এবারের জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহের প্রতিযোগিতায় সারা দেশের মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেরা হয়েছ। এ জন্য তোমাকে অভিনন্দন। কেমন লাগছে তোমার?
মো. রহমাতুল্লাহ: অবশ্যই খুব খুশি লাগছে। এ জন্য সকল প্রশংসা মহান আল্লাহ তাআলার; কারণ আল্লাহর অনুগ্রহেই এত দূর আসতে পেরেছি। আর আমার এত দূর আসার ক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন আমার পিতা-মাতা এবং আমার মাদ্রাসার অধ্যক্ষ। এ জন্য আমি তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞ। তবে আমি নিজেকে শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থী দাবি করি না; বরং একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবেই থাকতে চাই। আপনাদের মাধ্যমে সবার কাছে দোয়া চাই, যেন এই মর্যাদাটা ধরে রাখতে পারি।
তুমি এখন কোন শ্রেণিতে পড়ো?
মো. রহমাতুল্লাহ: আলিম দ্বিতীয় বর্ষে (দ্বাদশ শ্রেণি) পড়ি। আমি ছোটবেলা থেকেই মাদ্রাসায় পড়ি। আমার আব্বু মাদ্রাসার শিক্ষক। সেই সুবাদে বলা যায়, আমাদের পরিবারের প্রায় সবাই মাদ্রাসায় পড়েছেন।
তোমাদের বাড়ি কোথায়?
মো. রহমাতুল্লাহ: আমার বাবার বাড়ি মাদারীপুরে। তবে আব্বু গোপালগঞ্জে চাকরি করেন। সে জন্য দীর্ঘ বছর ধরে আমরা গোপালগঞ্জেই থাকি।
প্রতিযোগিতায় মাদ্রাসায় সেরা শিক্ষার্থী হওয়ার জন্য কী কী যোগ্যতা দেখাতে হয়েছে?
মো. রহমাতুল্লাহ: আমি দাখিলে জিপিএ-৫ পেয়েছিলাম। পড়াশোনার পাশাপাশি এখানে সংগীত, খেলাধুলা, স্কাউটিং, আইসিটি দক্ষতা ইত্যাদির প্রয়োজন হয়। কেরাতে আমার বিভাগীয় পর্যায়ে পুরস্কার আছে। খেলাধুলার জন্যও পুরস্কার আছে। একটি সংগঠনের মাধ্যমে গরিব শিক্ষার্থীদের সহযোগিতাও করি।
তোমার পড়াশোনাসহ সারা দিনের কর্মকাণ্ডের কথা শুনতে চাই। আসলে সারা দিন কীভাবে কাটে?
মো. রহমাতুল্লাহ: ফজরের নামাজের পর আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা পবিত্র কোরআন শরিফ পড়ি। এরপর ছয়টার দিকে প্রাইভেট পড়তে যাই। শীতকালে অবশ্য সাতটা বা সাড়ে সাতটার দিকে প্রাইভেটে যাই। প্রাইভেট শেষ করে কিছু সময় বিশ্রাম ও নাশতা করে ক্লাসে যাই। দুইটা পর্যন্ত ক্লাস থাকে। তারপর গোসল, দুপুরের খাবার খেয়ে বিশ্রাম নিই। বিকেলে খেলাধুলা করি। মাগরিবের পর আবার হুজুরের কাছে পড়তে বসি। সেখানে ইংরেজি ও আরবি—দুটোই পড়ি। তারপর রাতে খাবার খেয়ে ১১টা, সাড়ে ১১টার দিকে ঘুমাতে যাই।
তোমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
মো. রহমাতুল্লাহ: মূল লক্ষ্য মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করে দেশের কল্যাণ করা। আমার বাবাও শিক্ষক। আমারও পছন্দের পেশা শিক্ষকতা। আমিও পেশা হিসেবে শিক্ষকতাকে বেছে নিতে চাই। পেশা হিসেবে শিক্ষকতাকে বেছে নেওয়ার মূল কারণ হচ্ছে, আমার ইচ্ছা সারা জীবন জ্ঞানচর্চার সঙ্গে থাকা। শিক্ষকতা করলে যেহেতু প্রতিদিনই নতুন নতুন জ্ঞান অন্বেষণ ও গবেষণা করার সুযোগ হয়, তাই একজন শিক্ষক হতে চাই।
তোমাকে ধন্যবাদ।
মো. রহমাতুল্লাহ: আপনাদেরও ধন্যবাদ।