ডলারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির বড় সুবিধা পেয়েছে দেশের শীর্ষস্থানীয় জুতা প্রস্তুত ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার। প্রতিষ্ঠানটি ডলারের বেশি দামের কারণে প্রায় ৬৭ কোটি টাকা বেশি আয় করেছে।
এই আয় হয়েছে মূলত কোম্পানিটির রপ্তানি বেড়ে যাওয়ায়। ডলারের বাড়তি দামের কারণে বাড়তি আয়ের পাশাপাশি অর্থনীতির খারাপ অবস্থার মধ্যেও গত পাঁচ বছরের মধ্যে জুতা বিক্রি করে অ্যাপেক্স সর্বোচ্চ আয় করেছে গত জুলাই-ডিসেম্বরে।
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথমার্ধের (গত জুলাই-ডিসেম্বর) আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, তা থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। পাশাপাশি কোম্পানিটির গত কয়েক বছরের অর্ধবার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১৭ সালের পর গত বছরের শেষ ৬ মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) কোম্পানিটির আয় আবারও ৮০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
২০১৭ সালের জুলাই-ডিসেম্বরে কোম্পানিটি আয় করেছিল ৮১০ কোটি টাকা। আর ২০২২ সালের একই সময়ে এ আয় দাঁড়িয়েছে ৮০১ কোটি টাকায়, যা ২০২১ সালের তুলনায় ২৩৫ কোটি টাকা বেশি। ২০২১ সালের শেষ ৬ মাসে কোম্পানিটি ৫৬৬ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি করেছিল।
গত বছরের চেয়ে পণ্য বিক্রির আয় বেড়ে যাওয়ায় কোম্পানিটির মুনাফাও বেড়েছে। ২০২২ সালে জুলাই-ডিসেম্বর শেষে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি মুনাফা করেছে ৫ টাকা ২২ পয়সা। ২০২১ সালের একই সময়ে এ মুনাফা ছিল ৩ টাকা ৬৮ পয়সা।
দেশের শীর্ষস্থানীয় জুতা কোম্পানিটির আয় ও মুনাফা বেড়ে যাওয়ার পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে রপ্তানি। চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে কোম্পানিটির রপ্তানি আয় স্থানীয় বাজারে জুতা বিক্রির আয়কে ছাড়িয়ে গেছে। উল্লেখিত ৬ মাসে কোম্পানিটির ৮০১ কোটি টাকার আয়ের মধ্যে রপ্তানি বাজার থেকে এসেছে ৪১৪ কোটি ৪২ লাখ টাকা।
আর স্থানীয় বাজারে জুতা বিক্রি করে কোম্পানিটি আয় করেছে ৩৮৬ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের একই সময়ে কোম্পানিটি রপ্তানি থেকে প্রায় ২৩৭ কোটি টাকা ও স্থানীয় বাজার থেকে ৩৩০ কোটি টাকা আয় করেছিল।
অর্থনীতির খারাপ অবস্থার মধ্যে এমন ভালো ব্যবসার কারণ জানতে চাইলে অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা বা সিএফও দিলীপ কাজুড়ী প্রথম আলোকে বলেন, ‘চলতি অর্থবছরে আমরা প্রথমবারের মতো জাপানি প্রতিষ্ঠান ইউনিক্লোর জুতার ব্র্যান্ড জিইউর কাছে জুতা রপ্তানি শুরু করেছি।
তাতে রপ্তানি বেড়েছে। অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে আমরা যে রপ্তানি করেছি, তার ২০ শতাংশের বেশি করেছি জাপানি কোম্পানিটির কাছে। জাপানি কোম্পানিটির কাছে নতুন করে রপ্তানি শুরু হওয়ায় রপ্তানি আয় বেড়েছে। এতে কোম্পানির বিক্রির পরিমাণও বেড়েছে। এ ছাড়া ডলারের মূল্যবৃদ্ধিতেও আমাদের কিছু বাড়তি আয় যোগ হয়েছে।’