মানসম্মত শিক্ষায় অনন্য গ্রিন ইউনিভার্সিটি

‘গ্রহণযোগ্য টিউশন ফিতে মানসম্মত শিক্ষা’ প্রতিপাদ্য নিয়ে ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ। ২০১১ সালে ইউএস-বাংলা গ্রুপ দায়িত্ব গ্রহণের পর এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়।

একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ার সঙ্গে অন্য যে বিষয় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে, তা হলো ‘কোয়ালিটি এডুকেশন’। মূলত এই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই যুগোপযোগী, মানবিক মূল্যবোধ ও দক্ষতাসম্পন্ন গ্র্যাজুয়েট তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছে রাজধানীর স্বনামধন্য এই উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

নান্দনিক স্থায়ী ক্যাম্পাস ও আন্তর্জাতিক মানের মাঠ
ঢাকার সন্নিকটে পূর্বাচল আমেরিকান সিটির নান্দনিক পরিবেশে গড়ে উঠেছে গ্রিন ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাস। চলছে ভর্তি কার্যক্রম, ক্লাসসহ নিয়মিত কর্মকাণ্ড। ক্যাম্পাসে রয়েছে ইনডোর ও আউটডোরে খেলাধুলার সব আয়োজন। এ জন্য গড়ে তোলা হয়েছে আন্তর্জাতিক মানের বিশাল খেলার মাঠ। আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মাঠটির ব্যাসার্ধ ঠিক করা হয়েছে। ক্যাম্পাসে যেতে রাজধানীর বেশ কয়েকটি পয়েন্ট থেকে নিজস্ব পরিবহনের ব্যবস্থাও রেখেছে এই বিশ্ববিদ্যালয়।

প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক
গ্রিন ইউনিভার্সিটির সব শিক্ষক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। শুধু তা–ই নয়, যোগ্য, অভিজ্ঞ এবং গবেষণায় বিশেষ পারদর্শী শিক্ষকের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতে সদা সচেষ্ট গ্রিন ইউনিভার্সিটি। এ ক্ষেত্রে অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক লিখিত পরীক্ষা, প্রেজেন্টেশন ও ভাইভা পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়। শুধু তা–ই নয়, নিয়োগের পর তাঁদের (শিক্ষক) শিক্ষাদানের দক্ষতা বৃদ্ধিতে সেমিস্টারজুড়ে (চার মাস) প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এ কারণে গ্রিন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার মান বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান করা প্রবীণ শিক্ষকেরাও তুলনামূলক অধিক যোগ্য ও অভিজ্ঞ। প্রশিক্ষণজগতের বরেণ্য ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক ড. মো. গোলাম সামদানী ফকির বর্তমানে উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করছেন। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সাবেক এই সহ-উপাচার্য দীর্ঘদিন যুক্তরাষ্ট্রের এসআইটি গ্র্যাজুয়েট ইনস্টিটিউটে ‘ভিজিটিং প্রফেসর’ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. আবদুর রাজ্জাক আছেন উপদেষ্টা হিসেবে। ডিসটিংগুইশড প্রফেসর হিসেবে অধ্যাপনা করছেন বুটেক্সের প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য (সাবেক) অধ্যাপক ড. নিতাই চন্দ্র সূত্রধর এবং বুয়েটের ইইই বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও গবেষক ড. মো. কামরুল আহসান।

আইইবি অ্যাক্রেডিটেশন
অভিজ্ঞ শিক্ষক, মানসম্মত ল্যাব, লাইব্রেরি ও শ্রেণিশিক্ষা পরিচালনা ও মানসম্মত গবেষণার স্বীকৃতি হিসেবে ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইইবি) কর্তৃক অ্যাক্রেডিটেশন পেয়েছে গ্রিন ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) ও ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগ।
স্কলারশিপে বিদেশে পড়ার সুবিধা
গ্রিন ইউনিভার্সিটির কার্যক্রম বাংলাদেশের পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। ছাত্র-শিক্ষক বিনিময় এবং যৌথ গবেষণা প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব হাডারস্ফিল্ড, অস্ট্রেলিয়ার ডেকিন ইউনিভার্সিটি, চীনের বেইজিং ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড কালচারাল ইউনিভার্সিটি (বিএলসিইউ), উহান টেক্সটাইল ইউনিভার্সিটি, মালয়েশিয়ার বাইনারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইতালি ও ভারতের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী দেশগুলোতে স্কলারশিপে পড়ার সুযোগ পাচ্ছেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

অনলাইন শিক্ষায় এগিয়ে
করোনাকাল শুরু হওয়ার কিছুদিন পর থেকেই ইউজিসির নির্দেশনা মেনে অনলাইন পদ্ধতিতে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে গ্রিন ইউনিভার্সিটি। এর আগে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম বিডিরেনের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, অনলাইন ক্লাস পরিচালনায় পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে গ্রিন ইউনিভার্সিটি। ক্লাস ছাড়াও সব ধরনের শিক্ষাসেবা নিশ্চিত করছে অনলাইনের মাধ্যমে।

গবেষণায় অনন্য অবদান
গবেষণায় অনন্য অবদান রাখছে গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ। কোভিড-১৯ সময়ে দেশি-বিদেশি জার্নালে উল্লেখযোগ্য গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশের পাশাপাশি ‘বেস্ট রিসার্চ অ্যাওয়ার্ড’ ও ‘রিসার্চ এক্সিবিশন অ্যাওয়ার্ড’ চালু এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম উদ্যোগ। এ ছাড়া গবেষণা কার্যক্রমকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিতে চালু করা হয়েছে ‘জার্নাল ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার সিস্টেম’।

ক্যারিয়ার গড়তে সহায়তা
গ্রিন ইউনিভার্সিটি প্রত্যক্ষভাবে তাদের গ্র্যাজুয়েটদের কর্মক্ষেত্র নির্ধারণে সহায়তা করছে। ইউএস-বাংলা গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী নির্দিষ্ট সিজিপিএ ও ইংরেজিতে দক্ষ হলে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসসহ গ্রুপটির বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যোগ্যতা থাকা সাপেক্ষে চাকরি পাচ্ছেন গ্রিন ইউনিভার্সিটির গ্র্যাজুয়েটরা। এর বাইরেও গ্র্যাজুয়েটদের চাকরি সুবিধা দিতে গড়ে তোলা হয়েছে ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (সিসিডি)। যে সেন্টারের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ছাত্রছাত্রীরা তাঁদের সফট স্কিল বৃদ্ধি করার সুযোগ পাচ্ছেন এবং দেশি-বিদেশি কর্মক্ষেত্রে আবেদনের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত চাকরি বেছে নিতে পারছেন শিক্ষার্থীরা।

Rashel

শিক্ষক-কর্মকর্তার বেতনে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের তহবিল
গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য গ্রিন ইউনিভার্সিটির সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ হলো ‘স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার ফান্ড’ গঠন। যে ফান্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষক-কর্মকর্তা মাসের শুরুতে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা প্রতি মাসে দিয়ে থাকেন। গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীরা প্রতি সেমিস্টারে এই ফান্ড থেকে বৃত্তি পেয়ে থাকেন।

স্টুডেন্ট মেন্টরশিপ প্রোগ্রাম
মানসম্মত শিক্ষার্থী নিশ্চিত করতে ‘স্টুডেন্ট মেন্টরশিপ প্রোগ্রাম’ বিশ্ববিদ্যালয়টির ছাত্রছাত্রীদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে নবাগত ছাত্রছাত্রীদের একাডেমিক ও প্রশাসনিক বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য জ্যেষ্ঠ শিক্ষার্থীরা উপদেশ-পরামর্শ দিয়ে থাকেন। যে ধারা প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়ার পরই শুরু হয়। এরপর দ্বিতীয় সেমিস্টারে শুরু হয় একাডেমিক অ্যাডভাইজিং। এর মাধ্যমে বিভাগীয় শিক্ষকেরা ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে ‘ওয়ান টু ওয়ান’ যোগাযোগ করে থাকেন, যা পরবর্তী চার বছর পর্যন্ত চলতে থাকে।

আছে ১৭টি ক্লাব
শিক্ষার্থীদের সহশিক্ষা কার্যক্রম বেগবান রাখতে গ্রিন বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে মোট ১৭টি ক্লাব। এগুলো হলো ডিবেটিং ক্লাব, গ্রিন বিজনেস ক্লাব, মার্কেটিং ক্লাব, ইংরেজি ক্লাব, স্পোর্টস ক্লাব, ল ক্লাব, সোশ্যাল বন্ডিং ক্লাব, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ক্লাব, টেক্সটাইল ক্লাব, কম্পিউটার ক্লাব, জেএমসি ক্লাব, গ্রিন ওয়ারিয়র ক্লাব, রিডিং সোসাইটি, ফটোগ্রাফি ক্লাব, কালচারাল ক্লাব, থিয়েটার ক্লাব, ব্লাড ক্লাব। এসব ক্লাবে অংশগ্রহণের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রী বহুমুখী শিক্ষালাভ, লিডারশিপ ও টিমওয়ার্ক স্কিল ডেভেলপমেন্ট এবং মানবিক গুণাবলি অর্জনের সুযোগ পান।

দুই আন্তর্জাতিক সম্মেলন
চতুর্থ শিল্প–চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তিন বছর ধরে ‘সাসটেইনেবল টেকনোলজিস ফর ইন্ডাস্ট্রি ৪.০’ সম্মেলন করে আসছে সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ। এ বছর বিজনেস, ল ও সোশ্যাল সায়েন্সের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো ‘ইনোভেশন অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন ফর ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলন। দেশি-বিদেশি প্রথিতযশা ও খ্যাতিমান বিজ্ঞানী এবং ইন্ডাস্ট্রি প্রফেশনালদের সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের মতবিনিময় ও প্রফেশনাল রিলেশনশিপ তৈরির ক্ষেত্র হিসেবে কার্যকর ভূমিকা রাখছে এই সম্মেলনগুলো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. আবদুর রাজ্জাক বলেন, মানসম্মত শিক্ষা ও গবেষণার ক্রমাগত উন্নয়ন নিশ্চিত করার মাধ্যমে শিগগিরই গ্রিন ইউনিভার্সিটির কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে। এ ক্ষেত্রে আউটকাম বেসড এডুকেশন (ওবিই) পদ্ধতি গ্রিন ইউনিভার্সিটির কার্যক্রমকে ভবিষ্যতে আরও এগিয়ে নিয়ে ব্যাপকভাবে সহযোগিতা করবে। তিনি বলেন, করোনাকালে গ্রিন ইউনিভার্সিটির সবচেয়ে বড় সফলতা হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরো কার্যক্রমকে ডিজিটালাইজড করা। অগ্রগতির এই ধারা বজায় রেখে অচিরেই গ্রিন ইউনিভার্সিটিকে প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ দেওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. গোলাম সামদানী ফকির বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের একাডেমিক্যালি কমপিট্যান্ট দেখতে চাই। অর্থাৎ একজন শিক্ষার্থী যে বিষয়েই পড়ুক না কেন, তাকে ওই বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। একই সঙ্গে তাদের নৈতিক–মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন এবং সামাজিক দায়িত্ববোধসম্পন্ন নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। শিক্ষার এই মান উন্নয়নে আমরা মোট পাঁচটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে থাকি। এগুলো হলো মানসম্মত শিক্ষা, যোগ্য ও অভিজ্ঞ শিক্ষক, উন্নত কোর্স কারিকুলাম, দক্ষ প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং উন্নত ভৌত অবকাঠামো।’
উপাচার্য বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য নৈতিক মূল্যবোধ ও কর্মমুখী শিক্ষার সমন্বয়ে দেশে প্রজন্মপরম্পরায় শিক্ষিত, চরিত্রবান ও প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকার মতো দক্ষ গ্র্যাজুয়েট তৈরি করা; যারা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে জাতির আর্থসামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি নৈতিক উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।’