হাটখোলার ‘সেই’ অনিয়মের ভবনে আপাতত করোনা হাসপাতাল হচ্ছে

এফবিসিসিআই আইকন ২৫, হাটখোলা ভবন
ছবি। হাসান রাজা

পুরান ঢাকার হাটখোলায় নিয়মকানুন না মেনে নির্মাণ করা বহুতল ভবন করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য দিতে চায় ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। ইতিমধ্যে ভবনটিকে হাসপাতালে রূপান্তর করার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন সংগঠনটির নেতারা।

বিষয়টি নিশ্চিত করে এফবিসিসিআইয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বিএসএমএমইউয়ের সঙ্গে যৌথভাবে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া জন্য হাটখোলা ভবনে হাসপাতাল করা হবে। দুই-এক দিনের মধ্যে সেই ঘোষণা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

আরও পড়ুন

অবশ্য বিএসএমএমইউয়ের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জুলফিকার আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘হাটখোলা ভবনটিকে কোভিড হাসপাতালে রূপান্তরের জন্য এফবিসিসিআই আমাদের সহযোগিতা চেয়েছে। হাসপাতাল পরিচালনার জন্য চিকিৎসক ও নার্স কোথা থেকে নেওয়া হবে এবং কারা সেই হাসপাতাল পরিচালনা করবে, সে বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে।’

প্রচলিত আইনকে পাশ কাটিয়ে নকশার অনুমোদন না নিয়েই হাটখোলা সড়কে অভিসার সিনেমা হলের উল্টো পাশে কাচঘেরা সুরম্য ‘এফবিসিসিআই ভবন’ গড়ে উঠেছে। ভবনের নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার প্রায় তিন বছর পর রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কাছ থেকে নকশার অনুমোদন নিয়েছে সংগঠনটি। আজ রোববার ভবনটির উদ্বোধন করা হয়।

ভবনের নতুন নামকরণ করা হয়েছে ‘এফবিসিসিআই আইকন ২৫, হাটখোলা ভবন’।
ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে আজ ভবনটির উদ্বোধন করেন জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে অংশ নেন সংগঠনের সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, সিনিয়র সহসভাপতি মুনতাকিম আশরাফ প্রমুখ।

আরও পড়ুন

এফবিসিসিআইয়ের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে নূর-ই-আলম চৌধুরী বলেন, ‘নবনির্মিত এফবিসিসিআই ভবনটি করোনা চিকিৎসার কাজে ব্যবহার করতে দেওয়ার জন্য এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিমকে ধন্যবাদ জানাই।’

সরকারি অর্থে ভবনটির জায়গা কেনেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আনিসুল হক। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয় আরেক সাবেক এ কে আজাদের মেয়াদে। আর নির্মাণকাজ শুরু করেন পরবর্তী সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ। সে সময়কার একজন সহসভাপতি জানান, ভবনের জায়গাটি রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার (কি পয়েন্ট ইনস্টলেশন বা কেপিআই) কাছাকাছি হওয়ায় বহুতল ভবন নির্মাণে অনাপত্তি পেতে দেরি হচ্ছিল। সময়মতো কাজ না করলে সরকারি টাকাও ফেরত চলে যেত। তাই রাজউক থেকে প্রাথমিক অনুমোদন নিয়ে ভবনের নির্মাণকাজ শুরু করা হয়। তবে রাজউকের একাধিক কর্মকর্তা জানান, প্রাথমিক অনুমোদন নিয়ে ভবন নির্মাণের কোনো সুযোগ নেই।

আরও পড়ুন

ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, হাটখোলা ভবনটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২০০৮ সালে করা অর্থায়নের আওতায় ৬৪টি জেলার চেম্বারের নিজস্ব জমি ও ভবনের অন্তর্ভুক্ত। সাবেক সভাপতিরা প্রাতিষ্ঠানিক ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ধাপে ধাপে এই ভবনের কাজ এগিয়ে নিয়ে গেছেন। বর্তমান পর্ষদ ও চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরীর সহযোগিতায় আজকের এই ভবন উদ্বোধন করা সম্ভব হচ্ছে।