রমজানে কখন ব্যায়াম করবেন

আমরা যখন ব্যায়াম করি তখন পেশিতে প্রচুর শর্করার প্রয়োজন হয়। খাবার গ্রহণ না করে থাকলে যকৃৎ ও পেশিতে সঞ্চিত গ্লাইকোজেন ভেঙে এই শর্করা সরবরাহ করে শরীর। রোজা রেখে বেশি ব্যায়াম করলে এই সঞ্চিত শর্করা দ্রুত শেষ হয়ে যাবে ও শরীর দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। ডায়াবেটিস, যকৃতের রোগে এই গ্লাইকোজেন ভেঙে শক্তি আহরণের সিস্টেমে গড়বড় থাকে। ফলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা শর্করা কমে যাওয়ার ঝুঁকিতে থাকে। তাই পবিত্র রমজান মাসে শরীরচর্চা করার ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।

: অনেকেই ইফতারে নানা প্রকার ভাজাপোড়া ও উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার গ্রহণ করেন। এতে অতিরিক্ত ক্যালরি খাওয়া হয়ে যায়, ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। রক্তে শর্করা বা কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়াও বিচিত্র নয়। ইফতার ও রাতের খাবারের মধ্যবর্তী সময় হলো শরীরচর্চার জন্য সবচেয়ে উত্তম সময়। ইফতার গ্রহণের এক থেকে দুই ঘণ্টা পর হালকা ব্যায়াম বা হাঁটাহাঁটি করুন।

: ভারী খাবার খেয়ে ব্যায়াম করা যায় না। তাই ভালো হবে যদি হালকা ইফতার গ্রহণ করেন। বেশি তেলে বা ঘিয়ে ভাজা খাবারদাবার না খেয়ে দই, চিড়া, ছোলা, শসার সালাদ, ফলমূল ইত্যাদি খেয়ে তারপর শরীরচর্চা করলে খারাপ লাগবে না।

: পানি ও লবণশূন্যতার কারণে পেশিতে ক্র্যাম্প হতে পারে। তাই ইফতারের সময় বেশি করে পানি পান করুন। ইলেকট্রোলাইটস সমৃদ্ধ ডাবের পানি পান করা আরও ভালো। ব্যায়ামের পর আবার একটু জিরিয়ে নিয়ে আবার বেশি করে পানি পান করুন।

: অন্য সময়ের তুলনায় হাঁটা বা ব্যায়ামের সময় কমিয়ে নিতে পারেন। অন্যান্য সময় যাঁরা এক ঘণ্টা হাঁটেন, তাঁরা ২০ মিনিট কমিয়ে ফেললেই ভালো।

: রাতের বেলা একটু হাঁটাহাঁটি করলে কোষ্ঠকাঠিন্য, অ্যাসিডিটির সমস্যা ইত্যাদিও কমে।

: শরীরচর্চা করে খুব ক্লান্ত হয়ে পড়লে বা মাথা ঘুরলে বাদ দিন।

: ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্রোগে আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

লেখক, কনসালট্যান্ট, ফিজিওথেরাপি বিভাগ, উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ