কারওয়ান বাজারে এক ডাবের দাম ১০০ টাকা

প্রতিটি ডাব বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। কারওয়ান বাজার, ঢাকা। ছবি: প্রথম আলো
প্রতিটি ডাব বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। কারওয়ান বাজার, ঢাকা। ছবি: প্রথম আলো

ঢাকার কারওয়ান বাজারে ডাবের দাম হঠাৎ বেড়ে গেছে। একেকটি ডাব বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। বিক্রেতারা জানালেন, বেশ কয়েক দিন ধরে এমন দামে ডাব বিক্রি করছেন তাঁরা।

কারওয়ান বাজারে ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ডাব বিক্রি করছেন সইদুল ইসলাম। আজ সোমবার বললেন, তাঁর ব্যবসায়ী জীবনে কখনো একটা ডাব ১০০ টাকায় বিক্রি করতে পারেননি। তবে গত কয়েক দিন ধরে হর-হামেশাই এমন দামে ডাব বিক্রি করছেন তিনি। ডাবের চাহিদা হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ায় এমন চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে।

ধারণা করা হচ্ছে, রাজধানীতে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে ডাবের চাহিদা বাড়ার একটি সম্পর্ক আছে। ডেঙ্গু রোগীকে তরল খাবার বেশি করে গ্রহণ করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে ডাবের পানি ভালো তরল জাতীয় খাবার। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সর্বশেষ তথ্য বলছে, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে নতুন ১ হাজার ৬১৫ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, এর মধ্যে ঢাকা শহরে ৭৫৭ জন। এই হিসাব গতকাল রোববার সকাল আটটা থেকে আজ সোমবার বিকেল পর্যন্ত। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণকক্ষের তথ্য অনুযায়ী, গত জানুয়ারি থেকে আজ সোমবার পর্যন্ত হাসপাতালগুলোতে সর্বমোট ডেঙ্গু আক্রান্ত ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৫৪ হাজার ৭৯৭ জন। তার মধ্যে চিকিৎসা শেষে ছাড়পত্র নিয়ে চলে গেছেন ৪৮ হাজার ২৪ জন। আর এখন পর্যন্ত এ রোগে মারা গেছে ৪০ জন।

সইদুলের কথার পুনরাবৃত্তি করলেন আরেক ডাব বিক্রেতা মো. সেলিম। ১৫ বছর ধরে এই বাজারে ডাব বিক্রি করছেন বলে দাবি সেলিমের। তিনি বলেন, বাজারে নিয়মিত ৪০ থেকে ৬০ টাকা দরে ডাব বিক্রি করেন তাঁরা। ডাবের মান যদি খুব ভালো হয়, তাহলে কালে ভদ্রে তা সর্বোচ্চ ৮০ টাকা দরে বিক্রি করতে পারেন। তবে এবার নিয়মিত ৮০ টাকার ওপর সাধারণ মানের ডাবও বিক্রি করতে পারছেন।

অসুস্থতার কারণে মো. ইসমাইল নামের এক ব্যক্তি গত দেড় বছর ধরে কারওয়ান বাজারের ডাব বিক্রেতাদের থেকে ডাব কেনেন। কারওয়ান বাজারে তাঁরও বিকাশের ব্যবসা আছে। ডাব বিক্রেতাদের সঙ্গে তাঁর এক ধরনের সখ্যতাও গড়ে উঠেছে। তবে এবারের এই মৌসুমে ডাব কেনায় তিনিও খুব একটা ছাড় পাচ্ছেন না। ইসমাইল বলেন, এমন চড়া দামে ডাব খাওয়া তাঁর জন্য কঠিন হয়ে যাচ্ছে।

ডাবের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে সইদুল ইসলাম বলেন, এখন ডাবের সিজন না। ডাবের পরিমাণও কম। তাই হয়তো দামটা বেশি। তবে তিনি কিছুক্ষণ পরে নিজের মতামত পরিবর্তন করেন তিনি। বলেন, এই সময় ডাব কম এলেও অন্য বছর বিক্রিও হয় কম। বৃষ্টির দিনে বিক্রি আরও কমে যায়। তবে এ বছর এই সময় বিক্রি খুব বেশি।

মো. সেলিম বলেন, দাম যতই হোক তাদের সংগ্রহে থাকা সব ডাব বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। এমন সাধারণত হয় না। গরমের দিনগুলোতেই তাদের ব্যবসা ভালো হয়। তবে এখন ব্যবসা যেমন ভালো হচ্ছে, এতটা কখনো হয়নি।