চুয়েটে ভর্তি পরীক্ষায় উপস্থিতি ৮৩ শতাংশ, ফল প্রকাশের তারিখ নির্ধারণ
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) স্নাতক প্রথম বর্ষে (২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ) ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল শনিবার চুয়েট ক্যাম্পাসের পাশাপাশি চট্টগ্রাম শহরের আরও চারটি উপকেন্দ্রে (চট্টগ্রাম কলেজ, হাজী মোহাম্মদ মহসিন কলেজ, কাজেম আলী স্কুল ও কলেজ এবং চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ) একযোগে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত লিখিত পরীক্ষা ও দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিট থেকে বেলা ১টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত মুক্তহস্ত অঙ্কন অনুষ্ঠিত হয়। এবারের ভর্তি পরীক্ষায় পুরকৌশল, তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল, যন্ত্রকৌশল এবং স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদগুলোর মোট ১২টি বিভাগে সংরক্ষিত ১১টিসহ মোট ৯৩১টি আসনের বিপরীতে মোট ২০ হাজার ১২২ জন পরীক্ষার্থীকে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে পরীক্ষায় অংশ নেন ১৬ হাজার ৬২১ জন শিক্ষার্থী। অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৮৩ শতাংশ।
এর আগে ‘ক’ গ্রুপে (ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগগুলো, নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ) ও ‘খ’ গ্রুপ (ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগগুলো, নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ এবং স্থাপত্য বিভাগ) মিলে মোট ২২ হাজার ৬৫১ জন শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য আবেদন করেন। তাঁদের মধ্য থেকে উচ্চমাধ্যমিক বা সমমানের পরীক্ষায় গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও ইংরেজি বিষয়ের মোট প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে প্রথম ২০ হাজার ১২২ জন শিক্ষার্থীকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়।
ভর্তি পরীক্ষা শেষে বেশ উচ্ছ্বসিত দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী সামিহা মেহরাজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রশ্ন খুব একটি কঠিন হয়নি। প্রশ্নের মান মধ্যম পর্যায়ের ছিল। আমরা সাবলীলভাবেই পরীক্ষা সম্পন্ন করতে পেরেছি। চুয়েটে পরীক্ষা দিতে এসে সবচেয়ে ভালো লেগেছে এখানকার ভাই-আপুদের আতিথেয়তা দেখে। তাঁরা আমাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছেন।’
চট্টগ্রামের হাজী মোহাম্মদ মহসিন কলেজের শিক্ষার্থী মিনহাজুল আকবর জানান, ‘আমরা কোনো সমস্যা ছাড়াই পরীক্ষা দিতে পেরেছি। প্রশ্ন সহজ ছিল, খুব একটা কঠিন হয়নি। তবে ইংরেজি প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে কিছুটা হিমশিম খেতে হয়েছে। তারপরও পরীক্ষা দিয়ে আমি সন্তুষ্ট।’
ভর্তি কমিটির সভাপতি চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক সুদীপ কুমার পাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘কোনো ধরনের অপ্রীতিকর অবস্থা ছাড়া আমরা সুন্দরভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন করতে পেরেছি। এ বছর একক ভর্তি পরীক্ষা হওয়ায় পরীক্ষার্থীদের সংখ্যা আগের তুলনায় দ্বিগুণ ছিল। সে ক্ষেত্রে কিছুটা বাড়তি চাপ থাকলেও স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও আমাদের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী সবার সহযোগিতায় সাবলিলভাবেই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।’ তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের হারও সন্তোষজনক। চুয়েট কেন্দ্রে প্রায় ৮৭ শতাংশ শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছেন। সব কটি কেন্দ্র মিলিয়ে উপস্থিতির হার ছিল প্রায় ৮৩ শতাংশ।
উল্লেখ্য, ভর্তি পরীক্ষা ২০২৪ সালের পাঠ্যসূচি অনুযায়ী গণিত, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন ও ইংরেজি বিষয়ের ওপর লিখিত পদ্ধতিতে ‘ক’ গ্রুপের জন্য ৫০০ নম্বরের এবং ‘খ’ গ্রুপের জন্য ৫০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষার পাশাপাশি অতিরিক্ত মুক্তহস্ত অঙ্কনের ২০০ নম্বরসহ মোট ৭০০ নম্বরের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষার ফলাফল বা মেধাতালিকা প্রকাশ করা হবে ২২ ফেব্রুয়ারি, বিকেল পাঁচটায়।