সব বয়সেই কি সাঁতার শেখা যায়

যেকোনো বয়সেই সাঁতার শেখা যায়
ছবি: প্রথম আলো

গ্রামে বাড়ির কাছেই অনেক সময় নদী থাকে। দল বেঁধে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়া যায়! শহুরে শিশুদের অবশ্য সেই সুযোগ কম। তবে শহরেও সাঁতার কাটার জায়গা আছে। সাঁতার শেখানোও হয় অনেক জায়গায়। কেবল শিশুদের জন্যই নয়, আছে বড়দেরও সুযোগ।

কেন সাঁতার শেখা উচিত, নতুন করে তা বলার অপেক্ষা হয়তো রাখে না। সাঁতার কেবল আনন্দের উৎস কিংবা শরীরচর্চার একটা ধরনই নয়, সাঁতার জীবনরক্ষারও কৌশল। সাঁতার জানা থাকলে অন্যকেও বাঁচানো সম্ভব। নিয়মিত সাঁতার কাটলে যেমন ওজন কমে, তেমনি শরীরের নানান ব্যথার উপশমও হয়। কিন্তু সব বয়সে কি সাঁতার শেখা যায়?

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের অধ্যাপক ডা. শামসুন নাহার বলেন, পাঁচ বছর বয়স থেকে সাঁতার শেখা যায়। প্রাপ্তবয়স্করাও সাঁতার শিখতে পারেন। এমনকি পঞ্চাশ বা ষাট বছর বয়সে গিয়েও কেউ সাঁতার শিখতে পারেন। তবে যেকোনো বয়সে সাঁতার কাটার ক্ষেত্রে কিছু বিষয় খেয়াল রাখা প্রয়োজন। এই যেমন সাঁতার কাটার শুরুতে ‘ওয়ার্ম আপ’ বা শরীর গরম করে নিতে হবে। অতি উৎসাহী হয়ে দীর্ঘসময় একটানা সাঁতার কাটা যাবে না। আর ভালোভাবে সাঁতার শেখার আগপর্যন্ত অবশ্যই দক্ষ ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে পানিতে নামতে হবে। অন্যথা হতে দেওয়া যাবে না।

জেনে নিন সাঁতার সম্পর্কে আরও কিছু বিষয় :

  • সাঁতারের আগে এবং পরে অবশ্যই পর্যাপ্ত পানি খেতে হবে। সাঁতার শুরুর অন্তত আধা ঘণ্টা আগে পানি খান। সাঁতার শেষে ৫ থেকে ৭ মিনিট পরও পানি খাবেন।

  • জলাশয়ের পানি যাতে পেটে না যায়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।

  • সাঁতারের উপযোগী পোশাক বেছে নিতে হবে।

  • নিজের দক্ষতা বিবেচনায় রেখে সাঁতার কাটতে হবে।

  • অনেকটা সময় সাঁতার কাটতে চাইলে মাঝে বিরতি দিন। সাঁতারে দক্ষ হয়ে ওঠার পরও নিয়মটি মেনে চলতে হবে।

  • বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে লাফ দিয়ে জলাশয়ে নামাটা ঝুঁকিপূর্ণ। তাঁদের ক্ষেত্রে ধীরে সুস্থে পানিতে নামাই ভালো। সাঁতার তো নানানভাবেই কাটা যায়। তবে উল্টোভাবে সাঁতার কাটা এবং মাছের মতো সাঁতার কাটা তুলনামূলক নিরাপদ।

  • বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিদের জন্য সাঁতার চমৎকার ব্যায়াম। অনেকেই কোমরব্যথা কিংবা হাঁটু ও অন্যান্য গিরার (জয়েন্ট) ব্যথায় ভোগেন। এসব ব্যথা উপশমে সাঁতার দারুণ কার্যকর। ডায়াবেটিক কিংবা বেশি ওজনসম্পন্ন অনেক বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিই ব্যথার কারণে অনেক সময় জোরে হাঁটাহাঁটি করতে পারেন না। তাঁদের জন্যও সাঁতার ভালো ব্যায়াম। সাঁতার একদিকে ব্যথা সারাতে সাহায্য করে, অন্যদিকে ক্যালরিও ক্ষয় করে। ফলে ওজনও থাকে নিয়ন্ত্রণে।

  • শিশুরা শিখে যাওয়ার পরও সাঁতার কাটার সময় আশপাশে অভিভাবক কিংবা প্রশিক্ষক উপস্থিত থাকা ভালো।