নজরদারিতে ১৬ অনলাইন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান

আরাজ ট্রেডিং–এ অভিযান চালায় ভ্যাট গোয়েন্দার একটি দল
ছবি। সংগৃহীত

রাজধানীর গুলশানের এক আবাসিক ফ্ল্যাটে দীর্ঘদিন ধরে অনলাইনে পণ্য বিক্রি করে আসছিল আরাজ ট্রেডিং নামক একটি প্রতিষ্ঠান। একটি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল রোববার প্রতিষ্ঠানটিতে অভিযান চালায় ভ্যাট গোয়েন্দার একটি দল।

দলটি প্রমাণ পায় যে ভ্যাট নিবন্ধন ছাড়াই অনলাইনে বিদেশি পণ্য বিক্রি করছিল আরাজ। আরাজের ঠিকানা বাড়ি ১২, রোড ৩০, গুলশান ১, ঢাকা। স্বত্বাধিকারী সাজ্জাদ আলী শরীফ। আজ সোমবার ভ্যাট গোয়েন্দার দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়েছে।

অভিযানকালে গোয়েন্দারা আরাজের প্রাঙ্গণ থেকে স্থানীয় ক্রেতাদের কাছে পণ্য বিক্রির দলিলাদি জব্দ করেন। সংস্থার উপপরিচালক নাজমুন নাহার কায়সার এতে নেতৃত্ব দেন। প্রাথমিক অনুসন্ধানে দলটি দেখতে পায় যে আরাজ দুটি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে পণ্য বিক্রির লেনদেন করে।

আরাজ নামক একটির ব্যাংক হিসাব চাওয়া হয়েছে। ব্যাগেজ ও পার্সেলে পাকিস্তানের তৈরি পণ্য এনে বাসায় বসে অনলাইনে বিক্রি করা হচ্ছিল। ভ্যাট আইন অনুযায়ী নিবন্ধন না নিয়ে এবং কোনো মাসিক রিটার্ন জমা না দিয়ে এ ধরনের ব্যবসা পরিচালনা করা অবৈধ।

ইতিমধ্যে ভ্যাট গোয়েন্দা ওই দুটি ব্যাংকের কাছে আরাজের ব্যাংক হিসাব তলব করেছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়। এই হিসাব আমলে নিয়ে পরবর্তী সময়ে ভ্যাট ফাঁকির পরিমাণ নির্ধারণ করা হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভ্যাট গোয়েন্দাদের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে, ভ্যাট নিবন্ধন ছাড়াই আরাজ অনলাইনে বিদেশি পণ্যের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। স্থানীয় গুলশান ভ্যাট সার্কেলে এই অনলাইন ব্যবসায়ের ভ্যাট জমার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

ভ্যাট গোয়েন্দাদের কাছে অভিযোগ ছিল, শুধু আরাজ নয়, আরও অনেক কোম্পানি ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে অনলাইনে পণ্য বিক্রি করায় শোরুমের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এতে ব্যবসায়ের প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশও ক্ষুণ্ন হচ্ছে। গুলশান ভ্যাট সার্কেলে গত কয়েক মাসে প্রতিষ্ঠানটির কোনো রিটার্ন জমা হয়নি।

আরও পড়ুন

বিজ্ঞপ্তিতে ভ্যাট গোয়েন্দা বলেছে, প্রতিষ্ঠানটি তিন বছর ধরে অনলাইনে অলংকার, নারীদের পোশাক ও অন্যান্য পণ্যের ব্যবসা পরিচালনা করছে বলে তাদের কাছে অভিযোগ ছিল। অভিজাত এলাকার বাসায় বাসায় দামি বিদেশি পণ্য বিক্রি করাই প্রতিষ্ঠানটির কাজ। বলা হয়, প্রতিষ্ঠানটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিয়েও ব্যবসা পরিচালনা করে থাকে। বিভিন্ন প্রচারমাধ্যমে এই অনলাইন ব্যবসার লক্ষণীয় উপস্থিতিও রয়েছে।

অনুসন্ধান করে দলটি দেখেছে, আরাজের অধিকাংশ পণ্যই পাকিস্তানের তৈরি। ব্যাগেজ ও পার্সেলে এসব পণ্য এনে বাসায় বসে তারা অনলাইনে বিক্রি করছিল। ভ্যাট আইন অনুযায়ী নিবন্ধন না নিয়ে এবং কোনো মাসিক রিটার্ন জমা না দিয়ে এই ব্যবসা পরিচালনা করা সম্পূর্ণভাবে অবৈধ। বিদেশ থেকে আনা এসব পণ্যের বিপরীতে যথাযথ শুল্ক–কর দেওয়া হয়েছে কি না, তা এখন খতিয়ে দেখা হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গোয়েন্দা দলটি দেখেছে, আরাজের মতো অনেক প্রতিষ্ঠান অনলাইনে ব্যবসা করছে, যারা ভ্যাটের আওতায় নেই। এ পর্যন্ত ১৬টি প্রতিষ্ঠানের সন্ধান পেয়েছে তারা। এসব প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে আরও তথ্য সংগ্রহ করে ভ্যাট আইন অনুসারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।