প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি শিগগির, ৮ সদস্যর কমিটি গঠন

শিক্ষকতাপ্রতীকী ছবি

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি শিগগির প্রকাশ করা হতে পারে। এ জন্য আট সদস্যর ‘কেন্দ্রীয় প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ কমিটি’ গঠন করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

গতকাল রোববার (৩১ আগস্ট) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এ–সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে বলা আছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা, ২০২৫ অনুযায়ী নিয়োগ কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে আর কমিটির সদস্যসচিব প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালককে (পলিসি ও অপারেশন)।

এর বাইরে কমিটিতে রয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিদ্যালয়), প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (রাজস্ব), উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর মহাপরিচালক, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (বিদ্যালয়), জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় (উপসচিবের নিম্নে নয়) ও সরকারি কর্ম কমিশনের প্রতিনিধি।

আরও পড়ুন

এর আগে গত ২৮ আগস্ট রাতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা, ২০২৫-এর প্রজ্ঞাপন জারি করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। নতুন বিধিমালা অনুযায়ী, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরাসরি নিয়োগযোগ্য ৯৩ শতাংশ পদ মেধাভিত্তিক হবে। বাকি ৭ শতাংশ পদ কোটা হিসেবে সংরক্ষিত থাকবে মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর প্রার্থীদের জন্য ১ শতাংশ এবং শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের প্রার্থীদের জন্য ১ শতাংশ। তবে কোটার আওতায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে শূন্য পদগুলো মেধার ভিত্তিতেই পূরণ করা হবে।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, নিয়োগ উপজেলা ও ক্ষেত্রবিশেষে থানাভিত্তিকভাবে হবে। সরাসরি নিয়োগ ও পদোন্নতির মাধ্যমেও শিক্ষক নিয়োগের সুযোগ থাকবে। বিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রিধারীদের জন্য ২০ শতাংশ পদ এবং অন্যান্য বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রিধারীদের জন্য ৮০ শতাংশ পদ সংরক্ষিত থাকবে।

আরও পড়ুন

পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রার্থীর যোগ্যতার অংশে বলা হয়, সহকারী শিক্ষক বা সহকারী শিক্ষক (সংগীত) বা সহকারী শিক্ষক (শারীরিক শিক্ষা) পদে মৌলিক প্রশিক্ষণ ও চাকরি স্থায়ীকরণসহ কমপক্ষে ১২ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা প্রয়োজন হবে। অন্যদিকে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রার্থীর যোগ্যতায় বলা হয়, কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্যূন দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএসহ স্নাতক বা স্নাতক (সম্মান) বা সমমানের ডিগ্রি থাকতে হবে। শিক্ষাজীবনে কোনো স্তরে তৃতীয় বিভাগ অথবা সমমানের জিপিএ অথবা তৃতীয় শ্রেণি অথবা সমমানের সিজিপিএ গ্রহণযোগ্য হবে না। এ ছাড়া শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালার তফসিল-২–এ বর্ণিত নিয়মে তাঁকে অবশ্যই লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।

এর আগে ২০১৯ সালের বিধিমালা অনুযায়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগে নারীদের জন্য ৬০ শতাংশ কোটা, পুরুষদের জন্য ২০ শতাংশ এবং পোষ্য কোটায় ২০ শতাংশ পদ সংরক্ষিত ছিল। নতুন বিধিমালা কার্যকর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই বিধিমালা রহিত বলে গণ্য হবে।

আরও পড়ুন

শিক্ষক নিয়োগে কত নম্বরে

বিধিমালার তফসিল-২-এর তথ্যমতে, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। লিখিত পরীক্ষা হবে চারটি বিষয়ে। সেগুলো হলো বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও দৈনন্দিন বিজ্ঞান, সাধারণ জ্ঞান (বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি)। চারটি বিষয়ে মোট ৯০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা হবে।

বাংলা ও ইংরেজিতে ২৫ নম্বর করে মোট ৫০ নম্বর এবং গণিত ও দৈনন্দিন বিজ্ঞান এবং সাধারণ জ্ঞানে (বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি) ২০ নম্বর করে মোট ৪০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হবে। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে নির্বাচিত প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা হবে ১০ নম্বরের।

৯০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় পাস নম্বর (মোট নম্বরের ৫০ শতাংশ) হবে ৪৫ নম্বর। আর মৌখিক পরীক্ষায় পাস নম্বর (১০-এর মধ্যে ৫০ শতাংশ হিসাবে) হবে ৫ নম্বর। লিখিত পরীক্ষায় ৯০ মিনিট সময় দেওয়া হবে। মৌখিক পরীক্ষার জন্য সময় নির্ধারিত নয়।

নতুন বিধিমালায় সহকারী শিক্ষক (সংগীত) ও সহকারী শিক্ষক (শারীরিক শিক্ষা) পদও সৃষ্টি করা হয়েছে। আর সরাসরি নিয়োগে প্রার্থীর সর্বোচ্চ বয়স ৩২ বছর করা হয়েছে, আগে যা ছিল ৩০ বছর।

এদিকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক শিক্ষক পদে প্রায় ১৭ হাজার প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া হতে পারে।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন