ব্যায়ামের সময় সঙ্গী পাশে থাকলে কী উপকারিতা

দাম্পত্য সঙ্গীর সঙ্গে ব্যায়াম করলে উপকারিতা মেলে বেশিছবি: পেক্সেলস ডটকম

নিয়মিত শরীরচর্চা করছেন। একা একা, নিঃসঙ্গ। এতে অবশ্য এর ইতিবাচক ফল প্রাপ্তিতে কিছু অসুবিধা নেই। নিঃসন্দেহে এটি শরীর ও মনের সুস্থতার জন্য উপকারী। কিন্তু জানেন কি, প্রিয় মানুষের সঙ্গে, বিশেষত দাম্পত্য সঙ্গীর সঙ্গে ব্যায়াম করলে সেই উপকারিতার মাত্রা বেড়ে যায় বহুগুণ? ফিটনেসের পাশাপাশি সম্পর্কের রসায়নেও দারুণ প্রভাব ফেলে এই যুগল ব্যায়াম। গবেষণা তাই বলছে। দেখে নেওয়া যাক যুগল ব্যায়ামের নানামাত্রিক উপকারী দিক।

গড়ে ওঠে ইতিবাচক মানসিকতা

দাম্পত্য জীবন মানেই সম্পূর্ণ ভিন্ন দুটো মানুষের অভিন্ন জীবন। সম্পর্কে দীর্ঘস্থায়ী বিশ্বাস ও ভালোবাসা তৈরিতে পরস্পরের প্রতি ইতিবাচক মানসিকতা গড়ে ওঠা জরুরি। যুক্তরাষ্ট্রের ব্রিগহাম ইয়ং ইউনিভার্সিটি থেকে ২০১৮ সালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব জুটি একসঙ্গে ব্যায়াম করেন না, তাদের চেয়ে যুগল ব্যায়ামকারীরা দাম্পত্যজীবনের প্রতি তুলনামূলক বেশি ইতিবাচক, তাদের ভেতর নেতিবাচকতা খুবই কম।

আরও পড়ুন

গাঢ় হয় রোমান্টিক সম্পর্কের রসায়ন

শরীরচর্চার সময় দেহে এন্ডোক্যানাবিনয়েড ও এন্ডোরফিনের মতো হ্যাপি হরমোন নিঃসৃত হয়। সেই সঙ্গে দুশ্চিন্তার হরমোন কর্টিসলের সমতা তৈরি হয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই মন ভালো হয়ে ওঠে। আর এই ব্যাপারটা যদি সঙ্গী-সঙ্গিনীর মধ্যে একসঙ্গে ঘটে, তাহলে পরস্পরের প্রতি প্রেমভাব বেড়ে যাবে, এ কথা জোর দিয়েই বলা যায়। অর্থাৎ একসঙ্গে ভারোত্তোলন বা পাশাপাশি ট্রেডমিলে হাঁটার সময় ফুরফুরে মনে যখন প্রিয় মানুষটির মুখের দিকে তাকাবেন, তখন ভেতর থেকে তীব্র মুগ্ধতা বোধ করবেন।

একসঙ্গে ব্যায়াম করলে গাঢ় হয় সম্পর্কের রসায়ন
ছবি: পেক্সেলস ডটকম

পারস্পরিক আকর্ষণ বৃদ্ধি পায়

ব্যায়ামের সময় অ্যাড্রিনালিন হরমোন নিঃসৃত হয়। এই অ্যাড্রিনালিন হরমোনের সঙ্গে আকর্ষণের ইতিবাচক সম্পর্ক রয়েছে। গবেষণা বলছে, অ্যাড্রিনালিনের মাত্রা যত বাড়ে, সঙ্গীর প্রতি আকর্ষণের মাত্রাও তত বাড়ে। অর্থাৎ ঘর্মাক্ত শরীর, দ্রুত হৃৎস্পন্দন বা শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি বেড়ে যাওয়া প্রভৃতি শারীরবৃত্তীয় উদ্দীপনা নিয়ে যখন পরস্পরের দিকে তাকাবেন, তখন সঙ্গীর প্রতি শারীরিক আকর্ষণ অনুভব করবেন।

আরও পড়ুন

একসঙ্গে গুণগত সময় কাটানোর সুযোগ

তুমুল ব্যস্ততায় প্রিয়জনকে সময় দেওয়া হয় না। একসঙ্গে শরীরচর্চা শুরু করুন। এতে পরস্পরের সঙ্গে গুণগত সময় কাটানোর সুযোগ হবে। দেহের মেদ ঝরানো বা ওজন হ্রাসের মতো অভিন্ন উদ্দেশ্য দুজনকে আরও কাছাকাছি নিয়ে আসবে। সম্পর্কের ওপর দৈহিক ওজন কমানোর প্রভাব বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনা স্টেট ইউনিভার্সিটি ও টেক্সাস ইউনিভার্সিটির একটি যৌথ গবেষণায় দেখা যায়, যে যুগল একসঙ্গে শরীরচর্চা করেন, তাঁদের সম্পর্ক ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত হয়। আর এটি ঘটে থাকে একসঙ্গে বেশি সময় কাটানোর ফলে।

শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে

প্রিয় মানুষের সঙ্গে ব্যায়াম করলে যে স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা তৈরি হয়, তাতে উভয়ের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে। একজনকে ভালো করতে দেখে অপরজনও উৎসাহ বোধ করেন।

সূত্র: টেলিগ্রাফ, ওমেনস হেলথ