সব আগুন কি পানিতে নেভে?

আগুন লেগেছে শুনলে আমরা অনেকেই প্রথমে পানির কথা ভাবি। এর ফলে অনেক বড় ক্ষতিও হয়ে যায়। তবে সব আগুন কি পানিতে নেভে? বিশেষজ্ঞরা বলেন, আগুন লাগলে সব সময় পানিই একমাত্র সমাধান নয়। এখানে জেনে নিতে পারেন, কোন আগুন কীভাবে নেভে।

ছবি: পেক্সেলস

সাধারণ পদার্থের আগুন

বাঁশ, কাঠ, কাগজ, কাপড় কিংবা এমন কিছুতে আগুন লাগলে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা যায়। এ ছাড়া শুকনা বালু ও ভেজা কাঁথা বা ভারী কাপড় দিয়েও এ ধরনের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।

তেলের আগুন

তেল, মবিল, পেট্রল বা অন্যান্য তরল পদার্থ থেকে আগুনের সূত্রপাত হলে অ্যাকুয়েস ফিল্ম ফর্মিং ফোম (এএফএফ) ছড়িয়ে দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করতে হবে। এ পদ্ধতি সময়সাপেক্ষ, তাই ভেজা কম্বল, বস্তা, কাঁথা, ভারী কাপড় দিয়ে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করতে হবে। পানি দিয়ে এ ধরনের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে না, বরং পানি দিলে হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কাই বেশি। যদি কোনো কিছুই পাওয়া না যায়, তবে শুকনা বালু ছিটিয়েও তরল পদার্থ থেকে সৃষ্ট আগুন বশে আনা যায়।

গ্যাসের আগুন

যেকোনো ধরনের গ্যাস থেকে ছড়িয়ে পড়া আগুনের ক্ষেত্রে গ্যাসের সরবরাহ লাইন বন্ধ করে দিতে বা রাইজারের নব ঘুরিয়ে দিতে হবে। গ্যাস সিলিন্ডার থেকে আগুন লাগলে ভেজা কাঁথা, কম্বল, বস্তা বা ভারী কাপড় সিলিন্ডারের গায়ে জড়িয়ে চাপ দিয়ে বা নব ঘুরিয়ে কিংবা পানির জোর ঝাপটা দিয়ে গ্যাসের সরবরাহ বন্ধ করে দিতে হবে। সব সময় খেয়াল রাখতে হবে, যদি গ্যাস লিক করছে বোঝা যায়, তাহলে কোনোভাবেই সেই স্থানের কাছাকাছি দেশলাই, সিগারেট, জ্বলন্ত মোমবাতি, কুপি ধরনের কোনো কিছু জ্বালানো অবস্থায় নিয়ে যাওয়া যাবে না।

ধাতব পদার্থের আগুন

ধাতব পদার্থের আগুন বা সোডিয়াম, পটাশিয়াম ইত্যাদি থেকে উৎপত্তি হয় এমন আগুন সব থেকে তীব্র হয়। সরাসরি পানির প্রয়োগে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। তাই এসব প্রশিক্ষিত অগ্নিনির্বাপণ কর্মীদের সহযোগিতা নিতে হবে।

বৈদ্যুতিক মাধ্যমের আগুন

বৈদ্যুতিক মাধ্যম থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটলে কোনোভাবেই পানি দেওয়া যাবে না। কারণ, পানি বিদ্যুৎ সুপরিবাহী। আর এর ফলে যে কেউ বিদ্যুতায়িত হয়ে প্রাণ হারাতে পারেন। তাই প্রথমেই বৈদ্যুতিক লাইনের মেইন সুইচ বন্ধ করার চেষ্টা করতে হবে। তবে মেইন সুইচে আগুন লেগে গেলে যত দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করুন। যাতে লাইনের বিদ্যুৎ সরবরাহ দ্রুততার সঙ্গে বন্ধ হয়ে যায়। লাইন বন্ধ হয়ে গেলে নিরাপদ দূরত্বে থেকে পানি ছড়িয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা যায়, তবে সবচেয়ে ভালো হয় যদি ফায়ার এক্সটিংগুইশার বা অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রের সাহায্যে কার্বন ডাই-অক্সাইড ছড়িয়ে দেওয়া যায়। এতে আগুন সহজেই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে।