প্রোটিন শেক খেয়ে বিপদ বাড়াচ্ছেন না তো
প্রোটিন শেক একটি প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট, অর্থাৎ এটি খাবারের পাশাপাশি সম্পূরক উপাদান হিসেবে কাজ করে। এটি খাবারের প্রোটিনের বিকল্প নয়। আবার সব প্রোটিন শেক সবার জন্য নিরাপদ বা উপযোগী না-ও হতে পারে।
দেহ গঠন, দেহের ক্ষয়পূরণ ও রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বজায় রাখার জন্য প্রোটিন বা আমিষ-জাতীয় খাবার আবশ্যক। রোজকার খাবার থেকেই আমরা দেহের জন্য প্রয়োজনীয় প্রোটিন গ্রহণ করতে পারি।
তবে এর বাইরেও বিশেষ ধরনের পানীয়ের মাধ্যমে প্রোটিন গ্রহণ করার চল আছে। এ ধরনের পানীয়কে বলা হয় প্রোটিন শেক। সাধারণত ব্যায়ামের পর দেহের ক্ষয়পূরণের জন্য এ ধরনের পানীয় গ্রহণ করা হয়। এ বিষয়ে জানালেন টাঙ্গাইলের কুমুদিনী সরকারি কলেজের গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের প্রধান শম্পা শারমিন খান।
তবে প্রোটিন শেক গ্রহণের কারণেও কিছু স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়তে পারেন আপনি। বয়স, দেহের ওজন ও অবস্থা অনুযায়ী প্রোটিনের চাহিদা কম বা বেশি হয়ে থাকে। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে প্রোটিনের চাহিদা আবার বাড়তেও পারে।
পেশি গঠন করার উদ্দেশ্যে কিংবা ব্যায়ামের পর দেহের ক্ষয়পূরণের জন্য বাড়তি প্রোটিন প্রয়োজন হতে পারে আপনার। প্রোটিন গ্রহণে যাঁদের কোনো বিধিনিষেধ নেই, তাঁদের জন্য তাই প্রোটিন শেক নিঃসন্দেহেই ভালো। তবে অতিরিক্ত মাত্রায় প্রোটিন শেক গ্রহণ করা উচিত নয়।
কতটা প্রোটিন শেক ভালো
প্রোটিন শেক একটি প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট, অর্থাৎ এটি খাবারের পাশাপাশি সম্পূরক উপাদান হিসেবে কাজ করে।
এটি খাবারের প্রোটিনের বিকল্প নয়।
প্রয়োজন না থাকলে উচ্চমাত্রার প্রোটিন–সমৃদ্ধ এমন পানীয় এড়িয়ে চলাই ভালো।
একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ ব্যক্তি যদি মাঝারি বা ভারী ব্যায়াম করেন, তাহলে তিনি এমন প্রোটিন শেক বেছে নিতে পারেন, যা থেকে তিনি ২০ থেকে ৩০ গ্রাম প্রোটিন পাবেন।
২৪ ঘণ্টার ভেতর একাধিক প্রোটিন শেক গ্রহণ করবেন না।
হালকা ব্যায়াম করলে ১০ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়, এমন পানীয় গ্রহণ করা যেতে পারে।
মাত্রাতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ করলে কিডনির ওপর বাড়তি চাপ পড়ে।
প্রোটিন ছাড়াও বাড়তি ক্যালরি ও চিনি
প্রোটিনের মাত্রা সীমার মধ্যে থাকলেও প্রোটিন শেকে থাকা বাড়তি চিনি এবং ক্যালরির কারণে দেহে বাড়তি মেদ জমা হতে পারে। আপনি স্থূলতার ঝুঁকিতে পড়তে পারেন। তাই প্রোটিন শেক কেনার সময় এর প্রোটিন, চিনি ও ক্যালরির মাত্রা ভালোভাবে দেখে নেওয়া প্রয়োজন।
আরও যা খেয়াল রাখতে হবে
কৃত্রিম চিনি যোগ করা প্রোটিন শেকও স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ। প্রোটিন শেকে চিনির বিকল্প উপকরণ কিংবা আঁশজাতীয় উপকরণ থাকলে পেটফাঁপা বা অস্বস্তিকর অনুভূতি হতে পারে। তাই কোনো প্রোটিন শেক খাওয়া শুরুর পর এমন অস্বস্তি হলে তা বদলে ভিন্ন ধরনের প্রোটিন শেক নিন।
দুধ বা দুধের তৈরি খাবার খেলে যাঁদের পেটের সমস্যা হয়, তাঁরা দুধসমৃদ্ধ প্রোটিন শেক এড়িয়ে চলুন।
কোনো কোনো প্রোটিন শেকে ভারী ধাতু ও অন্যান্য ক্ষতিকর রাসায়নিক থাকতে পারে। তাতে দীর্ঘমেয়াদি নানান রোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে। তাই মানসম্মত ও নির্ভরযোগ্য প্রোটিন শেক বেছে নেওয়া প্রয়োজন।
প্রোটিন শেকে যদি থাকে পর্যাপ্ত ইলেকট্রোলাইট ও কিছুটা ভিটামিন ডি, তাহলে তা আপনার জন্য বেশি উপকারী হতে পারে। তবে লবণ গ্রহণের ব্যাপারে বিধিনিষেধ থাকলে বাড়তি ইলেকট্রোলাইটের বিষয়ে সতর্ক থাকা উচিত।
নানান ধরনের উপকরণের বহুবিধ উপকারিতার বহর দেখে ‘পারফরম্যান্স ব্লেন্ড’–জাতীয় কোনো প্রোটিন শেক বেছে না নেওয়াই ভালো। কারণ, এসবে বাড়তি ক্যালরি থাকতে পারে।
তা ছাড়া এসব প্রোটিন শেক গ্রহণের ফলে হজমের সমস্যাও হতে পারে।