অল্পস্বল্প দীর্ঘ জীবন

অন্যআলো ডটকমে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হচ্ছে লেখক-অভিনেতা-চিত্রকর আফজাল হোসেনের স্মৃতি ধারাবাহিক ‘অল্পস্বল্প দীর্ঘ জীবন’। বিচিত্র এক জীবন পাড়ি দিয়েছেন আফজাল হোসেন। সাতক্ষীরার গণ্ডগ্রাম থেকে ঢাকায় এসে চারুকলায় পড়েছেন, পত্রিকায় কাজ করেছেন, মঞ্চ কাঁপিয়েছেন একসময়। আর টেলিভিশনে তাঁর জনপ্রিয়তার কথা তো বলাই বাহুল্য। বিজ্ঞাপনের জগতেও আছে তাঁর নিবিড় পদচারণ। আবার লেখক ও চিত্রশিল্পী হওয়ার কারণে লেখক-চিত্রকরদের অনেকের সঙ্গেই রয়েছে তাঁর অন্তরঙ্গ সখ্য। জীবনের এসব নানা বর্ণের গল্প আফজালের কলমে উঠে আসবে এখানে। আজ প্রকাশিত হলো দশম কিস্তি।

দশ.
তখন নিয়ম হচ্ছে বড়রা যা বলবে, প্রশ্ন না করে তা মান্য করো। লক্ষ্মী ছেলেরা তাই করে থাকে।

বড়দের মনমতো হতে চাইলে অজস্র আনন্দ ও আগ্রহ থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিতে হয়। কত কত কৌতূহলকে পাশ কাটিয়ে যেতে হয়। কত শত রকমের ইচ্ছা জাগে, সবার মনে অত ইচ্ছা তৈরি হয় না। যাদের মনে কম ইচ্ছা, তাদের মতো নই বলে আমাকে নিয়ে আমি খুশিই ছিলাম।

বিছানায় বসে দুলে দুলে বই পড়ছি, কানে এল অচেনা একটা পাখির ডাক। জানালার ওপারের বাগানে পাখিটা আগে কখনো আসেনি। এমন অদ্ভুত ডাক শুনেছি বলে মনে পড়ে না। ইচ্ছা জাগবেই, দেখার—কেমন দেখতে সে পাখিটা। ডাকে জানালা, এসো খুঁজবে তাকে।

হরেক রকম গাছের ডাল, পাতাদের কোন ফাঁকফোকর থেকে ডাক ভেসে আসছে, অনুসরণ করে সে পাখিকে খোঁজা আনন্দেরই ছিল। অন্যরা ভেবেছে, লেখাপড়ায় মন নেই। ওভাবে জানালায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলে বকা খেতে হতো। খেতাম।

মনে কষ্ট পেতেন দাদি। আমাকে কেউ কিছুতে মন্দ বলা মানেই খেপে যেতেন, সঙ্গে করুণ গলায় চলত তাঁর আহা–উঁহু। সংসারে একমাত্র দাদিই ভাবতেন আমি ছোট মানুষ, নানা রকম ইচ্ছা, খেয়াল থাকতেই পারে।

আমার মনে হতো, জগতে ভালো আছে, আছে মন্দও। মনে হতো, ভালো-মন্দ উভয়ই দরকারি; না হলে আছে কেন? দিন যায়, রাত আসে। অকারণে নয়। দিনভর কত–কী করার থাকে, স্বপ্ন দেখার জন্য রাতটা লাগে।

হারিকেনের আলো কমিয়ে যখন ঘুমোবে বলে চোখ বোজে মানুষ, চোখের পাতার ওপর ঘুম নেমে আসে। জগতের অন্ধকারে ডুবে কেউ হয় মৃত, কেউ সাঁতরায়। ছোটবেলায় এমন করে ভাবিনি, তবে সে সময়টার প্রতি পাতা উল্টেপাল্টে এটা–ওটা দেখতে গিয়ে সেই অন্ধকারেও আবছা দেখতে পাই বাল্যবেলা, দেখি আমাকে।

বড় পালঙ্কে দাদির পাশে শুয়ে চোখ বড় করে তাকিয়ে স্পষ্টভাবে কাঠে খোদাই করা নকশা দেখার চেষ্টা করছি। দেখছি আর ভাবছি, কে বা কারা করেছিল এই সব। তারা পেরেছিল কীভাবে? এসব কি শিখতে হয়? কেমন করে কার কাছ থেকে শিখেছিল এই কাঠে নকশা করার কাজ!

সামনের অন্ধকারে হাত উঁচু করে, আঙুল খুলে নকশা আঁকতে শুরু করি। পারি কি না, দেখার চেষ্টা। চোখ খুলে দাদি দেখেন, ঘুমাইনি। কী যেন করছি। অবাক হন না, বিরক্তও হন না। পাশ ফিরতে ফিরতে বলেন, এই ব্যাঁদড়া, ঘুমো।

ব্যাঁদড়া! কতকাল পরে দাদির বকা দেওয়ার শব্দটা দীর্ঘ জীবনের অলিগলি–বন্দর–প্রান্তরে হাঁটতে গিয়ে হারিয়ে ফেলেছিলাম। আচমকা চকচকে নতুন মার্বেলের মতো সেটা গড়িয়ে হাজির হয়ে যায়। কত কিছুর ঘোর, কত কিছুকে গুরুত্ব দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টায় মানুষ নিজেকে হারিয়ে ফেলে। জেগে ওঠে এই বোধ, অনুভব। ফিরে পেলাম রূপকথার মতো রঙিন শৈশব, দাদি আর সেই অসাধারণ মানুষটার অসীম মায়াময়তাকে।

দাদার প্রিয় ছিলাম না আমি। দাদা ভাবতেন, তিনি ও তাঁর পরিবার আশপাশের সবার চেয়ে আলাদা। অভিজাত, বনেদিপনা এসব তখন তেমন বুঝতাম না। দাদা চাইতেন, এমনভাবে চলো–বলো যেন রব্বানী ডাক্তারের নাতি হিসেবে অন্যেরা দেখে, যেন ‘বিশেষ’ ভাবতে পারে। চুল আঁচড়ানো, কাপড়ে ইস্তিরির ভাঁজ, জুতো-মোজা পরে চেয়ারে পায়ের ওপর পা তুলে বসে থাকো বা মাথা সোজা করে হাঁটো রাস্তায়—মানুষ তোমাকে দেখুক অবাক হয়ে। দেখুক, তুমি অন্যদের মতো নও। তুমি আলাদা। এই তল্লাটে তোমার পরিবারও আলাদা।

আমার ছোট ভাইটার চালচলন ছিল সে রকম। দাদার ধ্যানধারণামতো। বাবুলকে কোনো দিন দাদার কাছে বকা খেতে দেখিনি। আমাকে প্রায় রোজ খেতে হয় বলে অপছন্দ করতাম তাকে। দাদিও একই কারণে দেখতে পারতেন না বাবুলকে। সেই অপছন্দের প্রকাশ কেমন ছিল, মনে পড়লে হাসি পায়।

আমরা দুজন ছিলাম একজন আরেকজনের সম্পূর্ণ বিপরীত। গায়ের রঙেও ছিল পার্থক্য। নিয়ম মেনে চলা স্বভাবের জন্য সে দাদার প্রিয় নাতি। দাদি ভাবতেন, ফরসা বলে দাদার প্রিয়। শোধ নিতে বাবুলকে অপছন্দ করতেন দাদি। তাঁর অপছন্দ প্রকাশ করার ধরন ছিল অদ্ভুত। হয়তো দাদি দেখলেন, গোসল সেরে ফিটফাট বাবুল বারান্দায় দাদার চেয়ারটায় বসে পা দোলাচ্ছে। এমন দৃশ্যে আপত্তি বা বিরক্তি কোনোটাই হওয়ার কথা নয়। দাদি রাগ হয়ে যেতেন, হাসা মুলোডা দেখো চেয়ারে বসে ঠ্যাং নাচায়।
সে কথায় যদি পা দোলানো থামিয়ে বাবুল দাদির দিকে তাকাত, খেপে যেতেন দাদি,
: এ্যাই হাসা মুলো, অত চোখ বড় করে তাকাইস ক্যান!

দাদার প্রিয়কে উড়িয়ে-গুঁড়িয়ে নিজের প্রিয়কে বিশেষ করে তুলতে চেয়ে ওই নামে তিনি সম্বোধন করতেন বাবুলকে। মুলা হয় দুরকমের। একটা সাদা, অন্যটা লালচে ধরনের। আমাদের ওদিকে গ্রামের মানুষেরা সাদাকে কৌতুকরসে হাসা বলে থাকে। আর মুলা ওই অঞ্চলের মুখে হয় মুলো। দুয়ে মিলে রঙে ফর্সা ছোট ভাইটা দাদির নজরে ও ভাষায় ছিল হাসা মুলো।

বাড়িতে ছিল দুটো পক্ষ। দাদাপক্ষে দাদা ও বাবুল। দাদিপক্ষে আমি ও দাদি। কোনো পক্ষের দাম, ওজন কম বা বেশি ছিল না। সারাক্ষণ দৃশ্যমান না হলেও কখনো–সখনো পক্ষের অস্তিত্ব স্পষ্ট করেই দেখা দিত। আব্বা–আম্মা কারও পক্ষে ছিলেন না, তাঁরা স্বতন্ত্র। দুই পক্ষকেই মেনে চলতে হতো তাঁদের। সেকালে পরিবারের ধরন অনুযায়ী, দাদা ও দাদির হাতে সংসারের সব কর্তৃত্ব। আব্বা ও আম্মাকে মনে হতো আমাদের মতোই আরও দুজন।

দাদা-দাদি যত দিন বেঁচে ছিলেন, আব্বা বা আম্মাকে সম্পর্ক অনুযায়ী বিশেষভাবে চেনাজানা হয়ে ওঠেনি। নিজেদের সন্তান হওয়া সত্ত্বেও আমাদের সম্পর্কে কখনো কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভূমিকা মেলেনি তাঁদের। মেলেনি বলেই পিতা–মাতা ও সন্তানদের মধ্যে সম্পর্করেখাটা বহুকাল পর্যন্ত ছিল খুবই ক্ষীণ।

সামনের অন্ধকারে হাত উঁচু করে, আঙুল খুলে নকশা আঁকতে শুরু করি। পারি কি না দেখার চেষ্টা। চোখ খুলে দাদি দেখেন, ঘুমাইনি। কী যেন করছি। অবাক হন না, বিরক্তও হন না। পাশ ফিরতে ফিরতে বলেন, এই ব্যাঁদড়া, ঘুমো।

পেছন দিকে তাকাই যখন, ভাবি কী সৌভাগ্যবান ছিলাম! অমন ডাকসাইটে দাদাকে ভয় পেতে হয়েছে, কিন্তু ভয় আমাকে বদলে দেয়নি। কৌতূহলী মন কখনোই ভীত হয়নি, থামেনি। শৈশবকালে শাসন ভালো লাগত না।এখন ভাবি, সে রকমের শাসনের প্রয়োজন ছিল।

মানুষটাকে নিয়ে অজস্র স্মৃতি মনে আসে। ভাবতে বসে চোখের সামনে একে একে যত ঘটনা ভেসে ওঠে, তাঁকে বিশেষকালের বিশেষ মানুষই মনে হয়। অনেক ঘটনায় হাসি পায়, সমীহও জাগে। আমার প্রতি তাঁর নিত্য, নিয়ত বিশেষ মনোযোগের কারণ খুঁজে পাই এখন। তা পেতাম না বাল্যকালে। তখন মানুষটাকে নির্মম মনে হতো। মনে প্রশ্ন জাগত, কেন তিনি চান সবাইকে তাঁর মতো করে চলতে বলতে হবে?

আমার চলাফেরা ছিল আমার ভাবনামতো। ছোট হলেও আমার ইচ্ছাগুলো তো ছিল আমারই। সে সব ইচ্ছার টান যখন খুশি, দাদার ভাবনা থেকে আমাকে ছিঁড়ে নিয়ে ভাসিয়ে দিত আমারই আনন্দের পথে।

ফুটবল খেলাটা খুবই অপছন্দ করতেন দাদা। তখন চোখে দেখতেই পেতাম সে খেলা নিয়ে মানুষের কত আগ্রহ। যদি তিন-চার গ্রাম পার হয়ে কোনো গ্রামের মাঠে সে খেলার বিশেষ আয়োজন থাকে, মানুষেরা দল বেঁধে ছুটত সেখানে। সাত দিন ধরে মাইকে ভাইসব, ভাইসব বলে কাঁপানো গলায় অমুক দিন বেলা অত ঘটিকায় কোন গ্রামের মাঠে খেলা—প্রচার করে বেড়ানো হতো। গ্রাম ভেঙে লোক জড়ো হয়ে, উপচে পড়া মাঠে উত্তেজনায়, উচ্ছ্বাস-উল্লাসে খেলা উপভোগ করত মানুষ।

খেলা দেখতে যাওয়া নিয়ে আপত্তি ছিল না দাদার। অন্যরা খেলছে খেলুক, তাঁর দুই নাতির কেউই তা খেলতে পারবে না। সাফ কথা। কেন আমরা কেউ ফুটবল খেলতে পারব না, তার ব্যাখ্যা তো তিনি দেবেন না। আমার জানতে ইচ্ছা। আমাকে দাদি তাঁর মাথায় হাত রেখে প্রতিজ্ঞা করিয়েছেন, দাদাকে সে প্রশ্ন কখনোই যেন না করি।
দাদির সঙ্গে আমার নানা বিষয়ে অলিখিত চুক্তি হতো। যেমন সন্ধ্যার আগে বাড়ি ফিরে হাতমুখ ধুয়ে পড়তে বসলে পরদিন হাওয়াই মিঠাই, গজা, কটকটি খাওয়ার পয়সা দেবেন। ফুটবল বিষয়ে চুক্তি হলো, আমি দাদাকে কেন খেলা যাবে না তা কখনোই জিজ্ঞাসা করব না। তার জন্য আমাকে একটা ফুটবল কিনে দিয়েছিলেন। সেটা গোপনে রাখতে হবে। সাবধান করে দিলেন, তোর দাদার চোখে পড়ে যেতে পারিস, এমন কোথাও খেলবি না।

এক তুমুল বৃষ্টির দিনে ঘটে গেল সর্বনাশ। জেনেও যাই, ফুটবল খেলা তাঁর অপছন্দের কেন?
সে গল্পটা চমকানোর মতো, অবাক করা। শুনলে হাসি পাবে, কেন দাদা ফুটবল খেলা পছন্দ করেতেন না।

খেলতাম কাঁসারিপাড়ার পেছনে, নদীপাড়ে। একদিকে শ্মশানঘাট তার পাশে মস্ত একটা ফাঁকা জায়গা, মাঠের মতোই, সেখানটায়। এমন জায়গা সেটা, দাদার নজরে পড়ার কথা নয়। বিশেষ করে ঝমঝম বৃষ্টি হচ্ছে যেদিন, সেদিন ভাবাই যায় না দাদার চোখে ধরা পড়ে যেতে পারি।

তারুণ্যে আফজাল হোসেন
ছবি: সংগৃহীত

দাদা গিয়েছিলেন নদীর ওই পারে সখীপুর গ্রামে রোগী দেখতে। সে বাড়িতে লম্বা সময় ধরে বসে থেকে থেকে যখন দেখেছেন বৃষ্টি থামার নাম নেই, সাইকেল রেখে ছাতা নিয়ে হেঁটে রওনা হয়ে যান। চলাচলের রাস্তা বাদ দিয়ে সখীপুর বাজারের ভেতরের পথ ধরে হাঁটলে কম সময়ে পৌঁছানো যায়। সে পথেই আসছিলেন। হঠাৎ ঝড়–বাতাসের দাপটে, দাপুটে মানুষটার ছাতা যায় উল্টে। সামনে কামারের দোকান ছিল, দাদা ঢুকে পড়েন সেখানে।

ছাতা না ওলটালে দাদা কামারের দোকানে ঢুকতেন না। আমার কপালটাও পুড়ত না সেদিন।
বৃষ্টি ও বাতাসের দাপটে অমন মানুষটাকে কামারের দোকানে বাধ্য হয়ে ঢুকতে হয়েছে। সেখানে বসার জন্য রয়েছে নড়বড়ে একটা লম্বা বেঞ্চ। রব্বানী ডাক্তার ঢুকেছে বলে অন্যরা বেঞ্চ ছেড়ে দেয়, ঝেড়েমুছেও দেওয়া হলো। বেঞ্চের ময়লা চেহারা তাতে বদলায়নি। তাতে বসার ইচ্ছা মোটেও নেই দাদার, কিন্তু না বসেও পারলেন না।

গোলপাতা দিয়ে ছাওয়া ঘরটা উঁচু নয় বলে ঘাড় গুঁজে দাঁড়িয়ে থাকা কষ্টের। নিরুপায় হয়ে অস্বস্তি নিয়ে বসলেন তিনি। দেখেন, বিধু কর্মকার ধান কাটা কাস্তে গড়ছে। আগুন, কয়লার মধ্যে লোহা ঢুকিয়ে দিয়ে হাপর টানলে কয়লার মধ্যে লুকানো আগুন হাউমাউ করে ওঠে। ছাই ওড়ে। আগুনে পোড়ানো লাল লোহা হাতুড়ি দিয়ে পেটানো হচ্ছে, তাতে আগুনকণা ছিটকে পড়ে আশপাশে।

উল্টে যাওয়া ছাতাটা বেঞ্চে হেলান দিয়ে রাখা। সেখানে আশ্রয় নেওয়া অন্য মানুষেরা গ্রামের সাধারণ। তারা ভাঙা বেঞ্চে বসে থাকা নামী–দামি মানুষটাকে দেখে। বৃষ্টি কমছে কিন্তু ছাতার বেহাল দশা। সব মিলিয়ে খুবই বিরক্তবোধ করেন বাঘ ডাক্তার। সবকিছু পেছনে ফেলে নদীর দিকে ঘুরে বসেন। নদীর ওই পারে শ্মশানঘাটের পাশের ফাঁকা জায়গাটাতে ছেলেপেলেরা ফুটবল খেলছে। বৃষ্টি কমছে। বৃষ্টির সঙ্গে বাতাসও রয়েছে বেশ। খুব স্পষ্ট দেখা যায় না, এ রকম ঝমঝম বৃষ্টিতে ভিজে, কাদা–পানিতে এত আনন্দে কারা খেলছে ফুটবল!

দেখতে দেখতে একজনকে চেনা চেনা মনে হয়ে যায় তাঁর। বুক ধড়াস করে ওঠে দাদার, আরে! কাকে দেখছেন তিনি! বিশ্বাস হতে চায় না। স্থির হয়ে দেখে নিশ্চিত হন, ফুটবল খেলছে আফজাল। উঠে দাঁড়িয়ে যান। বিধু কর্মকারকে ওলটানো ছাতাটা দেখিয়ে বললেন, জব্বার এসে নিয়ে যাবে।

হন হন করে বৃষ্টিতে বেরিয়ে পড়েন দাদা। চোখে ভাসছে কয়লার আগুন থেকে লাল হওয়া লোহা বের করে হাতুড়ি পেটাচ্ছে বিধু কর্মকার। আগুনকণা ছিটকে পড়ছে চতুর্দিকে। বৃষ্টির শব্দের নিচে ক্রমে পাতলা হয়ে যাচ্ছে হাতুড়ির ক্রোধের শব্দ। (চলবে)

অন্যআলো অনলাইনে লেখা পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]