মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেবে সাবেক সভাপতিরা

তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর বর্তমান পর্ষদের মেয়াদ তিন থেকে ছয় মাস বাড়ানোর বিষয়ে প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রস্তাবটির বিষয়ে সংগঠনের সাবেক সভাপতিদের মতামত নেওয়া হবে। তাঁরা অনুমোদন দিলে আনুষ্ঠানিকভাবে মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে, যদিও মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়ে পর্ষদের একাংশ আপত্তি করেছে।

গতকাল বিকেলে ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে অনুষ্ঠিত বিজিএমইএর জরুরি পর্ষদ সভায় মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়ে সাবেক সভাপতিদের মতামত নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের প্রথম সহসভাপতি মোহাম্মদ আবদুস সালাম। আগামী এপ্রিলে বিজিএমইএর বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের দুই বছরের মেয়াদ শেষ হবে।

জানা যায়, সভার শুরুতে বিজিএমইএর সভাপতি রুবানা হক অসমাপ্ত কাজ শেষ করার জন্য বর্তমান কমিটির মেয়াদ তিন থেকে ছয় মাস বৃদ্ধির প্রস্তাব করেন। বর্ধিত মেয়াদে সভাপতি ও সহসভাপতি পরিবর্তন হতে পারে এমন কথাও বলেন। পর্ষদের সদস্যরা প্রস্তাবের বিষয়ে ঐকমত্য হলে সেটি সংগঠনের সাবেক সভাপতিদের কাছে মতামতের জন্য পাঠানোর প্রস্তাব দেন সভাপতি। বিষয়টি নিয়ে পর্ষদ সদস্যদের আলোচনার আহ্বান জানিয়ে তিনি সভা ত্যাগ করেন।

আরও পড়ুন

পরে ছয় মাস মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে বক্তব্য দেন পর্ষদের সদস্যরা। লম্বা আলোচনা শেষে সিদ্ধান্ত হয়, প্রস্তাবটি সাবেক সভাপতিদের কাছে পাঠানো হবে। তাঁরা সম্মিলিতভাবে যে সিদ্ধান্ত দেবেন, সে অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

জরুরি পর্ষদ সভা সম্পর্কে জানতে চাইলে রুবানা হক কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। এ ছাড়া দুজন সহসভাপতি এবং দুজন পরিচালককে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করলে তাঁরাও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করতে চাননি।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন সহসভাপতি বলেন, বিজিএমইএর নির্বাচনে স্বচ্ছতা আনার জন্য সদস্য প্রতিষ্ঠানের তালিকা হালনাগাদের কাজ চলছে। সেটি হওয়ার পর সদস্যদের বায়োমেট্রিক কার্ড দেওয়া হবে। এ ছাড়া ইউটিলাইজেশন ডিক্লারেশন (ইউডি) বা আমদানিপ্রাপ্যতার অটোমেশনের কাজ চলমান রয়েছে। বিজিএমইএর দুর্নাম ঘোচাতে গুরুত্বপূর্ণ কাজ দুটি সম্পন্ন করতে তিন থেকে ছয় মাস লাগবে। এ জন্যই বর্তমান কমিটির মেয়াদ বাড়ানো প্রয়োজন। কিন্তু সেটি একতরফাভাবে নয়, সবার মতামতের ভিত্তিতে করার চেষ্টা চলছে।

তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর বর্তমান পর্ষদের মেয়াদ তিন থেকে ছয় মাস বাড়ানোর বিষয়ে প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

২০১৩ সালের পর বিজিএমইএতে আর প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হয়নি। পাঁচ বছর আগে সংগঠনটির নির্বাচনকেন্দ্রিক জোট ফোরাম ও সম্মিলিত পরিষদ সমঝোতার মাধ্যমে পরিচালনা পর্ষদ চূড়ান্ত করতে চুক্তি করেছিল। দুই মেয়াদের জন্য সেই সমঝোতার প্রথম দফায় অর্থাৎ ২০১৫ সালের ২২ সেপ্টেম্বর সম্মিলিত পরিষদের সিদ্দিকুর রহমানের নেতৃত্বে কমিটি হয়। দুই বছরের জন্য গঠিত সেই কমিটি অবশ্য নানা অজুহাত দেখিয়ে ৪৩ মাস দায়িত্ব পালন করে। আগের সমঝোতা অনুযায়ী গত বছর প্রার্থী বাছাই করে দুই জোট। তবে স্বাধীনতা পরিষদ ঢাকায় খণ্ডিত প্যানেলে প্রার্থী দেওয়ায় নিয়ম রক্ষার ভোট হয়।

গত অক্টোবরে সম্মিলিত পরিষদের নেতারা নির্বাচনের প্রস্তুতি সভা করে প্যানেল লিডার বা সভাপতি প্রার্থী হিসেবে জায়ান্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক হাসানকে চূড়ান্ত করেন। অনানুষ্ঠানিকভাবে প্রচার-প্রচারণাও চালাচ্ছেন তিনি। অন্যদিকে নেতৃত্ব নির্বাচনে সমঝোতা বা বর্তমান কমিটির মেয়াদ বাড়ানোর চেষ্টায় আছে ফোরাম। বর্তমানে বিজিএমইএর সভাপতি, সহসভাপতি ও পরিচালকদের অধিকাংশই এ জোটের নেতা।