অধ্যায় ৬

এবার জানব গল্পের বৈশিষ্ট্যগুলো

১. গদ্যভাষায় রচিত একধরনের সাহিত্য যেখানে কাহিনি ও চরিত্র থাকে।

২. গল্পের কাহিনি বাস্তবজীবন থেকে নেওয়া যেতে পারে, আবার কল্পিতও হতে পারে।

৩. আয়তনে ছোট হয়।

৪. একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে গল্প আবর্তিত হয়।

৫. গল্পে শাখাকাহিনি বা উপকাহিনি স্থান পায় না।

৬. ছোটগল্প শেষ হয় নাটকীয়ভাবে। গল্প পড়া শেষে পাঠকের মনে অতৃপ্তি রয়ে যায়।

৭. গল্পে চরিত্রের সংখ্যা বেশি হয় না।

৮. গল্পে পুরো জীবনের ঘটনা উঠে আসে না। টুকরা কোনো ঘটনা নিয়ে গল্প লেখা হয়।

৯. গল্প যেমন হঠাৎ করে শুরু হয়, তেমনি হঠাৎ করে শেষও হয়ে যায়।

আরও পড়ুন

ষষ্ঠ শ্রেণির নতুন বই - ইংরেজি | Meeting an Overseas Friend - Choose The Best Answer

এখন জানব গল্প লেখার কৌশল

১. নাটকীয়ভাবে শুরু করা।

২. পরিধি ছোট হওয়ায় বিস্তারিত কাহিনি বর্ণনা না করে কেবল মূল ঘটনা বর্ণনা করা।

৩. ঘটনার বিন্যাসে বিস্তারিত কাহিনি বর্ণনা না করে কেবল মূল ঘটনা বর্ণনা করা।

৪. সহজ, সাবলীল ও প্রাঞ্জল ভাষা ব্যবহার করা।

৫. চরিত্র অনুযায়ী মানানসই সংলাপ ব্যবহার করা।

৬. গল্পে কৌতূহল তৈরি ও আত্মতৃপ্তিসূচক পরিণতি বজায় রাখা।

জেনে নাও গল্পের ১২টি শ্রেণি

জীবনের বিচিত্র বিষয় ও অভিজ্ঞতা নিয়ে গল্প লেখা যায়। ফলে গল্প অনেক ধরনের হতে পারে যেমন

১. রোমান্টিক গল্প: এ ধরনের গল্পে মানব-মানবীর বিচিত্র প্রেম ও অনুভূতির রূপায়ণ ঘটে। যেমন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘একরাত্রি’।

২. সামাজিক গল্প: এ ধরনের গল্পে সমাজের বিশেষ কোনো ছবি উপস্থাপিত হয় যেমন শরত্চন্দ্রের ‘মহেশ’।

৩. প্রকৃতি ও মানুষ–সম্পর্কিত গল্প: এই ধরনের গল্পে প্রকৃতি ও মানব চরিত্রের বিভিন্ন দিক স্থান পায়। যেমন রবীন্দ্রনাথের ‘অতিথি’।

৪. রূপক বা সাংকেতিক গল্প: রূপক বা সাংকেতিক গল্পে রূপকের অন্তরালে কোনো সর্বজনীন সত্যের উদ্ভব হয় যেমন রবীন্দ্রনাথের ‘তাসের দেশ’।

৫. অতিপ্রাকৃত গল্প: এ ধরনের গল্পে অতিপ্রাকৃত বিষয়ের কল্পনা স্থান পায় যেমন নজরুলের ‘পদ্মগোখরা’।

৬. রম্য গল্প: এ ধরনের গল্পে সামাজিক, রাজনৈতিক ও নৈতিক সমস্যা বা রুগ্ণ মানসিকতাকে উপস্থাপন করা হয় যেমন আহসান হাবীবের ‘সন্দেহ’।

৭. হাসির গল্প: এ ধরনের গল্পে জীবনের নানা অসংগতি নিয়ে হাস্যরস সৃষ্টি করা হয় যেমন রাজশেখর বসুর ‘ভূষণ্ডির মাঠ’।

৮. ঐতিহাসিক গল্প: এ ধরনের গল্পে ইতিহাস থেকে উপকরণ নিয়ে লেখা হয় যেমন শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘মৃৎ-প্রদীপ’।

৯. মনস্তাত্ত্বিক গল্প: এ ধরনের গল্পে নর–নারীর মনস্তাত্ত্বিক বিষয় স্থান পায় যেমন শরত্চন্দ্রের ‘রামের সুমতি’।

১০. ডিটেকটিভ, গোয়েন্দা বা রহস্য গল্প: এই ধরনের গল্প অপরাধ ও গোয়েন্দা তত্পরতা নিয়ে রচিত হয়। যেমন পরশুরামের ‘নীল তারা’।

১১. বিজ্ঞানভিত্তিক গল্প: বিজ্ঞাননির্ভর কাহিনি নিয়ে এ ধরনের গল্প রচিত হয় যেমন সত্যজিৎ রায়ের ‘মরুরহস্য’।

১২. উদ্ভট গল্প: অবাস্তব ও অসম্ভব ঘটনা নিয়ে এ ধরনের গল্প রচিত হয় যেমন বিভূতিভূষণ মুখোপাধ্যায়ের ‘নারায়ণী মেলা’।

এসো এবার জেনে নিই প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন: ‘গল্প’ শব্দটি কোন শব্দ থেকে এসেছে?

উত্তর: সংস্কৃত ‘জল্প’ শব্দ থেকে।

প্রশ্ন: বাংলা সাহিত্যের নবীনতম সদস্য কোনটি?

উত্তর: ছোটগল্প

প্রশ্ন: বাংলা সাহিত্যে কবে থেকে ছোটগল্প লেখা শুরু হয়?

উত্তর: উনিশ শতকের মাঝামাঝি থেকে।

জাহেদ হোসেন, সিনিয়র শিক্ষক, বিয়াম মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা

আরও পড়ুন

ষষ্ঠ শ্রেণির নতুন বই - ইংরেজি | Meeting an Overseas Friend - Read the Conversation