এসএসসি ২০২২ - ভূগোল ও পরিবেশ | অধ্যায় ১০ : সৃজনশীল প্রশ্ন

অধ্যায় ১০

সৃজনশীল প্রশ্ন

মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের জলবায়ুর প্রধান বৈশিষ্ট্য। ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে এর দিক পরিবর্তন হয়। এ বায়ুর কারণে গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে আমাদের দেশে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় আর শীতকাল শুষ্ক থাকে।

প্রশ্ন

ক. মৌসুমি বায়ু কাকে বলে?

খ. শীতকালে বৃষ্টিপাত হয় না কেন?

গ. শীত ও গ্রীষ্মকালে উদ্দীপকের বায়ুপ্রবাহ ব্যাখ্যা করো।

ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত বায়ুর প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো চি‎হ্নিত করো।

উত্তর

ক. ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে যে বায়ুর দিক পরিবর্তিত হয়, তাকে মৌসুমি বায়ু বলে।

খ. শীতকালে এশিয়ার অভ্যন্তর ভাগ প্রচণ্ড ঠান্ডা থাকে এবং উচ্চচাপের সৃষ্টি হয়। স্থলভাগের এ উচ্চচাপ কেন্দ্র থেকে শীতল বায়ু উত্তর-পূর্ব দিক থেকে মহাসাগরের নিম্নচাপ কেন্দ্রের দিকে ধাবিত হয়। স্থলভাগের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় এ বায়ুতে জলীয় বাষ্প থাকে না। এ কারণে শীতকাল বৃষ্টিহীন থাকে।

গ. উদ্দীপকে মৌসুমি বায়ুপ্রবাহের কথা বলা হয়েছে। শীত ও গ্রীষ্মকালের মৌসুমি বায়ুপ্রবাহ নিচে ব্যাখ্যা করা হলো:

শীতকালীন মৌসুমি বায়ুপ্রবাহ: এ সময় মকরক্রান্তি অঞ্চলে সূর্য খাড়াভাবে পতিত হওয়ায় সে অঞ্চলে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়। কিন্তু এ সময় উত্তর গোলার্ধে সৌরতাপ কম থাকায় শীতল হয়ে মধ্য অক্ষাংশে উচ্চচাপের সৃষ্টি হয়। ফলে এ উচ্চচাপ এলাকার বায়ু অপেক্ষাকৃত উষ্ণ সাগরের দিকে প্রবাহিত হয়। এ বায়ু উত্তর-পূর্ব দিক থেকে প্রবাহিত হয়।

গ্রীষ্মকালীন মৌসুমি বায়ুপ্রবাহ: গ্রীষ্মকালে সূর্য কর্কটক্রান্তির ওপর লম্বভাবে কিরণ দেওয়ায় সেখানে নিম্নচাপ কেন্দ্রের সৃষ্টি হয়। এ নিম্নচাপ কেন্দ্রে বায়ুচাপ অত্যন্ত কম থাকায় দক্ষিণ গোলার্ধের দক্ষিণ-পূর্ব আয়ন বায়ু ওই নিম্নচাপ কেন্দ্রের দিকে প্রবাহিত হয়। এ বায়ু নিরক্ষরেখা অতিক্রম করে ফেরেলের সূত্রানুযায়ী ডান দিকে বেঁকে দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে প্রবাহিত হয়।

ঘ. উদ্দীপকের মৌসুমি বায়ুর প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো চি‎হ্নিত করা হলো:

১. মৌসুমি বায়ু একপ্রকার সাময়িক বায়ু। বছরের কোনো নির্দিষ্ট সময়ে এটি বিশেষ দিক থেকে প্রবাহিত হয়।

২. ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এই বায়ুর দিক পরিবর্তিত হয়।

৩. গ্রীষ্মকালে প্রবাহিত মৌসুমি বায়ুতে প্রচুর জলীয় বাষ্প থাকে বিধায় এ সময় বায়ু প্রবাহের পার্শ্ববর্তী স্থানে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। যেমন মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বাংলাদেশে বর্ষাকালে বৃষ্টিপাত হয়।

৪. শীতকালে প্রবাহিত মৌসুমি বায়ুতে প্রচুর জলীয় বাষ্প না থাকায় এ সময় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা কম।

৫. মৌসুমি জলবায়ুর কারণে বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ অত্যধিক হয়ে থাকে। এর প্রভাবে শীত ও গ্রীষ্মে তাপের তারতম্য পরিলক্ষিত হয় না।

৬. গ্রীষ্মকালীন মৌসুমি বায়ুপ্রবাহের ফলে প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ায় কৃষিকাজে উন্নতি সাধিত হয়েছে। ফলে মৌসুমি বায়ু প্রভাবিত অঞ্চল ঘনবসতি এলাকা হিসেবে গড়ে উঠেছে।

৭. শীত ও গ্রীষ্মকালে বায়ুপ্রবাহ বিপরীতমুখী হয়।

৮. শীতকালীন মৌসুমি বায়ু জলীয় বাষ্প বহন করে না, কিন্তু গ্রীষ্মকালীন মৌসুমি বায়ু প্রচুর জলীয় বাষ্প বহন করে।

মো. শাকিরুল ইসলাম, প্রভাষক, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা

এই অধ্যায়ের প্রকাশিত পরবর্তী সৃজনশীল প্রশ্ন

৮ম অধ্যায়ের পূর্বের প্রকাশিত সৃজনশীল প্রশ্ন