জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষার ফরম পূরণের সূচি প্রকাশ, ফি ৪০০
জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা ২০২৫-এর অনলাইনে ফরম পূরণের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা অনলাইনে ফরম পূরণ করতে পারবে ১৩ থেকে ১৯ অক্টোবরের মধ্য। পরীক্ষার ফি প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর জন্য ৪০০ টাকা। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অনলাইনে শিক্ষার্থীদের সম্ভাব্য তালিকা প্রদর্শন শিক্ষার্থীদের তথ্যসংবলিত সম্ভাব্য তালিকা ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে ১২ অক্টোবর দেওয়া হবে। সম্ভাব্য তালিকা থেকে ১৩ থেকে ১৯ অক্টোবরের মধ্যে অনলাইনে প্রক্রিয়ায় ফরম পূরণ (ইএফএফ) সম্পন্ন করতে হবে। ফি জমার সর্বশেষ সময় ১৯ অক্টোবর।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, বাংলা বা ইংরেজি ভার্সনের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইংরেজি ভার্সনে পরীক্ষায় অংশগ্রহণে ইচ্ছুক শিক্ষার্থী থাকলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানকে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা উল্লেখ করে এক কপি তালিকা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তরের হাতে ১৫ অক্টোবরের মধ্যে অবশ্যই জমা দিতে হবে। না হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ইংরেজি ভার্সনে পরীক্ষা গ্রহণ সম্ভব হবে না। এতে শিক্ষার্থীদের কোনো অসুবিধা হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানই দায়ী থাকবেন।
এদিকে এর আগে এ পরীক্ষার নীতিমালা, প্রশ্নের কাঠামো, বিষয়সহ বিভিন্ন নির্দেশনা এবং জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ সময়সূচি প্রকাশ করা হয়েছে। আগামী ২১ ডিসেম্বর জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা শুরু হয়ে চলবে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
কবে কোন বিষয়ের বৃত্তি পরীক্ষা
প্রকাশিত সূচি অনুযায়ী, প্রথম দিন ২১ ডিসেম্বর বাংলা পরীক্ষা হবে। ২২ ডিসেম্বর ইংরেজি, ২৩ ডিসেম্বর গণিত ও শেষ দিন ২৪ ডিসেম্বর বিজ্ঞান এবং বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
পরীক্ষা হবে তিন ঘণ্টায়। প্রতিদিন সকাল ১০টায় পরীক্ষা শুরু হবে, চলবে বেলা একটা পর্যন্ত। পরীক্ষায় প্রতিটি বিষয়ে ১০০ নম্বরের প্রশ্নপত্র থাকবে। তবে বিশেষ প্রয়োজনে কর্তৃপক্ষ এ সময়সূচি পরিবর্তন করতে পারবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
পরীক্ষার্থীদের জন্য মাউশির বিশেষ নির্দেশনা
সূচিতে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে-
১. পরীক্ষা শুরুর ৩০ (ত্রিশ) মিনিট আগে অবশ্যই পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষার কক্ষে আসন গ্রহণ করতে হবে।
২. প্রশ্নপত্রে উল্লিখিত সময় অনুযায়ী পরীক্ষা গ্রহণ করতে হবে। বিজ্ঞান বিষয়ের জন্য ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট + বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ের জন্য ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট, সর্বমোট ৩ ঘণ্টার পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
৩. পরীক্ষার্থীরা প্রবেশপত্র নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের প্রধানের কাছ থেকে পরীক্ষার কমপক্ষে সাত দিন আগে সংগ্রহ করবে।
৪. পরীক্ষার্থীরা নিজ নিজ উত্তরপত্রের ওএমআর (OMR) ফরমে তার পরীক্ষার রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, বিষয় কোড ইত্যাদি যথাযথভাবে লিখে বৃত্ত ভরাট করবে। কোনো অবস্থাতেই উত্তরপত্র ভাঁজ করা যাবে না।
৫. পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষায় বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত সাধারণ সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারবে।
৬. কেন্দ্রসচিব ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি বা পরীক্ষার্থী পরীক্ষাকেন্দ্রে মুঠোফোনসহ অন্য কোনো ইলেকট্রনিকস ডিভাইস সঙ্গে আনতে পারবে না।
অংশ নেবে ২৫ শতাংশ শিক্ষার্থী, পরীক্ষা ৪ বিষয়ে
এর আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষার নীতিমালা-২০২৫ প্রকাশ করেছে। মাধ্যমিক বা নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত অষ্টম শ্রেণির সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ শিক্ষার্থী এ বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান এবং বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় প্রতিটি বিষয়ে ১০০ নম্বর করে মোট ৪০০ নম্বরের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। শিক্ষার্থীদের দুই ধরনের বৃত্তি দেওয়া হবে। ট্যালেন্টপুল বৃত্তি ও সাধারণ বৃত্তি। পরীক্ষার্থীপ্রতি বোর্ড ফি ৪০০ টাকা এবং পরীক্ষার্থীপ্রতি কেন্দ্র ফি ২০০ টাকা।
নীতিমালা অনুযায়ী, মাধ্যমিক বা নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত অষ্টম শ্রেণির সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ শিক্ষার্থী (সপ্তম শ্রেণির সব প্রান্তিকের সামষ্টিক মূল্যায়নের ফলের ভিত্তিতে) জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটি সময়ে সময়ে এ সংখ্যা পুনর্নির্ধারণ করতে পারবে।
নম্বরপদ্ধতি
বাংলা ১০০, ইংরেজি ১০০, গণিত ১০০, বিজ্ঞান ৫০ এবং বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় ৫০, মোট ৪০০ নম্বরের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিটি পরীক্ষার সময় তিন ঘণ্টা। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন পরীক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ৩০ মিনিট সময় বরাদ্দ থাকবে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কর্তৃক প্রণীত অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক অনুসৃত প্রশ্নকাঠামো অনুসারে জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
সব ধরনের বৃত্তির ৫০ শতাংশ ছাত্রদের ও ৫০ শতাংশ ছাত্রীদের জন্য নির্ধারিত থাকবে। তবে নির্ধারিত কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে ছাত্রের বৃত্তি ছাত্রী দ্বারা ও ছাত্রীর বৃত্তি ছাত্র দ্বারা পূরণ করা যাবে।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, যদি কোনো শিক্ষার্থী বিদ্যালয় থেকে ছাড়পত্র গ্রহণের মাধ্যমে অন্য বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে থাকে, তাহলে তাকে জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার অনুমতি দেওয়া যাবে। সে ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর আগের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মেধাক্রম বিবেচনা করে তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নয়, এমন শিক্ষার্থীর বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার বিষয়ে কোনো প্রকার অভিযোগ পাওয়া গেলে ও অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীর জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষার প্রার্থিতা বা ফল বাতিল করা হবে।