'করোনা মহামারি মানব উদ্যোগের জন্য চরম বিপৎসংকেত'

জাতিসংঘের পরিবেশপ্রধান ইগনার অ‌্যান্ডারসন। ছবি: রয়টার্স
জাতিসংঘের পরিবেশপ্রধান ইগনার অ‌্যান্ডারসন। ছবি: রয়টার্স

জাতিসংঘের পরিবেশপ্রধান ও অর্থনীতিবিদ সতর্ক করেছেন, মানবসম্পদ প্রকৃতির স্বাস্থ্যের ওপর নির্ভর করে। কিন্তু বর্তমান অর্থনৈতিক ভাবনা তা স্বীকার করে না। করোনা মহামারি ‘মানব উদ‌্যোগের জন‌্য চরম বিপৎসংকেত’।

গতকাল শুক্রবার প্রকাশিত এক নিবন্ধে অধ‌্যাপক স‌্যার পার্থ দাশগুপ্ত ও জাতিসংঘের ইগনার অ‌্যান্ডারসন বলেন, ‘অর্থনীতির ভাষা আমাদের ব্যর্থ করছে। যার ফলাফল—আমরা বার্তাটি ভুল করছি। আমাদের অর্থনীতি, জীবিকা নির্বাহ এবং ভালো থাকা সবকিছু প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে। এটি খাওয়া থেকে শুরু করে জলবায়ু ও রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং আধ্যাত্মিক পরিপূর্ণতা দিয়ে থাকে। প্রকৃতি না থাকলে জীবন থাকবে না।’

‘দ‌্য গার্ডিয়ান’-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চলমান প্রকৃতি ধ্বংসের প্রক্রিয়াকে রোগের মৌলিক চালক হিসেবে দায়ী করা হয়েছে, যা বন্য জীবন থেকে মানুষের মধ্যে চলে এসেছে। গত এপ্রিলে বিশ্বের শীর্ষ জীববৈচিত্র্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, প্রকৃতির ধ্বংস থামানো না হলে আমাদের আরও মারাত্মক রোগের প্রাদুর্ভাবের মুখোমুখি হতে হবে।

পার্থ দাশগুপ্ত যুক্তরাজ্য সরকারের জীববৈচিত্র্যের অর্থনীতি নিয়ে একটি বড় পর্যালোচনার নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবং অ্যান্ডারসন একজন উপদেষ্টা। চলতি বছরের শেষ দিকে তা প্রকাশ হতে পারে। লর্ড নিকোলাস স্টারনের নেতৃত্বে জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত যুক্তরাজ্য সরকারের একই রকমের আরেকটি পর্যালোচনা পরিবেশগত পদক্ষেপের জন্য অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অত্যন্ত প্রভাবশালী ছিল।

পার্থ দাশগুপ্ত ও অ‌্যান্ডারসন বলেন, ‘বর্তমান মহামারি মানুষের জন‌্য চরম বিপৎসংকেত। এটি এই গ্রহের নিরাপদ জায়গার মধ‌্যেই বাস করার গুরুত্ব তুলে ধরেছে। এটি করতে ব্যর্থ হওয়ার বিপর্যয়কর পরিবেশ, স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক পরিণতি ভোগ করতে হবে।

এ ক্ষেত্রে সমস্যা কৃত্রিম অর্থনৈতিক ব্যাকরণ, যা সরকারি ও বেসরকারি নীতিকে চালিত করে। তাঁদের মতে, ‘ন‌্যাচারাল ক‌্যাপিটাল’ বা প্রাকৃতিক সম্পদ দেশের সত‌্যিকারের সম্পদ।

জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচির তথ‌্য অনুযায়ী, নব্বইয়ের দশকের প্রথম দিক থেকে মাথাপিছু প্রাকৃতিক মূলধনের বৈশ্বিক স্টক প্রায় ৪০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে, অন‌্যদিকে উৎপাদিত মূলধন ও মানবসম্পদ ১৩ শতাংশ বেড়েছে।
তাঁরা বলেছেন, বিজ্ঞানের দ্বারা পরিচালিত সিদ্ধান্ত গ্রহণের গুরুত্ব সাম্প্রতিক সময়ে আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। পুনরুদ্ধারের বিষয়ে আলোচনা যেমন দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে, তেমনি আমাদের অর্থনৈতিক এবং আর্থিক সিদ্ধান্তগুলো বিজ্ঞানের দ্বারা পরিচালিত হতে হবে। এখন থেকে আমাদের পরিবেশকে রক্ষা এবং পরিবেশ বিস্তৃতি অবশ্যই আমরা কীভাবে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন করব তার মূলে থাকতে হবে।