ব্যালে নাচিয়ে থেকে ইতিহাস-কন্যা

‘এভরিথিং এভরিহয়ার অল অ্যাট ওয়ানস’ সিনেমার দৃশ্য
টুইটার
গতকাল বাংলাদেশ সময় ভোরে বসেছিল ৯৫তম একাডেমি অ্যাওয়ার্ডসের আসর। গুরুত্বপূর্ণ চার পুরস্কারের বিস্তারিত নিয়ে এই আয়োজন।

প্রায় সবই নিয়ে গেল যে ছবি
মাঝবয়সী এক চীনা অভিবাসীর লড়াইয়ের গল্প—‘এভরিথিং এভরিহয়ার অল অ্যাট ওয়ানস’ সম্পর্কে জানতে চাইলে এককথায় এটা বলেই দেওয়া যায়। তবে গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সব বিভাগসহ সর্বোচ্চ সাতটি পুরস্কার জেতা সিনেমাটিকে আসলে এই কথা দিয়ে কিছুই বোঝা যাবে না। কেতাবিভাবে ছবিটিকে পরাবাস্তব ঘরানার বিজ্ঞান কল্পকাহিনি বলা হচ্ছে। তবে এটি এমন এক সিনেমা, যা অ্যাকশনপ্রেমী সাধারণ দর্শকেরও ভালো লাগবে। আবার যাঁরা একটু তলিয়ে ভাবতে পছন্দ করেন, তাঁদেরও জীবন ও শূন্যবাদ বিষয়ে চিন্তার খোরাক জোগাবে এই ছবি। গত বছর কোনো পূর্বানুমান ছাড়াই ছবিটি ১০ কোটি ডলারের বেশি ব্যবসা করে। যদিও শুরুতে মাত্র ১০টি হলে মুক্তি পেয়েছিল ‘এভরিথিং এভরিহয়ার অল অ্যাট ওয়ানস’।

মিশেল ইয়ো
রয়টার্স

ব্যালে নাচিয়ে থেকে ইতিহাস-কন্যা
জন্ম ১৯৬২ সালে মালয়েশিয়ায়। ছোটবেলা থেকে নাচ শিখতেন, ব্যালে নাচে ছিলেন বিশেষ পারঙ্গম। মায়ের অনুরোধ রাখতে নাম লিখিয়েছিলেন মিস মালয়েশিয়া প্রতিযোগিতায়। তবে পিঠের চোট ব্যালে নাচিয়ে হওয়ার স্বপ্নে জল ঢেলে দেয়। আশির দশকের মধ্যভাগে জ্যাকি চানের সঙ্গে হংকংয়ের অ্যাকশন ছবি করতে শুরু করেন মিশেল ইয়ো।

আরও পড়ুন

১৯৯৭ সালে ‘জেমস বন্ড’ সিনেমা ‘টুমরো নেভার ডাইস’ দিয়ে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পান, সমালোচকদের সমীহ আদায় করে নেন অ্যাং লির ‘ক্রাউচিং টাইগার, হিডেন ড্রাগন’ করার পর। চার দশকের বেশি সময়ের ক্যারিয়ারে ৫০টির বেশি সিনেমা করেছেন, সবচেয়ে বড় স্বীকৃতি অস্কার মিলল গতকাল। সেই সঙ্গে মালয়েশিয়া তো বটেই প্রথম এশীয় হিসেবে সেরা অভিনেত্রীর অস্কার জিতলেন তিনি।

ব্রেন্ডন ফ্রেজার
রয়টার্স

এভাবেও ফিরে আসা যায়
নব্বইয়ের দশকে ব্রেন্ডন ফ্রেজার ছিলেন অ্যাকশন তারকা। তাঁকে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি এনে দেয় ‘দ্য মমি’। ক্যারিয়ারকে যখন পরবর্তী স্তরে নিয়ে যাওয়ার কথা, তখনই লাপাত্তা হন অভিনেতা। ২০০০ সালের পর ধীরে ধীরে কমতে থাকে কাজ। বিচ্ছেদ, অস্ত্রোপচার প্রভৃতি কারণে বেশ কিছুদিন সিনেমা থেকে দূরে থাকার পর ফেরেন ২০১০ সালে। ২০১৬ সালে দীর্ঘ বিরতির পর দেন সাক্ষাৎকার। ধীরে ধীরে নিয়মিত হতে থাকেন কাজে, যার ফল ‘দ্য হোয়েল’-এর জন্য সেরা অভিনেতার পুরস্কার। তাই তো পুরস্কার গ্রহণ করে অভিনেতা বলেছেন, ৩০ বছর আগে ক্যারিয়ার শুরুর পর এই অর্জন তাঁর জন্য সহজ ছিল না।

ড্যানিয়েল কোয়ান ও ড্যানিয়েল শেইনার্ট
রয়টার্স

আত্মীয় নন, বন্ধু
দুনিয়ার যুগল পরিচালকদের অনেকের মধ্যেই আত্মীয়তার সম্পর্ক, তবে দুই ড্যানিয়েল—কোয়ান ও শেইনার্ট আত্মীয় নন, বন্ধু। বস্টনের এমারসন কলেজে পড়তে গিয়ে পরিচয়, পরে একসঙ্গে দেওয়া শুরু করেন মিউজিক ভিডিওর নির্দেশনা। পরাবাস্তববাদ নিয়ে কাজ করতে ভালোবাসেন, দ্বিতীয় সিনেমা ‘এভরিথিং এভরিহয়ার অল অ্যাট ওয়ানস’-এর মতো যার ছাপ তাঁদের প্রথম সিনেমা ‘সুইস আর্মি ম্যান’-এও ছিল। গতকাল পুরস্কারটি গ্রহণ করে তা দুনিয়ার সব মায়ের প্রতি উৎসর্গ করেন তাঁরা।

আরও পড়ুন

একনজরে অস্কার
সেরা ছবি: ‘এভরিথিং এভরিহয়ার অল অ্যাট ওয়ানস’
পরিচালক: ড্যানিয়েল কোয়ান ও ড্যানিয়েল শেইনার্ট, ‘এভরিথিং এভরিহয়ার অল অ্যাট ওয়ানস’
অভিনেত্রী: মিশেল ইয়ো, ‘এভরিথিং এভরিহয়ার অল অ্যাট ওয়ানস’
অভিনেতা: ব্রেন্ডন ফ্রেজার, দ্য হোয়েল
পার্শ্ব অভিনেত্রী: জেমি লি কার্টিস, ‘এভরিথিং এভরিহয়ার অল অ্যাট ওয়ানস’
পার্শ্ব অভিনেতা: কে হুই কোয়ান, ‘এভরিথিং এভরিহয়ার অল অ্যাট ওয়ানস’
আন্তর্জাতিক সিনেমা: ‘অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট’, জার্মানি
তথ্যচিত্র: ‘নাভালনি’
স্বল্পদৈর্ঘ্য তথ্যচিত্র: ‘দ্য এলিফ্যান্ট হুইসপারস’
মৌলিক গান: এম এম কিরাবানি ও চন্দ্রবোস, ‘নাটু নাটু’, ‘আরআরআর’
মৌলিক আবহসংগীত: ভরকার বার্টলম্যান, ‘অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট’
অ্যানিমেটেড ছবি: ‘গুয়ের্মো দেল তোরো’স পিনোচিও’
অ্যানিমেটেড (স্বল্পদৈর্ঘ্য) : ‘দ্য বয়, দ্য মোল, দ্য ফক্স অ্যান্ড দ্য হর্স’
লাইভ অ্যাকশন শর্টফিল্ম: ‘অ্যান আইরিশ গুডবাই’
মৌলিক চিত্রনাট্য: ‘এভরিথিং এভরিহয়ার অল অ্যাট ওয়ানস’
অনুপ্রাণিত চিত্রনাট্য: ‘ওমেন টকিং’
প্রোডাকশন ডিজাইন: ‘অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট’
সিনেমাটোগ্রাফি: জেমস ফ্রেন্ড, ‘অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট’
কস্টিউম ডিজাইন: ‘রুথ ই কার্টার, ব্ল্যাক প্যান্থার: ওয়াকান্ডা ফরএভার’
ভিজ্যুয়াল ইফেক্টস: ‘অ্যাভাটার: দ্য ওয়ে অব ওয়াটার’
সম্পাদনা: পল রজার্স, ‘এভরিথিং এভরিহয়ার অল অ্যাট ওয়ানস’
মেকআপ অ্যান্ড হেয়ারস্টাইল: ‘দ্য হোয়েল’
অ্যাচিভমেন্ট ইন সাউন্ড: ‘টপ গান: ম্যাভেরিক’