নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতক ভর্তি পরীক্ষা, ফলাফলের ভিত্তিতে ২৩ জন পেলেন শতভাগ বৃত্তি
বেসরকারি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (এনএসইউ) স্প্রিং সেমিস্টার-২০২৪-এর ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির চারটি স্কুলের ১৭টি বিভাগে স্নাতক (সম্মান) ভর্তি পরীক্ষায় অসাধারণ ফলাফলের জন্য ২৩ জনকে মেধাভিত্তিক শতভাগ বৃত্তি প্রদান করা হয়। নবীন শিক্ষার্থীদের জন্য এই সেমিস্টারভিত্তিক ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামের মূল লক্ষ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতি ও একাডেমিক পদ্ধতির সঙ্গে শিক্ষার্থীদের পরিচিত করা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য ও বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট জুনাইদ কামাল আহমাদ, বিশেষ অতিথি এনএসইউ বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য ইয়াসমিন কামাল এবং ওরিয়েন্টেশন বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ও কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য আতিকুল ইসলাম।
পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত ও জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস, ঐতিহ্য, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
নতুন ব্যাচের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে স্বাগত বক্তব্যে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আহমেদ তাজমীন বলেন, ‘তোমরা জীবনের নতুন অভিযাত্রার সূচনা করবে, যা তোমাদের জীবনের গতিপথ ঠিক করে দেবে। তোমাদের এই অভিযাত্রায় সঙ্গী হতে পেরে নর্থ সাউথ গর্বিত।’
উদ্বোধনী বক্তব্যে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ আবদুর রব খান বলেন, ‘আগামী চার বছরের জন্য তোমাদের এনএসইউ পরিবারের গর্বিত সদস্য হিসেবে বরণ করে নিলাম। এখানে তোমরা একাডেমিক সাফল্যের পাশাপাশি যে অভিজ্ঞতা লাভ করবে, তা তোমাদের ভবিষ্যৎ জীবনের পাথেয় হয়ে থাকবে।’
স্কুল অব হিউম্যানিটিজ অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেসের ডিন এস কে তৌফিক এম হক, স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ফিজিক্যাল সায়েন্সেসের ডিন জাভেদ বারী, স্কুল অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিকসের ডিন হেলাল আহমেদ, স্কুল অব হেলথ অ্যান্ড লাইফ সায়েন্সেসের ডিন হাসান মাহমুদ রেজা শিক্ষার্থীদের কাছে নিজ নিজ স্কুলের পরিচয় তুলে ধরেন।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ড. জুনায়েদ কামাল আহমাদ বলেন, ‘তোমরা এই দেশের ভবিষ্যৎ। শুধু একটি ডিগ্রির জন্য নয়, তোমরা এখানে এসেছো একটি সমাজে। যেখান থেকে তোমরা দেশকে ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাবে। আজ থেকে ২০ বছর পর তোমরা দেশকে কী দিয়ে যাবে, কোথায় নিয়ে যাবে, সেটা তোমাদের অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে দেখো, নিজেকে প্রশ্ন করো। তাহলেই তোমরা নিজেদেরকে, মা–বাবাকে, দেশকে গর্বিত করতে পারবে।’
ইয়াসমিন কামাল বলেন, ‘আজ আমাদের নতুন শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বিশেষ দিন। নতুন সেমিস্টার শুরুর সঙ্গে সঙ্গে তারা যে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ও বৈচিত্র্য নিয়ে আসে, তা আমরা গ্রহণ করতে চাই। আমরা কেবল নতুন শিক্ষার্থীদের নয় বরং ভবিষ্যতের নেতা এবং উদ্ভাবকদেরও স্বাগত জানাচ্ছি।’
কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক বলেন, ‘তোমরা বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসেছো। ভালো ফলাফলের পাশাপাশি এখানে তোমরা চারপাশের যা কিছু আনন্দের, যা কিছু উপভোগের—সবকিছুই করবে। তোমরা যদি আলোকিত হও, বাংলাদেশ আলোকিত হবে। তোমরা যদি মানুষের মতো মানুষ হও, তবেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।’
অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম তাঁর সমাপনী বক্তব্যে বলেন, ‘এনএসইউ একটি অরাজনৈতিক, বর্ণবাদবিরোধী এবং সম্পূর্ণ ধর্মনিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান। আমরা বৈচিত্র্য ও সহনশীলতায় দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।
আমাদের এখানে সব জাতিগত ও ধর্মের শিক্ষার্থী রয়েছে এবং আমরা তাদের সঙ্গে কখনোই পক্ষপাতমূলক আচরণ করি না। আমাদের দেশে সেরা লার্নিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম রয়েছে, যা হাভার্ড, এমআইটি ও অক্সফোর্ডের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবহার করা হয়।’
অনুষ্ঠানের শেষে ছিল জনপ্রিয় ব্যান্ডদল ‘জলের গানে’র পরিবেশনা।