কেন করবেন ধ্যান

ধ্যানে হয় মস্তিষ্কের বিশ্রাম, এতে বাড়ে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা। ছবি: অধুনা
ধ্যানে হয় মস্তিষ্কের বিশ্রাম, এতে বাড়ে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা। ছবি: অধুনা

নানা রকম চাপে অনেক নারী কম বয়সে ডায়াবেটিসে ভোগেন। দুশ্চিন্তা, মানসিক চাপ রক্তে ডায়াবেটোজেনিক হরমোনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ডায়াবেটোজেনিক হরমোন ডায়াবেটিস তৈরির অন্যতম প্রধান ফ্যাক্টর বা নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। এ ধরনের পরিস্থিতি থেকে রক্ষার জন্য মানসিক চাপমুক্ত থাকাটা খুব জরুরি। তখন করতে পারেন ধ্যান বা মেডিটেশন।
আমাদের দেশের শহরাঞ্চলের খুব সচেতন কিছু নারী ধ্যান বা মেডিটেশন করেন। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই নগণ্য। মেডিটেশন বা ধ্যান মস্তিষ্কের জন্য খুব উপকারী। আমাদের মস্তিস্ক সব সময় কাজ করতে থাকে। আমরা যখন ঘুমিয়ে থাকি তখনো কাজ করে। মস্তিষ্ক সারা শরীরের নিয়ন্ত্রক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে। অর্থাৎ বিরামহীন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে। আমাদের ঘুমানোর সময়, চোখ বন্ধ করে রাখার সময় বা ধ্যান করার সময় মস্তিষ্কের বিশ্রাম হয়। এই বিশ্রামের ফলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ে। তখন সারা শরীরের নিয়ন্ত্রণক্ষমতা হয়ে ওঠে আরও বেশি শক্তিশালী।

ধ্যান বা মেডিটেশনের সময় মানুষ চোখ বন্ধ করে রাখে। ফলে চোখ, কপাল, ঘাড়, মাথা, চোখের চারপাশের স্নায়ু ও মাংসপেশির বিশ্রাম হয়। ধ্যানের সময় মস্তিষ্কের প্রতিটি কোষেরও বিশ্রাম হয়। তখন মাথাব্যথা, ঘাড়ব্যথাও কমে। মস্তিষ্কের প্রতিটি প্রান্তে অক্সিজেন পৌঁছে যায়। এই অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত শিরা–উপশিরার মাধ্যমে সারা শরীরে সঞ্চালিত হয়। এতে শরীরের অন্যান্য অঙ্গেরও পুষ্টি হয়। অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত দেহের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। পরিণামে কমে যায় স্ট্রেস হরমোন বা ডায়াবেটোজেনিক হরমোন।
পরিণত বয়সের সব নারী–পুরুষের জন্য মেডিটেশন খুব জরুরি। আমাদের উচিত কর্মক্ষমতা বাড়ানোর জন্য নিজেদের ধ্যান করা, আত্মীয়স্বজনসহ প্রতিবেশী পরিচিতদের এতে উৎসাহিত করা।
মস্তিষ্কের বিশ্রাম হলে এতে অক্সিজেনের মাত্রা বেড়ে যায়, তখন অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত পুরো শরীরে সঞ্চালিত হয়। চোখের স্নায়ুগুলোর বিশ্রাম হয়। চোখ বন্ধ করে ধ্যান করার সময় চোখের মাংসপেশিরও বিশ্রাম হয়। নিয়মিত মেডিটেশন করলে হৃদ্রোগের ঝুঁকিও কমে।
মেডিটেশনের গুরুত্ব সম্পর্কে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের মহাজাতক সব সময় বলেন প্রত্যেক মানুষকে নিয়মিত মেডিটেশন করার জন্য। ধ্যান মানুষকে তার মন ও চিন্তা–চেতনা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে, বাড়িয়ে তোলে আত্মবিশ্বাস।

লেখক: চিকিৎসক