মেডিকেলে টিকবেন নিশ্চিত ছিলেন, প্রথম হবেন ভাবেননি রাফসান 

রাফসান জামান

দেশের সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ফল গতকাল রোববার প্রকাশ করা হয়েছে। এবার পরীক্ষায় অংশ নেন ১ লাখ ৩৫ হাজার ৮০০ জন। পাসের হার ৩৫ দশমিক ৩৪ শতাংশ। পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্য পাস করেছেন ৪৯ হাজার ১৯৪ জন শিক্ষার্থী। এরমধ্যে মেয়ে শিক্ষার্থী ২৮ হাজার ৩৮১ জন (৫৭.৬৯ শতাংশ) এবং ছেলে শিক্ষার্থী ২০ হাজার ৮১৩ জন (৪২.৩১ শতাংশ)।

এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় এবার দেশসেরা হয়েছেন রাফসান জামান। ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে ততটা খুশি ছিলেন না রাফসান জামান। তাই মন কিছুটা খারাপ ছিল। তবে তিনি মোটামুটি নিশ্চিত ছিলেন, মেডিকেলে টিকবেন। তবে প্রথম হবেন, তা কিন্তু ভাবতে পারেননি। রোববার পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণার পর বিস্মিত হন রাফসান জামান।

আরও পড়ুন
রাফসানের টেস্ট স্কোর ছিল ৯৪ দশমিক ২৫। মেরিট স্কোর ২৯৪ দশমিক ২৫। মেধাতালিকায় প্রথম হিসেবে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজে সুযোগ পেয়েছেন।
আমি টিকব তা আশা করেছিলাম কিন্তু এত ভালো ফল ভাবতে পারিনি। একজন ডাক্তার হিসেবে মানুষের সেবা করতে চাই
রাফসান জামান
চট্টগ্রামে নিজেদের বাসায় বাবা, মা ও বোনের সঙ্গে রাফসান জামান
ছবি: প্রথম আলো

চট্টগ্রামের হালিশহরে বেড়ে ওঠা রাফসান জামানের বাড়ি রংপুরে। জন্মের পরপর বাবা এ কে এম শামসুজ্জামানের সঙ্গে পুরো পরিবার চট্টগ্রাম চলে আসে। শামসুজ্জামান সিটি গ্রুপ অব কোম্পানিজের উপমহাব্যবস্থাপক। এক বোন এক ভাইয়ের মধ্যে রাফসান ছোট। বড় বোন সাদীয়া ইবনে রাইসা এবার চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করেছেন।

রাফসানের টেস্ট স্কোর ছিল ৯৪ দশমিক ২৫। মেরিট স্কোর ২৯৪ দশমিক ২৫। মেধাতালিকায় প্রথম হিসেবে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজে সুযোগ পেয়েছেন। পরীক্ষার ফলাফলের বিষয়ে রাফসান জামান বলেন, ‘আমি টিকব তা আশা করেছিলাম কিন্তু এত ভালো ফল ভাবতে পারিনি।’

ছোটবেলায় রাফসান চট্টগ্রাম গ্রামার স্কুলে পড়েছেন। এরপর রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ থেকে এসএসএসি ও এইচএসসি পাস করেন। এইচএসসির পর চট্টগ্রামের বাসায় এসে মেডিকেলে ভর্তির জন্য পড়ালেখা শুরু করেন। একটি কোচিং সেন্টারে কোচিংও করেছেন।

শামসুজ্জামান ও কাউসার নাজনীন দম্পতির সন্তান রাফসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রথমে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। বাবা–মা অনেক কষ্ট করেছেন আমার জন্য। এরপর আমার নিজের চেষ্টা রয়েছে। চেষ্টার কোনো ত্রুটি করিনি।’

রাফসান কখনো ঘড়ি ধরে পড়তেন না। কখনো ৬ ঘণ্টা, কখনো ৭ ঘণ্টা পড়তেন। নিয়মিত অধ্যবসায় এবং সর্বোচ্চ চেষ্টা তাঁর এই সাফল্য এনেছে বলে মনে করছেন রাফসান। রাফসান বলেন, ‘আমি কখনো ঘড়ি ধরে পড়িনি। তবে সকাল ও বিকেলে নিয়ম করে পড়তাম। শুধু মেডিকেলের জন্য চেষ্টা করে গেছি।’

মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম রাফসান নিজের সাফল্যে বিস্মিত ভবিষ্যতে একজন ভালো ও মানবিক চিকিৎসক হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে চান তিনি। পড়তে চান নিউরোসার্জারি নিয়ে। রাফসান বলেন, ‘একজন ডাক্তার হিসেবে মানুষের সেবা করতে চাই।’