ইউএপির ক্লাব যেভাবে আমাদের বদলে দেয়

লিখেছেন ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী ও ইয়েস ক্লাবের প্রেসিডেন্ট মো. নাহিদুল ইসলাম

ইউএপির ক্যাম্পাসের একটা ভিন্ন সংস্কৃতি আছে
ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন

ইয়ুথ এনগেজমেন্ট অ্যান্ড সাপোর্ট, সংক্ষেপে ইয়েস ক্লাবের সঙ্গে আমার যাত্রা শুরু হয়েছিল প্রথম বর্ষে। প্রায় সাড়ে তিন বছরের বেশি সময় ধরে ক্লাবের সঙ্গে পথচলা। শুরুতে শুধুই একটি ক্লাব মনে হলেও সময়ের সঙ্গে এই সংগঠন হয়ে উঠেছে আমার পরিবারের মতো।

শুধু ইয়েস নয়, ইউএপিতে অন্য সব ক্লাবেরই একটা আলাদা সংস্কৃতি আছে। ক্লাবের কাজের মধ্য দিয়েই আমরা দায়িত্ব নিতে ও নেতৃত্ব দিতে শিখি। আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতা থেকে শুরু করে আনুষঙ্গিক সহায়তা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সব সময় আমাদের পাশে থাকে।

আমাদের ইয়েস ক্লাব মূলত ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) একটি ‘স্টুডেন্ট উইং’। তাই আমাদের অনেক কার্যক্রম টিআইবির সহযোগিতায় পরিচালিত হয়, যা আমাদের কাজকে করে আরও অর্থবহ।

গত কয়েক বছরে আমরা সেমিনার, কর্মশালা, প্রচারণা, সচেতনতামূলক কার্যক্রম, দুর্নীতি বিরোধী নাটকসহ নানা কিছু করেছি। গত সেমিস্টারের ক্লাব ফেয়ারে যেমন একটা নাটক করেছিলাম, বিষয় ছিল বাজার সিন্ডিকেট।

আরও পড়ুন

ইয়েস ক্লাবে যোগ দেওয়ার পর থেকেই ক্লাব ফেয়ারের নাটকের সংলাপ লেখা থেকে শুরু করে সামগ্রিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্বটা আমি ভীষণ উপভোগ করি। যেমন গত সেমিস্টারে ক্লাব ফেয়ারের আগে সময় স্বল্পতার জন্য আমরা যথাসময়ে প্রস্তুতি নিতে পারিনি। হাতে সময় ছিল মাত্র দুদিন। এর মধ্যেই পুরো নাটকের পরিকল্পনা, কস্টিউমের জোগাড়যন্ত্র থেকে মহড়া পর্যন্ত সব আয়োজন করতে হয়েছে। আমরা রাত জেগে কিংবা দীর্ঘ সময় ধরে ক্যাম্পাসে থেকে প্রস্তুতি নিয়েছি। কঠিন পরিশ্রমের পরেও ক্লান্তি টের পাইনি, বরং দলের সবার একসঙ্গে কাজ করার আনন্দ আমাদের সব ক্লান্তিকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। দিন শেষে সেই পরিশ্রমই ফল দিয়েছে—ক্লাব ফেয়ারে আমরা প্রথম হয়েছি।

ক্লাসরুমের বাইরেও আমরা ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য তৈরি হই
ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন

এভাবেই ছোট ছোট অর্জন, দল বেঁধে কাজ করার অভিজ্ঞতা আমাদের অনুপ্রাণিত করে। ক্লাসরুমের বাইরেও আমরা ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য তৈরি হই। রাত জেগে পোস্টার বানানো, অনুষ্ঠান সাজানো বা মহড়া করা—ক্যাম্পাসজীবনের কত যে স্মৃতি!

সারা বছর বিভিন্ন কর্মশালার মধ্য দিয়ে ক্যাম্পাস মাতিয়ে রাখে আমাদের ক্লাবগুলো। কোনো কোনো ক্লাব বিভাগভিত্তিক, কোনোটা আবার ছাত্র কল্যাণ পরিচালকের অধীন (ডিরেক্টরেট অব স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার)। আছে সাংস্কৃতিক সংগঠন, ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাব, এন্ট্রাপ্রেনারশিপ অ্যান্ড ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট ক্লাব, হিস্টোরি অ্যান্ড হেরিটেজ ক্লাব, ফটোগ্রাফি ক্লাব, সোশ্যাল অ্যাওয়ারনেস ক্লাব। খেলাধুলার জন্যও বেশ কিছু সংগঠন আছে। যেমন ক্রিকেট ক্লাব, ফুটবল ক্লাব, বাস্কেটবল ক্লাব।

একদিন এই ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যাব। কিন্তু ক্লাবের অভিজ্ঞতাগুলো আজীবন রয়ে যাবে স্মৃতিতে। মনে থাকবে কারণ—এই ক্লাবই আমাকে ‘আমি’ হয়ে উঠতে সাহায্য করেছিল।

আরও পড়ুন