শিক্ষা-প্রক্রিয়া আনন্দদায়ক হওয়া বাঞ্ছনীয়

গত শুক্রবারের প্রথম আলোর প্রথম পাতায় ‘স্কুলের ব্যাগটা বড্ড ভারী’ শিরোনামে যে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে, তা এক নতুন সমস্যার প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এ দেশের স্কুলগামী শিশুদের প্রতিদিন যে ওজনের বই নিয়ে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করতে হয়, তা তাদের স্বাস্থ্যের ওপর গুরুতর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেহের তুলনায় অতিরিক্ত ভার বহনের ফলে বাংলাদেশের শিশুরা একটু একটু করে গুরুতর শারীরিক ক্ষতির দিকে এগোচ্ছে।
এটা নিশ্চয়ই বড় উদ্বেগের বিষয় যে, পিঠে ব্যথা, সোজা হয়ে দাঁড়াতে না পারা ইত্যাদি শারীরিক সমস্যা নিয়ে শিশুদের চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হচ্ছে। স্কুলব্যাগের ওজন বেশি বলেই যে তাদের এমন শারীরিক সমস্যা হচ্ছে—এটা ইতিমধ্যে চিহ্নিত সমস্যা। কিন্তু এই সমস্যার সমাধানের কথা কেউ ভেবেছেন বলে আমাদের জানা নেই। এমনকি এ ব্যাপারে কোনো পরিসংখ্যানও নেই যে শিশুরা ঠিক কত বেশি বোঝা বয়ে একসময় অসুখে পড়ছে। অর্থাৎ, সরকারের তরফে বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি নেই। সরকারের এদিকে অবশ্যই দৃষ্টি দেওয়া উচিত।
একটি শিশুর জন্য কত ওজনের বেশি বহন করা ক্ষতিকর হতে পারে, তা নির্ধারণ করা উচিত। চিকিৎসকেরা বলছেন, স্কুলব্যাগের ওজন শিশুর দেহের ওজনের ১০ শতাংশের বেশি হওয়া উচিত নয়। এ ব্যাপারে মা-বাবাদের সতর্কতা বিশেষ জরুরি। অনেক সময় শিশু প্রয়োজনের বাইরের বইও প্রতিদিন বহন করে। খাবার কিংবা পানির বোতল শিশুর স্কুলব্যাগে না দিয়ে মা-বাবা বিকল্প ভাবতে পারেন।
অতিরিক্ত পাঠ্যবইয়ের বোঝা যে শুধু শিশুদের শারীরিক ক্ষতির কারণ হচ্ছে তা নয়, তার মনের ওপরও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। কোন বয়সের শিশুর জন্য কত বই যথেষ্ট, তা নির্ধারণ করা জরুরি। শিশুর শিক্ষা–প্রক্রিয়া আনন্দদায়ক হওয়া বাঞ্ছনীয়, কোনোভাবেই যেন তা কষ্টদায়ক না হয়।