যুক্তরাষ্ট্রে ৪৬% জেন–জি কর্মী চাকরি ছাড়তে চান, কারণ কিন্তু বেতন নয়
যুক্তরাষ্ট্রের ইয়াংস্টাউন স্টেট ইউনিভার্সিটির একটি জরিপে দেখা গেছে, প্রায় ৪৬ শতাংশ জেন–জি কর্মচারী বর্তমান চাকরি ছাড়ার পরিকল্পনা করছেন। জরিপটি ১ হাজার পূর্ণকালীন পেশাজীবীর মধ্যে পরিচালিত হয়েছে। এই ফলাফল সাধারণ ধারণার বিপরীতে, কারণ ধরে নেওয়া হয় যে তরুণেরা কেবল নতুন কিছু খুঁজে পাওয়ার বা আরও ভালো বেতনের জন্য চাকরি ছাড়েন। বরং গবেষণাটি দেখাচ্ছে যে মূল সমস্যা হলো ক্যারিয়ার বৃদ্ধির সুযোগের অভাব এবং স্বীকৃত প্রশিক্ষণ ও সার্টিফিকেশন পাওয়ার অসুবিধা।
কেন জেন–জি চাকরি ছাড়ার পরিকল্পনা করছেন?
গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের প্রশ্ন করা হলে দেখা গেছে, বেতন প্রধান কারণ নয়। বরং অনেকেই মনে করেন তাঁরা ক্যারিয়ারে একধরনের ‘স্থবির’ অবস্থায় আছেন। জরিপ অনুযায়ী:
—৩২ শতাংশ জেন জেড কর্মী, ৩৪ শতাংশ মিলেনিয়ালস এবং ২৮ শতাংশ জেনারেশন এক্স তাদের ক্যারিয়ারে স্থবিরতার অনুভূতি প্রকাশ করেছেন।
—৭১ শতাংশ কর্মী মনে করেন, সংস্থাগুলো ফার্টার এডুকেশন বা ট্রেনিংয়ের জন্য পর্যাপ্ত সমর্থন দিচ্ছে না।
—৪২ শতাংশ পেশাজীবী আগে চাকরি পরিবর্তন করেছেন সীমিত ক্যারিয়ার বৃদ্ধির কারণে।
—ভবিষ্যতে ৩৪ শতাংশ প্রত্যাশা করছেন যে তাঁরা এই কারণে চাকরি ছাড়বেন, যার মধ্যে অর্ধেক এক বছরের মধ্যে পদক্ষেপ নেবেন।
কাজ করছে না বর্তমান উন্নয়ন কৌশল
অনেক প্রতিষ্ঠান মনে করে, তারা তরুণ কর্মীদের জন্য বিনিয়োগ করছে— অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্ম, ডিজিটাল কোর্স, এবং বিশাল কোর্স লাইব্রেরি। কিন্তু গবেষণা দেখাচ্ছে, শুধু অ্যাক্সেসই যথেষ্ট নয়। ৭৬ শতাংশ জেন জেড কর্মী মনে করেন খরচ একটি বড় বাধা। অনেক প্রফেশনাল সার্টিফিকেশন প্রায় দুই হাজার মার্কিন ডলার খরচ হয়। কর্মীরা যদি এটি নিজে বহন করতে না পারে, তবে শেখা কার্যকর হয় না।
দৃশ্যমান ক্যারিয়ার অগ্রগতি গুরুত্বপূর্ণ
গবেষণা দেখিয়েছে, ৪৩ শতাংশ কর্মী বর্তমান অবস্থায় বর্ণনা করে যে তাঁরা বার্নআউট অনুভব করছেন। এই চাপ ভবিষ্যতের পরিকল্পনাকে কঠিন করে তোলে। জেন–জি কর্মীরা চাকরির নিরাপত্তা ও এআই ব্যবহার বাড়ার মতো উদ্বেগের মধ্যেও কাজ করছেন।
যেসব পদক্ষেপ হতে পারে কার্যকর
১. ঊর্ধ্বমুখী গতি অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা নির্ধারণ।
২. সুযোগগুলো প্রকাশ করা যেন সবার কাছে পৌঁছে।
৩. অনবোর্ডিং ও হ্যান্ডবুকে প্রগতি ব্লুপ্রিন্ট অন্তর্ভুক্ত করা।
৪. কাজ ও মাইলস্টোনগুলো প্রমোশন সঙ্গে কিভাবে সংযুক্ত তা বোঝানো।
এই স্পষ্টতা অনিশ্চয়তাকে কমায় এবং কর্মীদের স্থিরতার অনুভূতি দেয়।
গবেষণার মূল শিক্ষা হলো, কর্মী ধরে রাখার কৌশল মনোরঞ্জন নয়, কাঠামোতে নিহিত। কর্মীরা চান তাঁদের দক্ষতায় বিনিয়োগের ফলাফল স্বীকৃত প্রগতি হিসেবে দেখা যাক। প্রতিষ্ঠান যদি এটি নিশ্চিত করে, তবে ছাড়ার প্রবণতা কমে যাবে; না হলে, কর্মী পরিবর্তনের চক্র অব্যাহত থাকবে। তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া