এসএসসি ২০২২ - ভূগোল ও পরিবেশ | অধ্যায় ১০ : সৃজনশীল প্রশ্ন

অধ্যায় ১০

ঋতু———সময়——————তাপমাত্রার গড়

A———ফাল্গুন-জ্যৈষ্ঠ——————২৮০ সে.

B———জ্যৈষ্ঠ-কার্তিক——————২৭০ সে.

C———কার্তিক–ফাল্গুন—————১৭.৭০ সে.

প্রশ্ন

ক. ‘ধরলা’ কোন নদীর উপনদী?

খ. বাংলাদেশের নদীগুলোর নাব্যতা হ্রাসের প্রভাব ব্যাখ্যা করো।

গ. ‘B’ ঋতুতে বাংলাদেশে অধিক তাপমাত্রা অনুভূত হয় না কেন? ব্যাখ্যা করো।

ঘ. ‘A’ এবং ‘C’ ঋতুর তুলনামূলক বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করো।

উত্তর

ক. ‘ধরলা’ ব্র‏হ্মপুত্র নদীর উপনদী।

. বাংলাদেশে নদীগুলোর নাব্যতা হ্রাসের প্রভাব সামগ্রিক পরিবেশকে বিপর্যস্ত করছে।

বাংলাদেশে নদী ও জলাশয়গুলো ভরাটের কারণে তথা নাব্যতা হারানোর কারণে বর্ষাকালে পানির প্রবাহধারা বাধাগ্রস্ত হয় এবং দুই কূল উপচে বন্যার প্রাদুর্ভাব দেখা যাচ্ছে। আর শুষ্ক মৌসুমে ওগুলোতে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় নৌচলাচল, সেচব্যবস্থা ও মাছ চাষ ব্যাহত হচ্ছে। প্রাকৃতিক পানির জলাধারের সংরক্ষণ ক্ষমতা ক্রমান্বয়ে সংকুচিত হওয়ায় শহরগুলোতে পানির সরবরাহ কমে যাচ্ছে ও পরিবেশের বিপর্যয় ঘটছে। এভাবে এ দেশে নদীগুলোর নাব্যতা হ্রাস সামগ্রিক পরিবেশ ও জীবনের জন্য বিপর্যয়কর পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে।

. ‘B’ ঋতুতে, অর্থাৎ বর্ষা ঋতুতে মেঘলা আকাশ এবং প্রচুর বৃষ্টিপাতের জন্য বাংলাদেশে অধিক তাপমাত্রা অনুভূত হয় না।

উদ্দীপকের ছকে উল্লিখিত হয়েছে ‘B’ ঋতু জ্যৈষ্ঠ–কার্তিক মাসে বিস্তৃত এবং এ সময় গড় তাপমাত্রা ২৭° সেলসিয়াস। বাংলাদেশে জুন থেকে অক্টোবর মাস (জ্যৈষ্ঠ–কার্তিক) পর্যন্ত বর্ষাকাল। অর্থাৎ গ্রীষ্ম ও শীতের মাঝামাঝি বৃষ্টিবহুল সময়কে বর্ষাকাল বা বর্ষা ঋতু বলে। জুন মাসের প্রথম দিকে মৌসুমি বায়ুর তাপমাত্রার সঙ্গে সঙ্গে বর্ষাকাল শুরু হয়ে যায়।

বর্ষা ঋতুর গড় তাপমাত্রা ২৭° সেলসিয়াস। এ সত্ত্বেও বর্ষাকালে এ দেশে তেমন তাপমাত্রা অনুভূত হয় না। বর্ষাকালে সূর্য বাংলাদেশে প্রায় লম্বভাবে কিরণ দেয়। ফলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। কিন্তু আকাশে মেঘ থাকে এবং প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়, ফলে এ সময় অধিক তাপমাত্রা অনুভূত হয় না।

ঘ. বাংলাদেশে ‘A’ ও ‘C’ ঋতু হচ্ছে যথাক্রমে গ্রীষ্মকাল ও শীতকাল।

তাপমাত্রা বৃষ্টিপাত ও বায়ুপ্রবাহগত বৈশিষ্ট্যে এ দুই ঋতু সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রকৃতির। বাংলাদেশের সবচেয়ে উষ্ণ ঋতু হলো গ্রীষ্মকাল। এ সময়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৪° সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২০° সেলসিয়াস। গড় হিসাবে এপ্রিল মাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৮° সেলসিয়াস পরিলক্ষিত হয়। এপ্রিল উষ্ণতম মাস, এ সময় সমুদ্র উপকূল থেকে দেশের অভ্যন্তরভাগে তাপমাত্রা ক্রমেই বৃদ্ধি পেতে থাকে।

অপর দিকে আমাদের দেশে শীতকালে তাপমাত্রা সবচেয়ে কম থাকে। এ সময় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৯° সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১° সেলসিয়াস। জানুয়ারি শীতলতম মাস এবং এ মাসের গড় তাপমাত্রা ১৭.৭° সেলসিয়াস। শীতকালে দেশের উপকূল ভাগ থেকে উত্তর দিকে তাপমাত্রা কম থাকে। গ্রীষ্মকালে উত্তর গোলার্ধে সূর্যের উত্তরায়ণের জন্য বায়ুচাপের পরিবর্তন ঘটে। এ সময় বাংলাদেশে দক্ষিণ দিক থেকে আসা উষ্ণ ও আর্দ্র বায়ুপ্রবাহ অধিক উত্তাপের প্রভাবে ও ওপরে উঠে উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে আসা শীতল ও শুষ্ক বায়ুপ্রবাহের সঙ্গে সংঘর্ষে বজ্রসহ ঝড়বৃষ্টি হয়।

অন্যদিকে উত্তর-পূর্ব দিক থেকে আসা শীতল মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার কারণে শীতকালে বাতাসের আর্দ্রতা কম থাকে। বাংলাদেশে বার্ষিক বৃষ্টিপাতের শতকরা প্রায় ২০ ভাগ গ্রীষ্মকালে হয়। অপর দিকে শীতকালে বাংলাদেশে বৃষ্টিপাত প্রায় হয় না বললেই চলে। ওপরের আলোচনা থেকে তাই বোঝা যাচ্ছে, বাংলাদেশে গ্রীষ্ম ও শীত সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী।

মো. শাকিরুল ইসলাম, প্রভাষক, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা

এই অধ্যায়ের প্রকাশিত পূর্বের সৃজনশীল প্রশ্ন | পরবর্তী সৃজনশীল প্রশ্ন