ আনসারী।

আজ সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে এই ভূমিকম্প আঘাত হানে। বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৭। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) মাত্রা দেখাচ্ছে ৫ দশমিক ৫। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল নরসিংদীর মাধবদীতে, ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে।

আরও পড়ুন

মেহেদি আহমেদ আনসারী প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশে এমন ভূমিকম্প হওয়ারই কথা। রিখটার স্কেলে ৬ মাত্রার ভূমিকম্প হলে সবকিছু ভেঙে পড়ার আশঙ্কা আছে।

বাংলাদেশ বা এই ভূখণ্ডে বড় ভূমিকম্পের মধ্যে আছে ১৭৬২ সালের ভয়াবহ ভূমিকম্প। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৮ দশমিক ৫। এটি ‘গ্রেট আরাকান আর্থকোয়েক’ নামে পরিচিত। এর ফলে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, ফেনী, এমনকি কুমিল্লা পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এরপর ১৮৯৭ সালে আসামে সংঘটিত ভূমিকম্প ছিল ৮ দশমিক ৭ মাত্রার।

৭ মাত্রার ভূমিকম্পগুলো ফেরত আসার সময় হয়ে গেছে। তাই আজকের এই ভূমিকম্পের পর সবাইকে সচেতন ও সাবধান হতে হবে।
অধ্যাপক মেহেদি আহমেদ আনসারী, ভূমিকম্প–বিশেষজ্ঞ

১৯১৮ সালে সিলেটের বালিসিরা উপত্যকায় ৭ দশমিক ৬ মাত্রায় এবং ১৯৩০ সালে আসামের ধুবড়িতে ৭ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্প হয়।

মেহেদি আহমেদ আনসারী বলেন, বড় ভূমিকম্পগুলো ১৫০ বছর পরপর ফিরে আসার আশঙ্কা থাকে। এদিক থেকে ৭ মাত্রার ভূমিকম্পগুলো ফেরত আসার সময় হয়ে গেছে। তাই আজকের এই ভূমিকম্পের পর সবাইকে সচেতন ও সাবধান হতে হবে।

আরও পড়ুন

ঢাকা শহরে মোট ২১ লাখ ভবন আছে। এর মধ্যে ছয় লাখ ভবন ছয়তলার ওপরে। বাকিগুলো ছয়তলার নিচে। বড় ভূমিকম্প হলে এই ছয় লাখ ভবন সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

ভূমিকম্পে পুরান ঢাকার কিছু ভবনের রেলিং, পলেস্তারা খসে পড়ে। আজ সকালে কসাইটুলীতে
ছবি: প্রথম আলো

আজকের এই ভূমিকম্প বাংলাদেশের জন্য একটি সতর্কবার্তা বলে মন্তব্য করে অধ্যাপক আনসারী বলেন, রানা প্লাজা ধসের পর দেশের গার্মেন্টস ভবনগুলো পরীক্ষা করে ভালো বা খারাপ নির্ণয় করা হচ্ছে। রানা প্লাজা ধস হওয়ার পর এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একইভাবে এখন রাজধানীর ভবনগুলো পরীক্ষা করতে হবে। কারণ, অনেকেই বিল্ডিং কোড মেনে ভবন নির্মাণ করে না।

ঢাকা শহরে মোট ২১ লাখ ভবন আছে। এর মধ্যে ৬ লাখ ভবন ছয়তলার ওপরে। বাকিগুলো ছয়তলার নিচে। বড় ভূমিকম্প হলে এই ছয় লাখ ভবন সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকবে।  

বিশ্বব্যাংক ভূমিকম্প মোকাবিলাসহ নানা ক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য রাজউককে ১৮ কোটি মার্কিন ডলার সহায়তা দিয়েছে জানিয়ে মেহেদি আহমেদ আনসারী জানান, কিন্তু রাজউকের সেই সামর্থ্য নেই।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন