তাবুলি সালাদ কেন খাবেন?

তাবুলি সালাদ শরীরের জন্য উপকারি

খাবার টেবিলে সালাদ একটি পরিচিত বিষয়। আর গরমে সালাদের চাহিদা বাড়ে রেস্তোরাঁগুলোতেও। চাহিদার কারণে দেশে দেশে সালাদ তৈরির রয়েছে নানা ধরন। কোথাও নানা রকম শাকসবজি দিয়ে তৈরি হয় সালাদ, কোথাও মাছ বা মাংস মিশিয়ে। আমাদের দেশেও শুধু শসা, টমেটো বা গাজর কেটে সালাদ বানানোর ধারায় এসেছে পরিবর্তন। এখন ভিনদেশি অনেক ধরনের সালাদ পাওয়া যায় দেশি রেস্তোরাঁয়। বাড়িতেও অনেকে নানা ধরনের সালাদ পরিবেশন করেন। তেমনই একটি ভিনদেশি সালাদ তাবুলি। এটি মধ্যপ্রাচ্যে নিরামিষ সালাদ হিসেবে দারুণ জনপ্রিয়। স্বাদের কারণেই এই সালাদ মধ্যপ্রাচ্য থেকে ছড়িয়ে পড়েছে ইউরোপ, আমেরিকা আর এশিয়ার বিভিন্ন দেশে। গ্রীষ্মে এই তাবুলি সালাদ খাওয়ার রয়েছে নানা রকম সুবিধা। তবে উপকারিতা জানার আগে ভিনদেশি এই সালাদের রেসিপিটাও দেখে নেওয়া যাক।

তাবুলি সালাদ যেভাবে বানাবেন

তাবুলি সালাদ

কুচি করা পার্সলে, পুদিনাপাতা, পেঁয়াজ, টমেটো, ভিজিয়ে রাখা বুলগুর বা সুজির সঙ্গে জলপাই তেল, লেবুর রস, কালো গোলমরিচ সঙ্গে লবণ ও মিষ্টি মরিচ মিশিয়ে নিলেই হয়ে যাবে তাবুলি সালাদ। কোনো কোনো অঞ্চলে লেটুসপাতাও যুক্ত করতে দেখা যায়।

কেন খাবেন তাবুলি সালাদ

এই গ্রীষ্মে কেন মধ্যপ্রাচ্যের জনপ্রিয় নিরামিষ এই সালাদ আপনার খাদ্যতালিকায় জায়গা করে নিতে পারে, সে বিষয়ে নানা ধরনের মতামত দিয়েছেন পুষ্টিবিদেরা। অনলাইন সাময়িকী ফেমিনার এক লেখায় পুষ্টিবিদ শ্রদ্ধা কামদার বলেন, এটি আপনার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে এবং চলমান রাখতে সাহায্য করবে। খাবার সুস্বাদু হওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর হলে তা খাদ্যতালিকায় জায়গা করে নিতেই পারে। এই সালাদে ব্যবহৃত উপাদানগুলো কোনো সাধারণ উপাদান নয়। এই সালাদে সব ধরনের পুষ্টি বিদ্যমান, যা আপনাকে শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধক্ষমতা প্রদান করবে।

পার্সলে এই সালাদের অন্যতম প্রধান উপাদান। পার্সলেপাতায় রয়েছে ভিটামিন সি, এ, বি ১২ এবং ভিটামিন কে। তা ছাড়া এতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের পরিমাণ অনেক বেশি, যা আপনার রোগ প্রতিরোধক্ষমতাকে প্রভাবিত করবে। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা তৈরি করতে সহায়তা ছাড়াও স্নায়ুতন্ত্র এবং হাড় মজবুত করে। সবুজ পেঁয়াজেও অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের পরিমাণ অনেক বেশি, যা রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে অবদান রাখে। তাই এই সালাদ ঠান্ডা, জ্বর এবং ফ্লুর সঙ্গে লড়াই করার জন্য জরুরি।

তাবুলি সালাদে বুলগুর (গম থেকে তৈরি একধরনের খাবার উপকরণ) ব্যবহার করা হয়, যা ফাইবার এবং লোহা দিয়ে ভরপুর একটি উপাদান। এতে ক্যালরির পরিমাণও কম। বুলগুর প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি বিপাকেও সাহায্য করবে, যা একটি দুর্দান্ত বিষয়। অন্যদিকে এতে ব্যবহৃত শাকসবজির ফাইবার বিপাক বাড়াতে এবং ক্যালরি কমাতে সহায়তা করে।

সালাদে ব্যবহৃত লেবুর রস স্বাদ বাড়ানোর পাশাপাশি রক্তনালি, হাড় ও কার্টিলেজে কোলাজেন গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এতে থাকা ভিটামিন সি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। সালাদ হচ্ছে বিভিন্ন শাকসবজি, যেমন শসা, পেঁয়াজ, টমেটো, রসুন এবং আরও অনেক উপাদানের একটি শক্তিশালী মিশ্রণ। এই সময়ে তাই খাদ্যতালিকায় তাবুলি সালাদ রাখা যেতে পারে। বুলগুর রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। তা ছাড়া অন্যান্য উপাদান, যেমন পার্সলে, কালো মরিচ ও জলপাই তেল হজমে সক্রিয় অবদান রাখে।