হেমাঙ্গ বিশ্বাসের গান: ভুল তথ্য প্রসঙ্গে
১৩ জুন প্রথম আলো অনলাইন সংস্করণে কিংবদন্তি শিল্পী হেমাঙ্গ বিশ্বাসের একটি গান উল্লেখ করে ‘হেমাঙ্গ বিশ্বাসের যে গান মণিপুরেও গাওয়া হয়’ শিরোনামে আলতাফ পারভেজের একটি লেখা প্রকাশিত হয়। ওই লেখায় গানটি নিয়ে একটি ভুল তথ্য ছিল। সেই তথ্যবিভ্রাট শুধরে দিতেই এই লেখা। লিখেছেন হেমাঙ্গ বিশ্বাসের মেয়ে রঙিলী বিশ্বাস।
১৩ জুন ২০২৩ তারিখে প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে ‘হেমাঙ্গ বিশ্বাসের যে গান মণিপুরেও গাওয়া হয়’ শিরোনামে আলতাফ পারভেজের একটি লেখা প্রকাশিত হয়। সেই লেখার সূত্র ধরেই আমার এই লেখা। এই লেখায় একটি ভুল তথ্য রয়েছে।
‘হেমাঙ্গ বিশ্বাসের যে গান মণিপুরেও গাওয়া হয়’ শীর্ষক নিবন্ধটিতে শিলচরের একটি কাগজকে (‘সাময়িক প্রসঙ্গ’) উদ্ধৃত করা হয়েছে, যে কাগজে আমার একটি সাক্ষাৎকারের মারাত্মক ভুল পরিবেশনা ছিল। এ বিষয়টি নিয়ে বহু সংশোধনী, আলোচনা ও লেখা আমি এবং আমার মণিপুরি বন্ধুরা বেশ কিছু বছর ধরেই করে এসেছি। তারপরও ওই সাক্ষাৎকারকে সূত্র মনে করে সাক্ষাৎকারের ভুল তথ্য প্রথম আলোয় প্রকাশিত লেখাটিতে লেখক ব্যবহার করেছেন।
এখানে আরও যা বলার, তা হলো:
আমার নাম রঙিলী বিশ্বাস (রঙ্গিলী নয়)। আমি সবিনয় জানাই, ‘সাময়িক প্রসঙ্গ’ বা অন্য কোনো সংবাদপত্রকে আমি এ মর্মে কোনো সাক্ষাৎকার দিইনি; দিতে পারি না যে ‘কাস্তেটারে দিয়ো জোরে শাণ’ মূলত ইরাবত সিংয়ের মণিপুরি ভাষায় লেখা গান। আবারও বলি, আমাকে এই কাগজ ভুলভাবে উদ্ধৃত করেছে এবং আমি বলব, অন্যায় রকমের ভুলভাবে। হেমাঙ্গ বিশ্বাসের আত্মজীবনী ‘উজান গাং বাইয়া’, তাঁর প্রোগ্রাম রেকর্ড, এমনকি আমার তেভাগার ওপর সদ্য প্রকাশিত গবেষণামূলক মিউজিক ভিডিওটি থেকে শুরু করে নানা সূত্রে এটা বহুদিন ধরে সর্বজনবিদিত যে ‘কাস্তেটারে দিয়ো শাণ’ ১৯৪২ সালে হেমাঙ্গ বিশ্বাস রচনা করেন। আর এ গানের সুরারোপে ব্যবহার করেন একটি সারি গান, যা তিনি শুনেছিলেন লুলা গাঙের একজন মাঝির মুখে, নিজের জমিদার পিতার দ্বারা বাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়ে পঞ্চখণ্ডে নিজের মাসির বাড়িতে আশ্রয় নেওয়ার সময়।
এ নিয়ে আমার বন্ধু আখু চিংগাংবাম বহুদিন আগেই নিজের ফেসবুকের পাতায় একটি ছোট লেখা লেখেন, আমি নিজে ব্যক্তিগতভাবে বহু মানুষ—যাঁরা জানতে চেয়েছেন—তাঁদের বিষয়টি বলেছি। এই মারাত্মক ভুল একটি খবর ছাপা হলো আমার নাম করে এবং তারপর সেটি কোনোভাবে ভাইরাল হওয়া, উপরন্তু তা নিয়ে এত বছরের এত ক্ল্যারিফিকেশন বা বিষয়টি পরিষ্কার করার পরও মূল সূত্রগুলো না খুঁজে, একটি খবরের কাগজকে বারবার উদ্ধৃত করাটা আমার কাছে আশ্চর্যের লাগছে।
এতে করে হেমাঙ্গ বিশ্বাস বা ইরাবত সিং কারও প্রতিই আমার মনে হয় না সম্মান দেখানো হচ্ছে।